পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কূটনৈতিক সংবাদদাতা : ইউরোপে অবৈধ হয়ে যাওয়া বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠাতে চায় বলে আবারো বাংলাদেশকে জানালো ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (ইইউ)। তারা জানিয়েছে, এ কাজ বাস্তবায়নে সব ধরনের সহযোগিতাও করতে চায় ইইউ। সেইসাথে তাদের পুনর্বাসনেও সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে সংস্থাটি। গতকাল রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন মেঘনায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাথে ইউরোপীয় প্রতিনিধিদলের ‘বাংলাদেশ-ইউরোপীয় ইউনিয়ন কমিটি অন মাইগ্রেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট’-এর বৈঠক শেষে এ তথ্য জানান পররাষ্ট্র সচিব। প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত এ ধরনের বৈঠকে বাংলাদেশ দলের নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক এবং ইউ’র ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন ইইউ’র ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল ক্রিশ্চিয়ান লেফলার।
বৈঠক শেষে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় তারা গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন। ইউরোপ থেকে ৮০ হাজার বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠানো হচ্ছে কি না, জানতে চাইলে ক্রিশ্চিয়ান লেফলার বলেন, গণমাধ্যম এ সংখ্যা কোথা থেকে পেল তা আমি জানি না। তারা যে এ সংখ্যা আমার কাছ থেকে পায়নি সেটা নিশ্চিত করে বলতে পারি। অন্য অনেক দেশের মতো ইউরোপে অবৈধ হয়ে পড়া লোকজনের মধ্যে বাংলাদেশের নাগরিকও আছেন। ইউরোপজুড়ে লোকজন নিয়মিতভাবেই এ অবস্থায় পড়ছেন। কারণ কেউ অবৈধ পথে গেছেন, কেউ এক দেশে গিয়ে অন্য কোথাও অবৈধ হয়ে পড়েছেন। এ বিষয়গুলো নিয়ে আমাদের কথা হয়েছে। বাংলাদেশের লোকজন যাতে নিরাপদে ফিরে এসে সামাজিক প্রক্রিয়ায় ফলপ্রসূভাবে অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন, সে জন্য আমরা একসঙ্গে কাজ করতে রাজি হয়েছি।
পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে সম্পর্কের সব বিষয় এবং ভবিষ্যতে সহযোগিতা কীভাবে এগিয়ে নেয়া যাবে, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা জানি, ইউরোপের বিভিন্ন অংশে বাংলাদেশের লোকজন অবৈধ হয়ে পড়েছেন। কীভাবে তাদের নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে আনা যায়, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এ ছাড়া বাংলাদেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে অভিবাসন নিয়ে একটি বৃহত্তর আলোচনার কাঠামো তৈরি নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা করেছি।
বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনা, তাদের প্রশিক্ষণ এবং পুনর্বাসনে কিভাবে সহায়তা দেয়া যায়, সেসব বিষয় খতিয়ে দেখছে তারা। এ ক্ষেত্রে তারা সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে।
শহীদুল হক বলেন, যে সমস্ত বাংলাদেশি অবৈধভাবে বিভিন্ন দেশে আছে, তাদেরকে ফিরিয়ে আনা তো আমাদের রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব। সেটা যতটা সেফলি করা যায় এবং ভালোভাবে করা যায়, এখানে ফিরিয়ে আনার পর যাতে তাদেরকে একটা জীবিকা নির্বাহের ব্যবস্থা করে দেয়া যায় তা দেখতে তারা রাজী হয়েছে।
তিনি আরও জানান, এর পাশাপাশি বাংলাদেশিরা যাতে আইনি পথে নিয়মিতভাবে ইউরোপে যেতে পারে, সে বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে যেসব বাধা আছে, সেগুলো কিভাবে দূর করা যায়, সেগুলো তারা দেখবে বলে আশ্বাস দিয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, গোটা ইউরোপে অভিবাসন সমস্যা চলছে, বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্য থেকে মুসলিম উদ্বাস্তু ও সাম্প্রতিক সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে এদের জড়িত থাকার বিষয়টি নিয়ে। কিছু বাংলাদেশি এর সুযোগ নিয়ে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে অবৈধভাবে ঢুকে পড়েছে এবং সে দেশগুলো এখন তাদের ফেরত পাঠাতে চাইছে।
প্রসঙ্গত, গত সোমবার ইইউ’র ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল ক্রিশ্চিয়ান লেফলারের নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধি দলটি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের সাথে বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ইইউ প্রতিনিধিদল জানিয়েছে, ইইউভুক্ত দেশগুলোতে আড়াই লাখ বাংলাদেশি রয়েছে। এদের মধ্যে আনুমানিক ৮০ হাজার বাংলাদেশি অবৈধ হয়ে গেছে। ভিসার মেয়াদ না থাকা, ছাত্রত্ব শেষ হয়ে যাওয়াসহ নানা কারণেই তারা অবৈধ হয়েছে। তাদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে চায় ইইউ। কী করে তাদেরকে ফেরত আনা যায় এ নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়।
উল্লেখ্য, ইইউ বাংলাদেশের সঙ্গে রি-অ্যাডমিশন নামে একটি চুক্তি করার চেষ্টা করছে। এ চুক্তি হলে ইউরোপে অবৈধভাবে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের পূর্বানুমতি ছাড়াই ফেরত পাঠানো যাবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।