Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ঢাবিতে চলছে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে নারী নির্যাতন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের মানববন্ধনে বক্তাদের অভিযোগ

ঢাবি সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৩ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:০০ এএম

সম্প্রতি কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে নারী নির্যাতনসহ রাষ্ট্রযন্ত্রের দ্বারা ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের স্বায়ত্বশাসন লঙ্ঘন করার অভিযোগ করেন ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের সচেতন শিক্ষকবৃন্দ। পাশাপাশি তারা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জনান।
গতকাল দুপুরে অপরাজেয় বাংলার সামনে “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সচেতন শিক্ষকবৃন্দ” এই ব্যানারে আয়োজিত এক মানববন্ধনে তারা এসব অভিযোগ করেন। মানববন্ধনে সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক এম এম আকাশ বলেন, আমাদের মূল দাবি হলো দুটি একটি হল আমরা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা চাই দ্বিতীয়টি শিক্ষকদেও নিরাপত্তা চাই। তিনি আরো বলেন, “রাষ্ট্র যন্ত্র স্বায়ত্তশাসন লঙ্ঘন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের উপর হামলা করেছে। আমরা জানি স্বায়ত্বশাসন অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি এবং প্রক্টরের অনুমতি ছাড়া পুলিশ ঢুকতে পারেনা। সুতরাং ঢাবি স্বায়ত্বশাসন অনুযায়ী পুলিশ যখন তখন এখানে কিছু করতে পারবেনা। তাকে আগে পূর্বানুমতি নিতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গৌরব পুনরুদ্ধারে এম এম আকাশ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ডাকসু নির্বাচন দেয়াসহ হলগুলোতে দল নিরপেক্ষ দায়িত্বশীল প্রশাসক নিয়োগ করার কথা বলেন।
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, ছাত্র-ছাত্রীদের পাশে আমরা শিক্ষকরা আছি। তোমরা বিশ^বিদ্যালয়ে বুক ফুলিয়ে চলাফেরা করবে। তোমাদের যে কোনো ন্যায্য দাবির সঙ্গে আমরা আছি, পাশে থাকবো। যদি ছাত্রদের হয়রানি করা হয়, তাহলে শিক্ষকরা সমুচিত জবাব দেবেন। ছাত্রদের আটক করার আগে আমাদের আটক করতে হবে।
মানববন্ধনে সংহতি প্রকাশ করে বিশিষ্ট সাংবাদিক ও প্রাবন্ধিক সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, যেভাবে ছাত্রীদের অভিভাবকদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে সেটা আমার কাছে অত্যন্ত বেদনাদায়ক ও লজ্জার মনে হয়েছে। কারণ বাংলাদেশে এই প্রথম প্রাতিষ্ঠানিকভাবে নারী নির্যাতিত হলো। সেটা আবার বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ এলাকা হিসেবে পরিচিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায়। সুতরাং এটা আমাদের সকলের জন্য অত্যন্ত লজ্জার”। তিনি আরো বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক নারী নির্যাতনের ঘটনা এটাই যেন সর্বশেষ হয়, সেদিকে অবশ্যই কতৃপক্ষকে খেয়াল রাখতে হবে”।
মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি ৬টি লিখিত দাবি পেশ করেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তানজীম উদ্দিন খান।
দাবীগুলো হলো, বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ছাত্র-ছাত্রীর শিক্ষার পরিবেশ অক্ষন্ন রাখতে হবে, তাদের মত প্রকাশের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে, ক্যাম্পাসে সকল শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। বিধিসম্মতভাবে সুনির্দিষ্ট প্রক্রিয়া ব্যাতীত অন্য কারও বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যাবেনা। রাষ্ট্রীয় বাহিনী কিংবা বেসরকারী কোনো গোষ্ঠী দ্বারা কোনো ছাত্র-ছাত্রী যেন আক্রান্ত না হয় সে জন্য অবিলম্বে একটি বিশেষ সেল গঠন করতে হবে। অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে নয়, আন্দোলন চলাকালে ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্খিত ঘটনাগুলোর সঙ্গে যারা সুনির্দিষ্টভাবে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহন করতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে নারকীয় তান্ডব ঘটানোর জন্য যারা জড়িত তাদেরকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ভবনসহ সকল আাবাসিক এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীর মর্যাদা সমুন্নত রাখতে হবে এবং তাদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তার সুরক্ষা দিতে হবে।
ছাত্র-ছাত্রীদের নিরাপত্তা ও মর্যাদা রক্ষা শীর্ষক এই মানবন্ধনে অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস এর সঞ্চালনায় অন্যান্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল আমিন ব্যাপরী, অনুজীব বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সংগীতা আহমেদ, মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক নাসরীন ওয়াদুদ, আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক তাসনীম সিদ্দিকী সহ অর্ধশত শিক্ষক।



 

Show all comments
  • ২৩ এপ্রিল, ২০১৮, ৬:২১ এএম says : 0
    সহমত পোষন করছি
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নারী নির্যাতন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ