Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

গুল জর্দা ও ধোয়াবিহীন পণ্যে সমহারে কর বাড়ানোর তাগিদ

‘এসডিজি অর্জনে তামাকজাত দ্রব্যের ওপর কর বৃদ্ধির গুরুত্ব’ শীর্ষক সেমিনার

| প্রকাশের সময় : ২৬ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:০০ এএম

অর্থনৈতিক রিপোর্টার : সাদাপাতা, গুল, জর্দাসহ ধোয়াবিহীন তামাকজাত পণ্যে কোন ধরণের ট্রাক্স ও ভ্যাট দিতে হয় না। এ কারণে সস্তায় মিলছে এসব পণ্য। দেশের মোট জসনসংখ্যার ৪৩ শতাংশ তামাকজাত দ্রব্য সেবন করে। এর মধ্যে প্রায় অর্ধেকই ধোয়াবিহীন তামাকজাত পণ্য ব্যবহার করছে। একই সঙ্গে সস্তায় পাওয়ায় দেশের দরিদ্র মানুষের মধ্যে তামাক সেবনের হার প্রতিদিনই বাড়ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সুপারিশ তুলে ধরে বলা হয়েছেÑসিগারেটের ন্যয় ধোয়াবিহীন তামাকজাত পণ্যে একই হারে কর আরোপ করলে প্রতিবছর ৬৪লাখ ২০হাজার মানুষ ধূমপান ছেড়ে দিবে। এর মধ্যে সিগারেট ছাড়বে ৩০ লাখ ৭০ হাজার এবং বিড়ি ছাড়বে ৩৩ লাখ ৫০ হাজার ধূমপায়ী। একই সঙ্গে দেশে তামাক নিয়ন্ত্রণ করতে হলে অবশ্যই তামাকজাত দ্রব্যের উপর কর বাড়াতে হবে। এটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে প্রতিবছর ২০ লাখ ১০ হাজার মানুষের স্বাস্থ্যের উন্নতি হবে। যার মধ্যে সিগারেট ধূমপায়ী ১০ লাখ ৮০ হাজার এবং ৯ লাখ ৩৮ হাজার বিড়ি ধূমপায়ী। বর্তমানে ১০০ টাকায় ৮১ টাকা ট্যাক্স ও ১৫ টাকা ভ্যাট দিতে হয় সিগারেটের উপর।
গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ব্যুরো অব ইকোনোমিক রিসার্চ- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরাম এবং ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডাবিøউবিবি) ট্রাষ্ট’র আয়োজনে ‘এসডিজি অর্জনে তামাকজাত দ্রব্যের উপর কর বৃদ্ধির গুরুত্ব’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এ অভিমত ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে বক্তারা জানান, পৃথিবীর যে সকল দেশের মধ্যে তামাক পণ্য সস্তা তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। জনসাধারনের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে নিতে তামাক পণ্যের দাম বৃদ্ধি করতে হবে। তাই এধরনের পণ্য ব্যবহারে নিরুৎসাহিতকরণ এবং জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে এর উপর উচ্চহারে কর আরোপ জরুরী।
জাতীয় য²া নিরোধ সমিতি (নাটাব) সভাপতি ও বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট (বাটা) উপদেষ্টা মোজাফফর হোসেন পল্টু’র সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (বাজেট ও উন্নয়ন) মোহাম্মদ রূহুল কুদ্দুস, বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থার ন্যাশনাল প্রফেশনাল অফিসার ডা. সৈয়দ মাহফুজুল হক, বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটির প্রকল্প পরিচালক প্রফেসর ডা. গোলাম মহিউদ্দিন ফারুক, বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টর্স ফোরামের সহ সভাপতি নূরুল ইসলাম হাসিব, দি ইউনিয়নের কারিগরি পরামর্শক এড. সেয়দ মাহবুবুল আলম, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডাবিøউবিবি) ট্রাষ্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী, বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটির প্রকল্প পরিচালক প্রফেসর ডা. গোলাম মহিউদ্দিন ফারুক। সেমিনার সঞ্চালনা করেন ডাবিøউবিবি ট্রাস্ট’র কর্মসূচি ব্যবস্থাপক সৈয়দা অনন্যা রহমান।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের প্রফেসর ড. রুমানা হক। তিনি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে প্রতি বছর ১ লাখ ৬২ হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে, জিডিপির ১ দশমিক ৪ শতাংশ টাকা খরচ হচ্ছে শুধুমাত্র তামাকে ব্যবহারে সৃষ্ট রোগের চিকিৎসার জন্য। তামাক নিয়ন্ত্রণ এসডিজির লক্ষ্য পূরণ সহায়ক। কিন্তু আমাদের তামাক কর কাঠামো খুবই দূর্বল। তামাক ও তামাকজাত পণ্যের উপর কর আরোপে কোম্পানীর হস্তক্ষেপ প্রতিহত করে সঠিকভাবে কর আরোপ করতে পারলে তামাক থেকে ১০০ বিলিয়ন টাকা আদায় সম্ভব।
মোজাফফর হোসেন পল্টু বলেন, বিগত কয়েক বছরে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেলেও তামাকজাত দ্রব্যের দাম সে হারে বৃদ্ধি পায়নি বরং মুদ্রাস্ফিতী ও মানুষের আয় বৃদ্ধি পাওয়ায় তামাকের প্রকৃত মূল্য কমেছে। সুতরাং তামাকজাত দ্রব্যের চাহিদা কমাতে অন্যান্য পদক্ষেপের পাশাপাশি এর প্রকৃত মূল্য ও তামাকজাত দ্রব্যের উপর নিদিষ্ট হারে কর বৃদ্ধি করে এটি মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে নিয়ে যাওয়া প্রয়োজন।#

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ধোয়াবিহীন
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ