পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : বাবার লাশ মর্গে। আনতে গেছে প্রতিবেশিরা। বাড়ির পাশে বাবার কবর খোঁড়া হচ্ছে। ঘরে মা-বোনের কান্নার রোল, আত্মীয় স্বজনদের আহাজারি। পাড়া-প্রতিবেশীদের সান্তনা।
মোবাইলে খবর এসেছে লাশ নিয়ে বাসায় দিকে রওয়ানা দেয়া হয়েছে। শোকের এই মাতমের মধ্যেই আলিম পরীক্ষা দিতে গেলেন বাঁশখালী উপজেলার গ-ামারা ইউনিয়নের মৃত জাকির আহমদের মেয়ে মাদরাসার শিক্ষার্থী তসলিমা আক্তার। গত সোমবার বাঁশখালীর গ-ামারায় এস আলম গ্রুপের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে নির্মাণের প্রতিবাদে বিক্ষোভের সময় মিছিলে পুলিশের গুলিতে নিহত হন তসলিমা আক্তারের বাবা বাবুর্চি জাকির আহমেদ।
তসলিমা যখন পরীক্ষা দিতে যায় তখনো তার বাবার লাশ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গ থেকে বাসায় পৌঁছায়নি। লাশ নিতে গেছে প্রতিবেশি ও আত্মীয়-স্বজনরা। কিন্তু সকাল ১০টায় পাবলিক পরীক্ষা। পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছাতে হবে সাড়ে ৯টার মধ্যেই। তাই কবর দেয়ার আগে বাবার মুখ শেষ দেখা না দেখেই গতকাল তসলিমাকে পরীক্ষা কেন্দ্রের দিকে রওয়ানা দিতে হয়। তসলিমা পশ্চিম গ-ামারা রহমানিয়া মাদরাসা থেকে এবছরের আলিম (এইচএসসি সমমান) পরীক্ষার্থী।
স্থানীয় লোকজন জানান, ত্রিমুখী সংঘর্ষে নিহত জাকির আহমদের ৩ ছেলে ৫ মেয়ে। এর মধ্যে ২ মেয়ের বিয়ে হয়েছে। তসলিমার ছোটবোন হাফসা পড়ছে নবম শ্রেণিতে। ভাই রাশেদুল আলম, মোর্শেদুল আলম ও ছোট বোন কলি আক্তার পড়ছে পঞ্চম শ্রেণিতে। ছোট ভাই খোরশেদুল আলম পড়ছে দ্বিতীয় শ্রেণিতে।
তসলিমার বাবা-মা ৩ ভাই ৩ বোনের ৮ জনের সংসারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন বাবা জাকির আহমেদ। তিনি স্থানীয় একটি মাদরাসায় রান্নাবান্নার কাজ করতেন। সেই সীমিত উপার্জনেই চলতো সন্তানদের পড়ালেখা খাওয়া-দাওয়াসহ বড় সংসার। সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তির আকস্মিক মৃত্যুতে অসহায় অবস্থায় পড়েছে তসলিমাদের পুরো পরিবার। মঙ্গলবার জাকির আহমদের বাড়িতে গিয়ে সাংবাদিকরা দেখেছেন তার স্ত্রী মনোয়ারা বেগমের আহাজারি, বুকফাটা আর্তনাদ। কান্নায় ভেড়ে পড়ছে ছেলেমেয়েরা। তাদের সান্তনা দেওয়ার চেষ্টা করছেন আত্মীয় প্রতিবেশীরা। কিন্তু জীবনের নিষ্ঠুর বাস্তবতা বাবার লাশ পথে রেকেই তসলিমাকে পরীক্ষার হলে যেতে হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।