পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অর্থনৈতিক রিপোর্টার : বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ ফিলিপাইনে পাচারের ঘটনায় মূল হোতাদের এখনও চিহ্নিত করা যায়নি। দেশটির সিনেটে চতুর্থ দফায় শুনানিতে জেরার মুখোমুখি করা হয় ব্যবসায়ী কিম অং, রিজাল ব্যাংকের সাবেক শাখা ব্যবস্থাপক মায়া সান্তোস দেগুইতো এবং ফিলরেম সার্ভিসের প্রধান বুতিস্তাকে। অর্থ লেনদেনের বিষয়ে পরষ্পরবিরোধী বক্তব্য মিলেছে তাদের কাছ থেকে। এর আগে এএমএলসিকে আরও প্রায় ১ কোটি ডলার ফেরতের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন কিম অং। রিজার্ভ চুরির ঘটনায় সন্দেহভাজন ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশনের (আরসিবিসি) প্রাক্তন ব্যবস্থাপক মায়া সান্তোস দেগুইতো জানিয়েছেন, নিউ ইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ চুরির ঘটনায় ব্যবসায়ী জগতের রাঘববোয়ালরা জড়িত, যাদের হাতে রয়েছে বিস্তর ক্ষমতা এবং যাদের প্রভাব রয়েছে বেশ কয়েকটি দেশে। রিজার্ভ চুরির এ ঘটনায় নিজেকে ¯্রফে ‘দাবার গুটি’ হিসেবে দাবি করেছেন তিনি।
দেগুইতো বলেন, সম্প্রতি অন্যরা অর্থ পাচারের ঘটনায় সমস্ত দোষ আমার ওপরেই চাপিয়ে দিচ্ছে, যেন প্রায় ৪ বিলিয়ন পেসো লুটের মতো অপরাধ সংগঠনের সামর্থ্য আমার মতো মধ্যম সারির একজন ব্যাংক কর্মকর্তার রয়েছে। সত্যিকারার্থে এ ধরনের বড় ধরনের অপরাধ কেবলমাত্র শীর্ষ ধনী ব্যবসায়ী, যাদের অনেক ক্ষমতা ও বেশ কয়েকটি দেশে প্রভাব বিস্তারের সামর্থ্য রয়েছে, তাদের সংশ্লিষ্টতাতেই সম্ভব। ঘটনার পর আমি বুঝতে পেরেছি অজ্ঞাতসারেই নিজেকে বলির পাঁঠা করেছি। আমি কেবল কাজটা করে ব্যাংক ব্যবস্থাপক হিসেবে আমার কর্মদক্ষতার প্রমাণ ও পেশার উন্নতি ঘটাতে এবং স্বামীর সঙ্গে যৌথভাবে আমার পরিবারকে সহায়তা করতে চেয়েছি। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক ব্যাংকিং ও অর্থজগতের শীর্ষ দাবাড়–দের খেলায় আমি কেবল দাবার গুটি।
সিনেট কমিটির উদ্দেশে তিনি বলেন, এই কমিটি যদি আসল খেলোয়াড়দের খুঁজে বের করতে চায়, তাহলে আমি সেই খেলোয়াড় নই। আমার মতো মধ্যম সামর্থ্যরে সাধারণ ব্যাংক ম্যানেজারের চেয়ে অনেক বেশি ক্ষমতার শীর্ষ সারির মানুষ তারা।
এদিকে এএমএলসি বলছে, সব মিলিয়ে তাদের কাছে জমা পড়েছে মাত্র ৫৫ লাখ ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির মূল হোতাদের এখনও চিহ্নিত করা না গেলেও কার কাছে কীভাবে এ অর্থ গেল, সেই রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা চালাচ্ছে ফিলিপাইনের সিনেট। ব্লুরিবন কমিটির চতুর্থ দফা শুনানিতে, জেরার মুখোমুখি করা হয় সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের। তবে পরস্পরবিরোধী বক্তব্য মিলছে তাদের কাছ থেকে। যেখানে রিজাল ব্যাংক থেকে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার ফিলরেম সার্ভিসে স্থানান্তরের কথা জানান ব্যাংকটির সাবেক শাখা ব্যবস্থাপক দেগুইতো। তবে ফিলরেম বলছে, নির্দেশনা অনুযায়ী এ অর্থ সরবরাহ করা হয়েছে, ব্যবসায়ী উইক্যাং জু আর দুটি ক্যাসিনোতে। ৫ কোটি ডলারের হিসাব মিললেও বাকি ৩ কোটি ১০ লাখ ডলারের এখনও সন্ধান মেলেনি।
এদিকে ফিলরেম অস্বীকার করলেও মূল সন্দেহভাজন কিম অংয়ের দাবি, তাদের কাছে এখনও ১ কোটি ৭০ লাখ ডলার রয়েছে। এর আগে এএমএলসির কাছে আরও প্রায় ১ কোটি ডলার ফেরত দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন অং। এএমএলসি সিনেট কমিটিকে জানায়, রিজাল ব্যাংকে থাকা ফিলরেমের দুটি হিসাব জব্দ করা হয়েছে। যেখানে পাওয়া গেছে ২৯ হাজার ফিলিপিনো পেসো। এ নিয়ে ফিলিপাইন কর্তৃপক্ষের কাছে সব বিলিয়ে ৫৫ লাখ ডলার জমা পড়েছে।
চাইনিজ হ্যাকার : গতকালের শুনানিতে সিনেটর রালফ রেক্টো বলেছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ চুরির ঘটনায় ফিলিপাইনের হ্যাকাররা নয়, বরং চীনা হ্যাকাররা জড়িত বলে মনে হচ্ছে। তারা ফিলিপাইনের ব্যাংকিং ব্যবস্থাপনায় কিংবা একটি ব্যাংকের মধ্যে দুর্বলতা খুঁজে পেয়েছিল। তবে এ ঘটনায় চীনা হ্যাকাররাই জড়িত বলে তিনি কেন মনে করছেন, এর কোনো ব্যাখ্যা দেননি রালফ।
এদিকে এর আগে তিন বার শুনানি হয়। শুনানির পর ফিলিপাইনের মুদ্রা পাচার কর্তৃপক্ষের (এএমএলসি) কাছে প্রথম কিস্তিতে ৪৬ লাখ ডলার এবং দ্বিতীয় কিস্তিতে ৮ লাখ ৩১ হাজার ডলার ফেরত দিয়েছেন। এবার প্রতিশ্রুতি দিলেন আরো ৯৭ লাখ ৩০ হাজার ডলার ফেরত দেওয়ার।
উল্লেখ্য, গত ফেব্রুয়ারি মাসে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গোপন সুইফট কোড ব্যবহার করে ১০১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার তুলে নেয় দুর্বৃত্তরা। এর মধ্যে ৮১ মিলিয়ন ডলার আরসিবিসির পাঁচটি অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে তুলে নেওয়া হয়। বাকী ২০ মিলিয়ন ডলার শ্রীলংকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের নামে পাঠানো হলেও বানান ভুলের কারণে শ্রীলংকার ব্যাংক থেকে তা ফেরত পাঠানো হয়। ফিলিপাইনের ইতিহাসে অর্থ পাচারের এ ঘটনায় গত মাসে সিনেটের ব্লুরিবন কমিটি তদন্ত শুরু করে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।