Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী: অস্ট্রেলিয়ার সেরা জ্ঞান আহরণ করুন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৯ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:০০ এএম

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অস্ট্রেলিয়ার সেরা জ্ঞান আহরণের সুযোগ গ্রহণের জন্য সেদেশে অধ্যয়নরত বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের উচ্চতর শিক্ষার জন্য অস্ট্রেলিয়া একটি প্রিয় গন্তব্যস্থল। প্রায় ২০০ শিক্ষার্থী ওয়েস্টার্ন সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করছেন। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ এলডিসি থেকে গ্র্যাজুয়েশনের মাধ্যমে উন্নয়নের পরবর্তী পর্যায়ে চলে যাচ্ছে, আমাদের আরও বেশি মানবিক ক্ষমতা দরকার। অস্ট্রেলিয়া এক্ষেত্রে প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দান এবং বৃত্তিমূলক শিক্ষায় প্রশিক্ষণ দিয়ে অবদান রাখতে পারে।
ওয়েস্টার্ন সিডনী ইউনিভার্সিটি (ডবিøউএসইউ) পরিদর্শনকালে পরমাত্তা সাউথ ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে দেয়া বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি এবং সভাপতি প্রফেসর বার্নি গ্রোভার, শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ডবিøউএসইউ বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারের বিচার ব্যবস্থাপনার সক্ষমতা বৃদ্ধিতে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমুদ্র বিজ্ঞান বিভাগ এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয়ে জন্য প্রশিক্ষণ কর্মসূচির মাধ্যমে সহায়তা প্রদান করছে। তিনি মেরিন অ্যাকুয়া কালচারের উন্নয়নে কারিগরি সহযোগিতা এবং সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের জন্য শিক্ষক আদান-প্রদানের সহযোগিতার আহ্বান জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, তার জন্য এই ওয়েস্টার্ন সিডনী বিশ্ববিদ্যালয় ভ্রমন খুবই আনন্দদায়ক হয়েছে এবং এই বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আবক্ষ মুর্তি স্থাপিত হয়েছে দেখে তিনি অভিভূত। তিনি বলেন, ১৯৭৪ সালেই জাতীয় সংসদে আইন করে সমুদ্রসীমা নির্দিষ্টকরণের দূরদৃষ্টি এবং অগ্রণী ভূমিকার স্বীকৃতি স্বরূপ বঙ্গবন্ধুর আবক্ষ মূর্তিটি যথার্থই ইনস্টিটিউট অব ওশান গর্ভর্নেন্সের (আইসিওজি) সামনে স্থাপন করা হয়েছে।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অষ্ট্রেলিয়ার সহযোগিতার কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের পরে ১৯৭২ সালের ৩১ জানুয়ারি অষ্ট্রেলিয়া বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দানের পর থেকেই দু’দেশের মধ্যে উষ্ণ আন্তরিকতাপূর্ণ সম্পর্ক বিদ্যমান রয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ এবং অষ্ট্রেলিয়ার মধ্যে খুবই মৌলিক দ্বিপাক্ষিক এই সম্পর্কের শুরু তখন থেকেই কারণ উন্নত বিশ্বের দেশগুলোর মধ্যে অষ্ট্রেলিয়াই বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদানকারী প্রথম দেশ। এ সময় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ এবং জাতিগঠনের প্রারম্ভিক দিনগুলোতে সহায়তা প্রদানকারী হিসেবে সাবেক অষ্ট্রেলীয় প্রধানমন্ত্রী এডোয়ার্ড গফ হোয়াইটলাম এবং বিশ্ব নেতাদের প্রতিও শ্রদ্ধা জানান শেখ হাসিনা
অষ্ট্রেলিয়ার তৎকালীন ফেডারেল সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা হোয়ইটলাম বাংলাদেশের স্বপক্ষে দ্বিদলীয় ঐকমত্য গঠনে নেতৃস্থানীয় ভূমিকা পালন করেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী যুদ্ধের সময় পাকিস্তানীদের অধীনে হানদার ও তাদের সহযোগীদের নিপীড়নে বাঙালীদের দুঃখ-দুর্দশার প্রতি দৃষ্টি দেয়ার বিষয়টি স্মরণ করেন। তিনি বলেন, এডোয়ার্ড হোয়াইটলাম বাংলাদেশের জন্য আন্তর্জাতিক সমপ্রদায় এবং কমনওয়েলথের স্বীকৃতি আদায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। এডোয়ার্ড হোয়াইটলাম ১৯৭৫ সালের ১৯ জানুয়ারি বাংলাদেশ সফর করেন। কোন অষ্ট্রেলীয় প্রধানমন্ত্রীর এটিই বাংলাদেশে প্রথম ও শেষ সফর।
প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য অষ্ট্রেলীয় নাগরিক উইলিয়াম এএস অউডারল্যান্ডকেও শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। মুক্তিযুদ্ধে অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ তাকে বীরত্বপূর্ণ খেতাব ‘বীর প্রতীক’ এবং ‘ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশ ওয়ার অব লিবারেশন ১৯৭১’ সম্মাননায় ভূষিত করা হয়েছে। তিনি অনুষ্ঠান আয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি এবং অনুষদ সদস্যদের ধন্যবাদ জানান।
পরে প্রধানমন্ত্রী ডবিøউএসইউ ক্যাম্পাসে স্থাপিত জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্যে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
পরে, আরএমআইটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক জিওফ্রে স্ট্রোকসের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের একটি প্রতিনিধি দল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার হোটেল কক্ষে সাক্ষাত করেন। অধ্যাপক জিওফ্রে প্রধানমন্ত্রীর কাছে বাংলাদেশে রেমিটেন্স প্রবাহ এবং দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের স্বার্থে এর সুব্যবহার নিশ্চিত করা সংক্রান্ত একটি গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন।
‘মাইগ্র্যান্ট ফ্যামিলি মোটিভেশন ইনিশিয়েটিভ’ (এমএফএমআই)-এর উপর গবেষণাটি করা হয়েছে খোকসা, শিবালয়া, বালিয়াকান্দি ও ফুলপুর উপজেলায়। যেখানে অভিবাসী শ্রমিক এবং তাদের পরিবারের জন্য রেমিটেন্স আয়ের আরও যথাযথ ব্যবহার এবং বেকারদের বিশেষকরে প্রবাসীদের পরিবারের নারীদের উৎপাদনশীল মানবসম্পদে রূপান্তরের লক্ষ্যে একটি প্লাটফর্ম তৈরির জন্য এই গবেষণা করা হয়েছে। আরএমআইটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সুপ্রিয়া সিং, অধ্যাপক সাদাত খান এবং অধ্যাপক গ্রাহাম এইরি এবং সেন্ট্রাল কুইন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কামরুল আলম প্রতিনিধি দলে উপস্থিত ছিলেন।
পররাষ্ট্র সচিব মো.শহীদুল হক, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সাজ্জাদুল হাসান, মহিলা ও শিশু বিষয়ক সচিব নাসিমা খানম এবং অষ্ট্রেলিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. সুফিউর রহমান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।



 

Show all comments
  • বশির ২৯ এপ্রিল, ২০১৮, ৪:৫৪ এএম says : 0
    প্রধানমন্ত্রীর কথা সকলের আমলে নেয়া উচিত
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ