Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

পাঁচ মামলায় খালেদার জামিন

প্রকাশের সময় : ৬ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

কোর্ট রিপোর্টার : বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে হত্যা, দুর্নীতি ও রাষ্ট্রদ্রোহসহ পাঁচ মামলায় জামিন দিয়েছেন আদালত। গতকাল ঢাকার পৃথক পাঁচ আদালত খালেদা জিয়াকে জামিনে মুক্তির এ আদেশ দেন। মামলা পাঁচটি হলো, যাত্রাবাড়ী থানার হত্যা মামলা, বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলা, গ্যাটকো দুর্নীতি মামলা, গুলশানের নাশকতার মামলা ও রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা।
যাত্রাবাড়ী থানার হত্যা মামলা : ২০১৫ সালের ২৩ জানুয়ারি রাতে যাত্রাবাড়ীর কাঠেরপুল এলাকায় গোরি পরিবহনের যাত্রীবাহী একটি বাসে পেট্রোলবোমা নিক্ষেপ করা হয়। এ ঘটনায় যাত্রী হত্যার অভিযোগে পরদিন খালেদা জিয়াকে হুকুমের আসামি করে যাত্রাবাড়ী থানায় মামলা করেন থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) কেএম নুরুজ্জামান। ২০১৫ সালের ৬ মে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপ-পরিদর্শক (এসআই) বশির উদ্দিন ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ ৩৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
যাত্রাবাড়ী থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা : ২০১৫ সালের ২৩ জানুয়ারি রাতে যাত্রাবাড়ীর কাঠেরপুল এলাকায় গোরি পরিবহনের যাত্রীবাহী একটি বাসে পেট্রোলবোমা নিক্ষেপ করে যাত্রী হত্যার অভিযোগে পরদিন খালেদা জিয়াকে হুকুমের আসামি করে বিশেষ ক্ষমতা আইনে যাত্রাবাড়ী থানায় মামলা করেন থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) কেএম নুরুজ্জামান। ২০১৫ সালের ৬ মে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপ-পরিদর্শক (এসআই) বশির উদ্দিন ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ ৩৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এ মামলায় চলতি বছরের ৩০ মার্চ আদালতে হাজির না হওয়ায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কামরুল হোসেন মোলা।
গ্যাটকো দুর্নীতি মামলা : বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ অন্য আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গ্যাটকোকে ঢাকার কমলাপুর আইসিডি ও চট্টগ্রাম বন্দরের কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ের কাজ পাইয়ে দিয়ে রাষ্ট্রের ১৪ কোটি ৫৬ লাখ ৩৭ হাজার ৬১৬ টাকার ক্ষতি করেন। এ ঘটনায় ২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশনের উপ-পরিচালক গোলাম শাহরিয়ার চৌধুরী সাবেক চারদলীয় জোট সরকারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া, তার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় এ মামলা করেন। দীর্ঘদিন আটকে থাকার পর দুদক মামলাটি সচল করার উদ্যোগ নেয়। ২০১৫ সালের ১৯ এপ্রিল শুরু হয় রুলের শুনানি। ২০১৫ সালের ৫ আগস্ট সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নামে গ্যাটকো দুর্নীতি মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা রিট খারিজ করে দেন হাইকোর্ট। ২০১৬ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের দেওয়া আদেশের কপি নথি নিম্ন আদালতে আসে। ২০১৬ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি গ্যাটকো দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে ১৩ এপ্রিলের মধ্যে আদালতে হাজির হয়ে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩ এর বিচারক আবু আহমেদ জমাদার।
গুলশানের নাশকতার মামলা : ২০১৫ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি বিএনপির চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয় ঘেরাওয়ের পথে নৌমন্ত্রী শাজাহান খানের মিছিলে বোমা হামলার ঘটনায় বেগম খালেদা জিয়াসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন ঢাকা জেলা যানবাহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ঈসমাইল হোসেন বাচ্চু।
রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে দায়ের করা মামলা : ২০১৫ সালের ২১ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বলেন, ‘আজকে বলা হয় এত লক্ষ শহীদ হয়েছে, এটা নিয়েও অনেক বিতর্ক আছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘তিনি (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান) বাংলাদেশের স্বাধীনতা চাননি। তিনি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন। জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা না দিলে মুক্তিযুদ্ধ হতো না।’ এরপর ২৩ ডিসেম্বর বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বক্তব্যে ‘দেশদ্রোহী’ মনোভাব পাওয়া যাচ্ছে অভিযোগ করে তা প্রত্যাহার করতে উকিল নোটিস পাঠান সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক ড. মোমতাজ উদ্দিন আহমদ মেহেদী। নোটিসের জবাব না পাওয়ায় ফৌজদারি কার্যবিধির ১৯৬ ধারা মোতাবেক রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার অনুমোদনের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন জানান তিনি। ২০১৬ সালের ২১ জানুয়ারি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার অনুমোদন দেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ২০১৬ সালের ২৫ জানুয়ারি ঢাকা মহানগর হাকিম রাশেদ তালুকদার আদালতে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক ড. মোমতাজ উদ্দিন আহমদ মেহেদী ১২৩ এর ‘ক’, ১২৪ এর ‘ক’ ও ৫০৫ ধারায় পিটিশন মামলা করেন। ২০১৬ সালের ৩ মার্চ আদালতে হাজির হওয়ার জন্য সমন জারি করেন আদালত। সেদিন বেগম জিয়া আদালতে হাজির না হয়ে সময়ের আবেদন করলে ১০ এপ্রিল আদালতে হাজির হওয়ার জন্য নির্দেশন দেন।
এদিকে খালেদা জিয়ার জামিন শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন এ জে মোহাম্মাদ আলী, জয়নাল আবেদীন, মাহবুব উদ্দিন খোকন, সানাউল্লহ মিয়, মোহসীন মিয়া, ইকবাল হোসেন, খোরশেদ আলম, খোরশেদ মিয়া আলমসহ বিপুল সংখ্যক আইনজীবী। এ ছাড়া খালেদা জিয়ার সঙ্গে আদালতে আসেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জয়নাল আবেদীন ফারুক, অ্যাডভেকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, খায়রুল কবীর খোকন, মীর নাসির উদ্দিন, আব্দুল আউয়াল মিন্টু, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, জামির উদ্দিন সরকার, রুহুল কবীর রিজীভী, আব্দুলাহ আল নোমান, ফজলুল হক মিলনসহ দলের অনেক নেতারা।
অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন আবদুল্লাহ আবু, তৌহিদুল ইসলাম, মাহফুজুর রহমান লিখন, সালমা হাই টুনিসহ অর্ধশত আইনজীবী জামিন আবেদনের বিরোধিতা করেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পাঁচ মামলায় খালেদার জামিন
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ