Inqilab Logo

রোববার, ২৬ মে ২০২৪, ১২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৭ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

খালেদা জিয়া আদালতের নয়, শেখ হাসিনার প্রতিহিংসায় কারাগারে বন্দি - রিজভী

| প্রকাশের সময় : ১ মে, ২০১৮, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া আদালতের নয়, শেখ হাসিনার প্রতিহিংসায় কারাগারে বন্দী বলে মন্তব্য করেছেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, আজকে এটাই সর্বজনস্বীকৃত যে, আদালতের মাধ্যমে একটা আনুষ্ঠানিকতা করা হয়েছে মাত্র। এটি অবৈধ সরকারের প্রধানমন্ত্রীরই অন্ধ অসুয়ার উন্মাদ প্রতিফলন। তাই দেশনেত্রীর সুচিকিৎসা ও তাঁকে মুক্তি না দিতে সরকারপ্রধান অনিচ্ছুক ও অনমনীয়। সেজন্য কষ্ট দেয়া, নির্যাতন করা, মানসিক আঘাত দেয়া, ইত্যাদি জুলুমের নানামূখী অস্ত্র সরকার দেশনেত্রীর ওপর প্রয়োগ করছে। যেন তিনি মনোকষ্টেই দগ্ধ হতে থাকেন। দেশনেত্রীর চিকিৎসা নিয়ে সরকারের যে টালবাহানা ও ষড়যন্ত্রের কথা আমরা বলে আসছি তা ওবায়দুল কাদের সাহেবের কথায় আবারও স্পষ্ট হলো। গতকাল (সোমবার) সকালে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, খালেদা জিয়ার ক্রমাবনতিশীল শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে আওয়ামী নেতারা উপহাস, তাচ্ছিল্য ও মশকরা শুরু করেছেন। যারা গণতন্ত্র বিনাশী মানবাধিকার পরিপন্থি, নাগরিক স্বাধীনতা হরণকারী, অগণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল তাদের রাজনৈতিক মতের বিরুদ্ধের মানুষের মর্যাদা ও জীবনের কোন দাম নেই। তিনি বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা যে মিথ্যাচার করছেন তাতে জাতীয়তাবাদী চিকিৎসকরা চিকিৎসা করলে যে সার্টিফিকেট দিবেন সেখানেও সন্দেহ থাকবেই’ বলে বলেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। আমি বলতে চাই-তাহলে কী স্বাধীনতা চিকিৎসা পরিষদের সার্টিফিকেটধারীদের চিকিৎসার বাইরে দেশের মানুষ যেতে পারবে না? দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা দীর্ঘ ২০/২৫ বছর ধরে তাঁর চিকিৎসা করছেন। যাঁরা দেশনেত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক তাঁরা দেশের স্বনামধন্য পেশাদারী চিকিৎসক। মানবকল্যানই তাঁদের ব্রত। অপপ্রচার আর কুৎসা রটনার কোরাশ দলের কাÐারী হচ্ছেন আ:লীগের সাধারণ সম্পাদকশেখ হাসিনার রক্ত¯œাত শাসনের দিক থেকে জনগণের দৃষ্টিকে সরাতে প্রতিদিন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকের উদ্ভট ও আবোল-তাবোল বকবকানী মানুষকে শুনতে হচ্ছে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, দেশনেত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা সত্য না বললে একই বিষয়ে অন্য খ্যাতিমান চিকিৎসকরা তাদের তীব্র সমালোচনা করতেন। যথার্থ চিকিৎসা নিয়ে কারা কর্তৃপক্ষের টালবাহানায় বেগম জিয়াকে বিনা চিকিৎসায় কারাগারে বিপন্ন জীবন কাটাতে হচ্ছে। দেশনেত্রীর শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে এ বিষয়ে সরকার নিশ্চুপ-নির্বাক থেকে দলের সাধারণ সম্পাদককে দিয়ে ঠাট্টা তামাশা করাচ্ছে। এটা নিষ্ঠুর উপহাস। সহজাত বিচার বুদ্ধি হারিয়ে আওয়ামী লীগ নেতারা ক্ষমতায় মোহগ্রস্ত। দেশের সর্বাধিক জনপ্রিয় নেত্রীকে বিনা চিকিৎসায় বন্দী রেখে এক দুরভিসন্ধিমূলক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে কী না সে প্রশ্নে দেশবাসী উত্তাল। তিনি বিএনপির পক্ষ থেকে অবিলম্বে বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি এবং তাঁর পছন্দ অনুযায়ী ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করার জন্য জোর দাবি জানান।
গাজীপুর ও খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচন সামনে রেখে ভোটারদের ভয়-ভীতি দেখাতে বিরোধী নেতা-কর্মীদের ঢালাওভাবে গ্রেফতার করা হচ্ছে অভিযোগ করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, দুই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনেই বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে স্থানীয় নেতাকর্মীরা নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন। এই অপরাধে রাতের বেলায় সরকারের নির্দেশে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী স্থানীয় নেতাকর্মীদের বাসায় বাসায় হানা দিয়ে গ্রেফতার, ক্রসফায়ারের হুমকি এবং বিভিন্নভাবে ভয়-ভীতি প্রদর্শন করছে। সরকার তার গণবিরোধী চরিত্রের মাধ্যমে আইন শৃৃঙ্খলা বাহিনীকে সরকারের বিরোধী শক্তির তথা বিরোধী দল ও মতের মানুষদের প্রতিপক্ষ হিসেবে গড়ে তুলছে। এ ব্যাপারে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী এখনই সতর্ক না হলে একদিন জনগণের কাঠগড়ায় তাদেরকে দাঁড়াতেই হবে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, পাঁচ বছর ধরে গাজীপুরের একজন এসপি কিভাবে টিকে আছে? তার নামে অজ¯্র অভিযোগ থাকার পরেও সরকার তাকে সরাচ্ছে না কেন? এই পুলিশ সুপারের দ্বারা অমানবিক নিষ্ঠুরতায় বিরোধী দলের নেতাকর্মীকে বিগত পাঁচ বছর ধরে গাজীপুরে ভয়াবহ নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। ক্ষমতার অহংকারে গাজীপুরের এসপি হারুন বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বাড়ীঘর, দোকানপাট, বাজার ভেঙ্গে ফেলা, পুড়িয়ে দেয়া, তাদেরকে ঘরছাড়া করা এবং নির্বিচারে গ্রেফতার করে গাজীপুরে দু:শাসনের এক প্রতীক হয়ে উঠেছে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে এবং নেতাকর্মী ও সাধারণ ভোটারদের মাঝে ভীতি ছড়াতেই রোববার ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি’র নেতাদের ব্যাপকহারে আটক করা হয়েছে। কাজেই এরকম পরিস্থিতিতে আসন্ন দুই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন কখনোই সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে না। ইলেকশন কমিশন দুই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে সুষ্ঠু করার ক্ষেত্রে ক্ষমতাসীনদের নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন কিংবা সরকারী দলের সন্ত্রাসী ও তাদের সহযোগী আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা বন্ধে এখনও পর্যন্ত কোন কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে না পারলে কমিশনের ভাবমূর্তি গহীন অতলে তলিয়ে যাবে। সামনের জাতীয় নির্বাচনে তাদের প্রতি জনগণের আস্থা বিন্দুমাত্রও থাকবে না। সুতরাং অবৈধ সরকারের সাথে নির্বাচনের কমিশনের উর্দ্ধতন কর্তাব্যক্তিদের পদত্যাগের আন্দোলনও একসাথে শুরু হবে। সেজন্য আগামী দুই সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন যেন রক্তাক্ত নির্বাচনের দিকে না যায় সেদিকে কমিশনকে সতর্ক তৎপরতা দেখাতে হবে। সন্ত্রাসীদের প্রভাবমুক্ত নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে অবশ্যই সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে। এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য নজমুল হক নান্নু, আতাউর রহমান ঢালী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সহ দপ্তর সম্পাদক মুনির হোসেন প্রমুখ। ####



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: খালেদা জিয়া

২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ