পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চট্টগ্রামে ছাত্রলীগ ক্যাডার নুরুল আজিম রনি কান্ডে তোলপাড় চলছে। একের পর এক অপরাধ করেও পার পেয়ে যাচ্ছেন রনি ও তার সাঙ্গ-পাঙ্গরা। এর আগেও কলেজ প্রিন্সিপাল কে পিটিয়েছেন রনি। ওই ঘটনায় মামলা হলেও পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেনি। মামলার আসামি তার অপর ছয় ক্যাডারও ধরা পড়েনি। ভোট কেন্দ্রে প্রভাব বিস্তার করতে গিয়ে অস্ত্রসহ ম্যাজিস্ট্রেটের হাতে ধরা পড়েন রনি। ভ্রাম্যমাণ আদালতে দুই বছরের সাজা হয়। তবে বেশদিন জেলে থাকতে হয়নি তাকে। এবার তাকে মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হলেও আইনের আওতায় আনা হবে কী না তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
এদিকে টানা দুই মেয়াদে সরকারের শেষ সময়ে এসেও বেসামাল ছাত্রলীগ। সরকারি দলের নেতারাও তাদের লাগাম টেনে ধরতে পারছেন না। বরং জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে দলভারী করতে কতিপয় নেতা তাদের এসব অপকর্মে মদদ দিয়েই চলছেন। এতে করে আরও বেশি বেপরোয়া হয়ে উঠছে ছাত্রলীগ। আধিপত্য বিস্তার, মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি, টেন্ডার আর দখলবাজিকে কেন্দ্র করে একের পর খুনোখুনি, সংঘাত, সহিংসতায় জড়িয়ে পড়ছে তারা। তাদের এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিতে পারছে না প্রশাসন। এরমধ্যে ছাত্রলীগের কেন্দ্রিয় সম্মেলনের ঘোষণা আসায় পদ-পদবীর লড়াইয়ে এই সংঘাত, সহিংসতা আরও তীব্র হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। প্রিন্সিপাল মারধরের বির্তকের মধ্যেই কোচিং সেন্টার মালিককে তার অফিস কক্ষে হানা দিয়ে রনির মারধরের ভিডিও ভাইরাল হওয়ার ছাত্রলীগের কেন্দ্রিয় সংসদেও তোলপাড় চলছে। এর জের ধরে রনিকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। ‘ছাত্রলীগকে নিয়ে নতুন করে ভাবা হচ্ছে’ গতকাল ঢাকায় দেয়া আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যে ছাত্রলীগ নেতাদের অনেকে নড়েচড়ে বসেছেন।
বেপরোয়া রনি : মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের পদে আসার পর থেকেই বেপরোয়া হয়ে উঠেন রনি। তার মাস্তানির সর্বশেষ শিকার নগরীর সিইসি মোড়ের ইউনিএইড নামের কোচিং সেন্টারের মালিক রাশেদ মিয়া। গত ১৭ ফেব্রæয়ারি ওই কোচিং সেন্টারের কার্যালয়ে মারধরের একটি ভিডিও ঘুরছে ফেইসবুকে। প্রায় সাত মিনিটের ওই ফুটেজে দেখা যায়, রনি তাকে এক টানা মেরেই যাচ্ছেন। তাকে ১৪টি থাপ্পড় মারেন। চুল টানা ও গলা টিপে ধরেন ১৭বার। থাপ্পড়ে থাপ্পড়ে রক্তাক্ত হয় রাশেদের মুখমন্ডল। রাশেদ মিয়া বলছেন, এভাবে মার খাওয়ার পরও প্রাণভয়ে বিষয়টি চেপে যান তিনি। কিন্তু রনি এরপরও তার পিছু ছাড়েননি। ওই ঘটনার পর গত ১৩ এপ্রিল রনি ও তার সহযোগীরা ফের তাকে মারধর করেন। এ ঘটনায় গত বৃহম্পতিবার পাঁচলাইশ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। অভিযোগে রনির সঙ্গে নোমান চৌধুরী রাকিব (২৪) নামে আরেক যুবকের নামও উল্লেখ করা হয়। বিকেলে অভিযোগ দায়ের করা হলে থানা পুলিশ মামলা হিসাবে তা গ্রহণ করেনি। তবে রাতে রনিকে ছাত্রলীগ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার খবরে পুলিশ মামলা রের্কড করে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা থানার উপ-পরিদর্শক আবদুল মোতালেব ইনকিলাবকে বলেন, রাত সোয়া ৯টায় মামলাটি রের্কড করা হয়। মামলায় রনির বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও চাঁদার দাবিতে মারধরের অভিযোগ আনা হয়। অভিযোগে রাশেদ মিয়া বলেছেন, রনি এবং তার সহযোগীরা জিইসি মোড়ে তার কার্যালয়টি চাঁদাবাজির কাজে ব্যবহার করতেন। সেখানে বসে রনি টেলিফোনে চাঁদা দাবি করতেন। চাঁদা না দিলে লোকজনকে তুলে এসে ওই অফিসে নির্যাতন করতেন রনি ও তার সাঙ্গরা। তাদের নিষেধ করায় রনি ক্ষিপ্ত হয়ে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি ওই কার্যালয়ে গিয়ে তাকে মারধর করে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। রাশেদ মিয়া অভিযোগে বলেছেন, দাবি করা চাঁদার টাকার জন্য গত ১৩ এপ্রিল রনি, নোমানসহ আরও কয়েকজন তাকে তুলে নিয়ে গিয়ে আবারো মারধর করেন। ওইদিন সুগন্ধার বাসা থেকে বের হয়ে মোহাম্মদপুর মাজার এলাকায় গেলে রনি, নোমানসহ আরও কয়েকজন মিলে তাকে মুরাদপুর বুড়িপুকুর পাড় অ্যালুমিনিয়াম গলিতে তাদের কার্যালয়ে নিয়ে গিয়ে টাকা দাবি করে। টাকা দিতে না পারায় তাকে হকিস্টিক দিয়ে পেটানো হয় এবং নোমান ও এক সহযোগীসহ রাশেদকে সুগন্ধার বাসায় পাঠিয়ে নগদ ৩৫ হাজার টাকা, তার ও স্ত্রীর পাসপোর্ট নিয়ে আসা হয়। পরে তাকে আবার মোটরসাইকেলে করে নিয়ে চট্টগ্রাম কলেজের পশ্চিম গেইটে রেখে আসে বলে অভিয়োগ করেন রাশেদ।
৩১ মার্চ নগরীর বিজ্ঞান কলেজের প্রিন্সিপাল জাহেদ চৌধুরীকে মারধরের একটি ভিডিও ফুটেজ ভাইরাল হয়। তাতে দেখা যায় পুলিশের একজন কর্মকর্তার সামনেই রনি প্রিন্সিপাল কে একের পর কিল-ঘুুষি মেরেই যাচ্ছেন। ওই ঘটনায় অধ্যক্ষ বাদি হয়ে রনিসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে চকবাজার থানায় একটি চাঁদাবাজির মামলা করেন। ২০১৬ সালে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে হাটহাজারীতে ভোট কেন্দ্রে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে প্রভাব বিস্তারের সময় অস্ত্রসহ ধরা পড়েন রনি। সেখানে ভ্রাম্যমাণ আদালত রনিকে দুই বছরের সাজা দেন। পরে জামিনে মুক্তি পান তিনি। এদিকে আধিপত্য বিস্তারে চট্টগ্রাম মহানগর, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ এই অঞ্চলের প্রায় প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্রলীগের কর্মীরা নিজেদের মধ্যে সংঘাত-সহিংসতায় জড়িয়ে পড়ছে। দলীয় কোন্দলের জেরে খুন হয়েছেন দিয়াজ ইরফান চৌধুরী, নাসিম আহমেদ সোহেল, সুদীপ্ত বিশ্বাসসহ অনেকে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।