পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সাদিক মামুন, কুমিল্লা থেকে : বর্তমান সময়ে দেশব্যাপী আলোচিত কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ ছাত্রী ও নাট্যকর্মী সোহাগী জাহান তনু হত্যাকা- নিয়ে রহস্যের জট খুলছে না। খুনীরা এতোটা কৌশলেই তনুকে হত্যা করেছে যা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি পর্যন্ত গলদঘর্ম হয়ে উঠেছে তাদের তদন্তের পথচলায়। তনুর লাশ উদ্ধারের স্থানে একাধিকবার পা রেখেও উদঘাটন করতে পারছেন না কী কারণে এবং কোন স্থানটিতে তনুকে হত্যা করা হয়েছে। তনুর লাশের প্রথম ময়নাতদন্তের রিপোর্টেও জানা যায়নি তার মৃত্যুর কারণ। এখন অপেক্ষা দ্বিতীয় ময়না তদন্তের রিপোর্টে নতুন কিছু আসে কিনা। কিন্তু দিন যতোই গড়াচ্ছে রহস্যের ফলাফল শূন্যের কোঠায়। রহস্যের আবর্তে ঘুরপাক খাচ্ছে তনু হত্যাকা-।
তনুর পরিবার এবং কুমিল্লা সেনানিবাসের ওই আবাসিক এলাকায় বসবাসকারী অনেকের সাথে কথা বলেও কোন ক্লু খুঁজে পাচ্ছেন না সিআইডির তদন্ত সহায়ক দল। জিজ্ঞাসাবাদে সীমাবদ্ধ তদন্ত কাজ সামনের দিনগুলোতে তনু হত্যা রহস্য উদঘাটনে কতোটা আলো দেখাবে তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন এ হত্যাকা-ের প্রতিবাদে রাজপথে নেমে আসা মানুষগুলো। আদৌ কি সোহাগী জাহান তনুর খুনীদের খুঁজে বের করা সম্ভব ? এমন প্রশ্ন তনু হত্যার বিচার চেয়ে রাস্তায় নেমে আসা প্রতিবাদকারীসহ সাধারণ মানুষের। অন্যদিকে সিআইডির তদন্ত সহায়ক দলের কর্মকর্তাদের মন্তব্য এটি স্পর্শকাতর মামলা। তথ্য-উপাত্ত সবকিছুই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আরও অনেক কিছু বাকি রয়েছে। সবকিছুই হাতের মুঠে আসবে। হত্যার রহস্যও বেরিয়ে আসবে। বিভিন্ন গণমাধ্যমে দেয়া সিআইডির এমন বক্তব্যে তনু হত্যা মামলায় কিছুটা আশার আলো ফুটে উঠলেও দিন কতো গড়াবে তা নিয়েও জনমনে প্রশ্ন রয়েছে। বিশিষ্টজনরা বলছেন, প্রতিবাদ আন্দোলনের মধ্যদিয়ে তো খুনিদের শনাক্ত করা যাবে না, হত্যাকা-ের স্থান নির্ণয়ও সম্ভব নয়, বরং মূল তদন্ত সংস্থা সিআইডিসহ অন্য যেসব সংস্থা তনু হত্যা মামলাটির ছায়া তদন্ত করছে তাদেরকে কিভাবে সহযোগিতা করা যায় এব্যাপারে প্রতিবাদকারীদের এগিয়ে আসতে হবে।
আলোচিত তনু হত্যাকা- নিয়ে একেবারে কম কথায় মন্তব্য করলেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল কুমিল্লার এপিপি এডভোকেট আনিসুর রহমান মিঠু। তিনি বলেন, ‘এ মামলার অবস্থা বাংলাদেশের মতো, বর্তমান বেহাল দশা ভবিষ্যত অন্ধকার।’ সচেতন নাগরিক কমিটি কুমিল্লার সভাপতি ও মানবাধিকার সংগঠক আলী আকবর মাসুম বলেন ‘সেনানিবাসের ওই এলাকাতে বসবাসকারী কেউ যদি তনু হত্যার বিষয়ে বা মামলার তদন্ত কাজে সহায়ক হবে ন্যূনতম এমন কিছু জেনে থাকে তাদেরও উচিত তদন্ত সংস্থা সিআইডিকে তা জানানো। আর তা গোপন না রেখে মানবিক কারণে প্রকাশ করা উচিত। তিনি বলেন, সেনানিবাস এলাকায় এধরনের একটি অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটেছে। আর এঘটনাকে ঘিরে সেনাবাহিনী বা ওই এলাকার ভাবমর্যাদা ক্ষুণœ হবার কোন সুযোগ নেই। সেনাবাহিনীও শুরু থেকে তদন্ত সংস্থাগুলোকে সহযোগিতা দিয়ে আসছে। সেনাবাহিনীও চায় তনুর খুনীরা শনাক্ত হোক, তাদের শাস্তি হোক।’ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা কুমিল্লার সভাপতি এডভোকেট নাজমুল আলম চৌধুরী নোমান বলেন, ‘হত্যা বা অস্বাভাবিক মৃত্যুর কারণ নির্ণয়ের জন্য লাশের ময়নাতদন্ত করা হয়ে থাকে। সোহাগী জাহান তনুর লাশের ক্ষেত্রেও তা-ই করা হয়েছে। কিন্তু লাশের প্রথম ময়নাতদন্তে পাওয়া যায়নি ধর্ষণের আলামত, জানা যায়নি মৃত্যুর কারণ। বিশেষ করে ময়নাতদন্তে মত্যুর কারণ বেরিয়ে না আসায় তদন্ত কাজের ধারাবাহিকতায় কিছুটা সমস্যা হতে পারে। এখন দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের রিপোর্টেও যদি মুত্যুর কারণ বেরিয়ে না আসে তাহলে জোর দিয়ে বলা যাবে না মামলাটির ভবিষ্যত উজ্জ্বল। আর আমরা আমাদের সংস্থা থেকে জোর দাবী জানাচ্ছি এ ঘটনার রহস্য উদঘাটন করে প্রকৃত সত্য দেশবাসীর সামনে তুলে ধরা হোক।’
এদিকে তনু হত্যা মামলা নিয়ে কুমিল্লা সিআইডির কর্মকর্তারা সোমবার ঢাকায় সিআইডির সদর দপ্তরে এডিশনাল আইজি হেমায়েত হোসেনের সঙ্গে মামলার অগ্রগতি নিয়ে বৈঠক করেছেন। সিআইডি তদন্তের শুরু থেকে বলে আসছিল হত্যার কারণ ও স্থানটি চিহ্নিত হলে মামলা তদন্তে আরও অগ্রগতি সৃষ্টি হতো। কিন্তু প্রথম দফার ময়নাতদন্তের রিপোর্টে এ জায়গায় একটা ধাক্কা লেগেছে। এখন সিআইডিকে অপেক্ষা করতে হবে অধিকতর তদন্তের জন্য কবর থেকে পুনরায় তোলা তনুর লাশের দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের রিপোর্টের জন্য। তাই বলে কিন্তু সিআইডি বসে নেই। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের জায়গাটি শাণিত করে তারা তনু হত্যার ক্লু উদঘাটনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে বিশিষ্টজনরা বলছেন, সোহাগী জাহান তনু হত্যাকা- নিয়ে গত ১৬ দিনে যেসব রহস্য ঘুরেফিরে সামনে আসছে এসব বিশ্লেষণ করলে ফলাফল শূন্যের কোঠায় রয়েছে এমনটিই প্রতীয়মান হচ্ছে। তনু হত্যার প্রকৃত রহস্য উদঘাটিত হয়ে দেশবাসীর সামনে আসবে তো ? নাকি রহস্যের আবর্তে ঘুরপাক খাবে তনু হত্যাকা-।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।