Inqilab Logo

শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

দলীয় নির্দেশ না মেনে সংঘাতে জড়াচ্ছে তৃণমূল আ’লীগ

প্রকাশের সময় : ৬ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

তারেক সালমান : ইউপি নির্বাচনে প্রথম ও দ্বিতীয় দফায় সংখ্যাগরিষ্ঠ চেয়ারম্যান পদ পেলেও তৃণমূলের দ্বন্দ্ব আর সংঘাত ঠেকাতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। দলীয় প্রার্থীর পাশাপাশি একই দলের বিদ্রোহী প্রার্থী থাকায় দ্বন্দ্ব ও সংঘাত প্রকট আকার ধারণ করেছে। দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে গিয়ে দলের বিরুদ্ধে অবস্থান না নিতে কেন্দ্র থেকে বারবার হুঁশিয়ারি দেয়া হলেও আপাতদৃষ্টিতে তা আমলেই নিচ্ছেন না তৃণমূল নেতাকর্মীরা। ফলে দলীয় নির্দেশ না মেনে বিপুল সংখ্যক বিদ্রোহী প্রার্থী দেখা দিয়েছে। ফলে নির্বাচনী মাঠে শক্তিশালী বিরোধী দল মাঠে না থাকা সত্ত্বেও বেড়েই চলেছে হামলা-মামলা, সংঘর্ষ, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের মতো ঘটনা। ঘটে চলেছে প্রাণহানিও।
এ সম্পর্কে আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ও নির্বাচন পরিচালনা কমিটির অন্যতম সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ বলেন, ইউনিয়ন নির্বাচনের কারণে তৃণমূল আওয়ামী লীগে কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে। মনোনয়ন পাওয়া না পাওয়া নিয়ে মূলত বৈরী অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে তৃণমূল আওয়ামী লীগে। আমাদের কাছে অনেকের বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা পড়েছে। এর সঙ্গে যারাই জড়িত থাকুন না কেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি বলেন, ইউপি নির্বাচন একটি উৎসব। এ উৎসবকে যারা সংঘাতময় পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দেয়, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে, সে যেই হোক না কেন। আওয়ামী লীগ অনেক বড় সংগঠন। এটা সবাই মনে রাখলে আর সংঘাত-সংঘর্ষের ঘটনা ঘটত না।
ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে প্রথম দুই ধাপের ভোটে ব্যাপক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় নিহত হয়েছে ৪২ জন। আহত হয়েছে প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ। সহিংসতার কারণে স্থায়ীভাবে দ্বন্দ্ব-বিবাদ বাড়ছে তৃণমূলে। ভোটের পর প্রার্থী, প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকের বাড়িতে হামলা-মামলা ও গ্রেফতারের ঘটনা অব্যাহত রয়েছে। অনেক প্রার্থী-সমর্থকের সম্পদ দখল করে নিচ্ছে প্রতিপক্ষের লোকজন। বাদ যাচ্ছে না তাদের সমর্থক-স্বজনেরা।
এদিকে দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ গত শনিবার ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে ৪র্থ ধাপের ইউপি চেয়ারম্যান দলীয় প্রার্থীদের নাম ঘোষণার সময়ও তৃণমূল নেতাকর্মীদের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, বিগত দুই ধাপের নির্বাচনের সময় এবং পরে দেশের বিভিন্ন জায়গায় সামাজিক ও গোষ্ঠীগত দ্বন্দ্বের কারণে সহিংস ঘটনা ঘটেছে, যা অনভিপ্রেত ও দুঃখজনক। আমরা আশা করি, আগামী ধাপের নির্বাচনসমূহ সুষ্ঠু ও সহিংসতামুক্ত হবে। দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি আমাদের কঠোর নির্দেশ হলো নির্বাচনকে অবাধ এবং শান্তিপূর্ণ করার জন্য মাঠপর্যায়ের কর্মীরা দায়িত্বপূর্ণ কাজ করবেন। আওয়ামী লীগ এই ইউনিয়ন পর্যায়ের নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ দেখতে চায়। শান্তিপূর্ণ অবস্থান দেখতে চায়।
নির্বাচনের সহিসংতা নিয়ে হানিফ বলেন, আওয়ামী লীগ একটি বড় সংগঠন। এ দলের নেতাকর্মী অসংখ্য। যোগ্য লোকেরও অভাব নেই। তাই মনোনয়ন-প্রত্যাশী লোকেরও ছড়াছড়ি। একজনকে দিলে আরেকজন ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছেন এবং আরেকজনকে পথের কাঁটা মনে করে সংঘাতে জড়িয়ে পড়ছেন। তিনি বলেন, খুব শিগগিরই এগুলো বন্ধ হয়ে যাবে। আসলে বিভিন্ন স্থানে একাধিক মেম্বার প্রার্থী থাকার কারণে দেখা যায়, সামাজিক, গোষ্ঠীগত দ্বন্দ্বের কারণে কিছু সহিংসতা হচ্ছে। এসব কীভাবে এড়ানো যায়, সে পদক্ষেপ নিতে হবে। এ ধরনের ঘটনা যেন ভবিষ্যতে না ঘটে সেজন্য কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আমরা প্রশাসনকে অনুরোধ করেছি।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, বেপরোয়া কেন্দ্র দখল, জাল ভোটের মহোৎসব ও সহিংসতায় ৪২ জন নিহতদের রক্তে ম্লান হচ্ছে তৃণমূলের ভোট উৎসব। নির্বাচন এলে গ্রামে-গঞ্জে উৎসবের আমেজ দেখা যায়। উপজেলা ও পৌরসভা নির্বাচন নিয়ে ভোটারদের মধ্যে বিরাজ করছে শঙ্কা ও উৎকণ্ঠা। সংঘাত-সহিংসতার মধ্যেই তা শেষ হচ্ছে। ফলে ভোটারদের মধ্যে ভোট উৎসবের আমেজ দেখা গেলেও এখন তা আতঙ্ক ও বিরক্তির পর্যায়ে পৌঁছেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ইউপি নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন প্রক্রিয়ার শুরুর আগে থেকেই আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে অনেক বার ঘোষণা দেয়া হয়, দলের সিদ্ধান্তের বাইরে কেউ গেলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। কিন্তু কেন্দ্রের এ হুঁশিয়ারিতেও কোনো লাভ হয়নি। প্রথম ধাপে প্রায় ৪০০ ও দ্বিতীয় ধাপে ৫০০ ছাড়িয়ে গিয়েছে বিদ্রোহীর সংখ্যা। এর পেছনে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও কিছু প্রভাবশালী নেতাদের ইন্ধন রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়ভাবে কয়েকজন বিদ্রোহী প্রার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হলেও কোনোভাবেই ঠেকানো যায়নি বিদ্রোহী প্রার্থীদের। এতে দলীয় ও বিদ্রোহী প্রার্থীর নেতাকর্মীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে সংঘর্ষ, হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের মতো ঘটনা। এসব ঘটনায় ২২ মার্চ প্রথম দফা নির্বাচনে ১২ জনের ও ৩১ মার্চ দ্বিতীয় দফায় ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এখানেই শেষ নয়, ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তৃণমূল নেতাকর্মীরা নিজেদের মধ্যে কোন্দল ও রেষারেষিতে জড়িয়ে পড়েছেন। এ দ্বন্দ্ব মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন দলটির শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা।
জানা গেছে, স্থানীয় সংসদ সদস্য ও কিছু প্রভাবশালীর ইন্ধনে অনেক বিদ্রোহী প্রার্থী লাগামহীন হয়ে পড়েছেন। তাদের লাগাম টেনে ধরার যেন কেউ নেই। ইতোমধ্যে দলীয় প্রার্থীরা বিভিন্ন অভিযোগ কেন্দ্রীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কাছে লিখিতভাবে জানিয়েছেন। এর মধ্যে সংসদ সদস্য শওকত হাসানুর রহমান রিমনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার কালমেঘা ইউনিয়নের দলীয় প্রার্থী গোলাম নাসিরের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। সংসদ সদস্য একেএমএ আউয়াল পিরোজপুরের স্বরূপকাঠি উপজেলার সারেংকাঠি ইউনিয়নের নৌকার প্রার্থী নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ছিলেন। সংসদ সদস্য পঙ্কজ দেবনাথ বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার ভাষানচর ইউনিয়নের দলীয় প্রার্থী নজরুল ইসলাম চুন্নুর বিরুদ্ধাচরণ করেছেন। সংসদ সদস্য খ ম জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধেও অভিযোগ উঠেছে।
উল্লেখ্য, প্রথম ধাপের ৭১২ ইউপির মধ্যে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী ৫৪০টিতে জয়ী হন। আর দ্বিতীয় ধাপে ৬৩৯ ইউপির মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা ৪০৫টিতে জিতেছেন।
গত শুক্রবার মাদারীপুর সদর উপজেলার কুনিয়া ইউনিয়নের দিয়াপাড়া গ্রামে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ১৫ জন আহত হন। গুলিবিদ্ধ হয় ৮ জন।
স্থানীয় জানা গেছে, মাদারীপুর সদর উপজেলার কুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সানোয়ার হোসেন এবং দলের বিদ্রোহী প্রার্থী সাহেব আলী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলেও দুই প্রার্থীই পরাজিত হয়। এ নিয়ে দুই পক্ষের সমর্থকদের মাঝেই ক্ষোভ বিরাজ করছিল। এই ঘটনার জের ধরেই সানোয়ার সমর্থকরা বেলায়েতের বাড়িতে হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে। এসময় কমপক্ষে ১৫ জন আহত হয়।
নেত্রকোনার খালিয়াজুরী উপজেলার সদর ইউনিয়নের গছিখাই গ্রামে আওয়ামী লীগের প্রার্থী গোলাম আবু ইছহাক ও বিদ্রোহী প্রার্থী ছানোয়ারুজ্জামান যোশেফের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হন। সংঘর্ষের জন্য দুই প্রার্থী একে অন্যকে দায়ী করেছেন।
সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার কুলিয়া ইউপিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে ১০ জন আহত হন। এরা সবাই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী। এ সময় ভাঙচুর করা হয় আট-দশটি মোটরসাইকেল।
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার সানিয়াজান ইউপিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবুল হাশেম তালুকদার ও বিদ্রোহী প্রার্থী আবদুল গফুরের সমর্থকদের মধ্যে গত শুক্রবার সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হন। সংঘর্ষের জন্য দুই প্রার্থী একে অপরকে দায়ী করেছেন।
শেরপুরের নকলা উপজেলার উরফা ইউপিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ ও ভাঙচুর হয়। দলের বিদ্রোহী প্রার্থী নূরে আলম তালুকদার পক্ষের অভিযোগ, আওয়ামী লীগের প্রার্থী রেজাউল হকের সমর্থকেরা এই সংঘর্ষ ও ভাঙচুর চালিয়েছে।
সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জে আওয়ামী লীগ ও বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ, ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এতে উভয়পক্ষের কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন।
বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় প্রার্থী মনোনয়নকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় উভয়পক্ষের মধ্যে ২০জন আহত হয়েছেন।
ইউপি নির্বাচনে দলীয় নেতাদের দ্বন্দ্ব-সংঘর্ষ সম্পর্কে আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের এক দায়িত্বশীল নেতা ও নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ইতোমধ্যে তাদের কাছে অসংখ্য লিখিত অভিযোগ এসেছে। ওইসব অভিযোগে বলা হয়েছে, স্থানীয় সংসদ সদস্য ও প্রভাবশালী নেতারা দলীয় প্রার্থীর বাইরে গিয়ে তাদের আত্মীয়-স্বজনদের সহায়তা করছেন। এসব কারণেই তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে অন্তর্দ্বন্দ্ব, সংঘর্ষ, হামলা ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটছে।
তিনি বলেন, কিছু স্থানীয় সংসদ সদস্য ও প্রভাবশালী নেতার কারণেই আওয়ামী লীগের বদনাম হয়। তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে দ্বন্দ্ব ও সংঘাত বাড়ে। ফলে কেউ কাউকে পাত্তা দেয় না। দলীয় সিদ্ধান্তকে কোনো গুরুত্বই দেয় না। এটা কোনোভাবে মেনে নেয়া হবে না। সবার সম্পর্কে খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। আগামীতে ২৩ এপ্রিল, ৭ মে, ২৮ মে ও ৪ জুন আরও চার ধাপে ইউপি নির্বাচন হবে। তাদের বিরুদ্ধে যদি ব্যবস্থা নেয়া না হয়, তাহলে ভবিষ্যতেও আরও এ ধরনের অঘটন ঘটতে পারে।
এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ও কেন্দ্রীয় নির্বাচন পরিচালনা বোর্ডের সদস্য ওবায়দুল কাদের বলেন, যারা দলীয় প্রার্থীর বিরোধিতা করেছেন ও ভবিষ্যতে করবেন তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। সংসদ সদস্যরা নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। তাই তারা এটা করতে পারেন না।
তিনি বলেন, বহু লিখিত অভিযোগ তাদের কাছে এসেছে। শুধু লিখিত অভিযোগই নয়, তারা অন্যান্য মাধ্যম থেকেও তথ্য সংগ্রহ করছেন। তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতেই দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে চলতি ইউপি নির্বাচন নিয়ে সরকারের শরিক ১৪ দলের নেতারাও ক্ষুব্ধ নির্বাচন কমিশন ও আওয়ামী লীগের ওপর। নির্বাচনে হত্যা-সন্ত্রাস, সহিংসতা, গুলি, বিস্ফোরণে হতাহতের ঘটনায় নির্বাচন কমিশনের ওপর প্রায় সব মহলের অনাস্থা বাড়ছে। সংসদের বিরোধীদল জাতীয় পার্টি, মাঠের বিরোধী দল বিএনপিসহ বাম প্রগতিশীল ঘরানার রাজনৈতিক দলগুলো ইসির ভূমিকায় চরমভাবে ক্ষুব্ধ ও হতাশ। এমনকি শাসক দল আওয়ামী লীগসহ তাদের শরিকরাও এখন বিব্রত। ইসির দক্ষতা ও যোগ্যতা নিয়ে কঠোর সমালোচনা করছেন তারা।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেছেন, বর্তমান কমিশনের প্রতি মানুষের কোনো আস্থা নেই। মেরুদন্ডহীন এই ইসির আর স্বপদে থাকার নৈতিক অধিকার নেই। দ্রুত বিদায় নিতে হবে।
চলমান ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে দখলের মহোৎসব চলছে বলে অভিযোগ করেছেন সরকারের শরিক দল বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। গত রোববার নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের সাথে সাক্ষাৎ শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। এ সময় মেনন ইউপি নির্বাচন নিয়ে ওয়ার্কার্স পার্টির করুণ অভিজ্ঞতা সিইসির কাছে তুলে ধরেন। সিইসির সঙ্গে সাক্ষাতের বিষয়ে তিনি বলেন, নির্বাচনে দখলের মহোৎসব চলছে। এই নির্বাচনে নিয়ে আমাদের অভিজ্ঞতা খুবই করুণ।
বিএনপি, জাতীয় পার্টি, ওয়ার্কার্স পার্টি, সিপিবিসহ কয়েকটি দলের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে ধারণা পাওয়া গেছে, এভাবে চলতে থাকলে দেশের দীর্ঘদিনের নির্বাচনি সংস্কৃতি একেবারে ধ্বংস হয়ে যাবে। এ জন্য তারা চান, বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে পদত্যাগে বাধ্য করার পাশাপাশি সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হয় এমন একটি নির্বাচন কমিশন গঠন করা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: দলীয় নির্দেশ না মেনে সংঘাতে জড়াচ্ছে তৃণমূল আ’লীগ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ