পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মুন্সী কামাল আতাতুর্ক মিসেল, চান্দিনা থেকে : রমজানকে সামনে রেখে চাহিদা বেড়েছে মুড়ির। তাই ব্যস্ততাও বেড়েছে মুড়ির কারখানাগুলোয়। রমজান এলে ইফতারের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে মুড়ি ব্যতিক্রমী স্বাদ বহন করে। সারা বছরই এ মুড়ির চাহিদা বাঙালির ঘরে ঘরে থাকে। রোজা এলে মুড়ির চাহিদা কয়েকগুণ বেড়ে যায়। গ্রামগঞ্জে দেশীয় পদ্ধতি ছাড়াও বর্তমানে মিলে উৎপাদিত মুড়ি ব্যাপকভাবে বাজারজাত হচ্ছে। মিলে যে মুড়ি উৎপাদিত হচ্ছে তা কি আসলে মুড়ি নাকি স্বাস্থ্যের জন্য হুমকি কোন পণ্য? এ প্রশ্নের সহজ উত্তর খুঁজে পাওয়া যায় মুড়ি উৎপাদনের মিল গুলোতে গেলে। একসময় চালের সঙ্গে কাঁকর আর দুধের সঙ্গে পানি মেশানো ভেজালের কথা শোনা যেত। কিন্তু বর্তমানে মুড়িতে মেশানো হচ্ছে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ। কুমিল্লার বিভিন্ন স্থানে এসব ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ ধারা উৎপাদিত মুড়ি ব্যাপকভাবে বাজারজাত করা হচ্ছে এমনকি পেকেটজাত করা হচ্ছে অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে।
কুমিল্লার বিসিক শিল্প নগরীতে প্রায় ২০ থেকে ২৫ টি মিলে মুড়ি উৎপাদন হয়ে থাকে। কিছু কিছু মিলে এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী মুড়ির দানা বড়, সাদা এবং সুস্বাদু করার জন্য স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর বিভিন্ন প্রকারের রাসায়নিক মুড়ির চালে মেশানো হচ্ছে। ক্ষতিকারক এসব ক্যামিকেল মিশিয়ে চাল রাখা হচ্ছে নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর স্থানে। গত বৃহস্পতিবার বিসিকের শিল্পায়ন ভবনের নিচ তলায় সন্ধান পাওয়া যায় সাইনবোর্র্ড বিহীন মুড়ি তৈরির একটি মিল। যেখানে কেমিক্যালের সাহায্যে মুড়ি উৎপাদিত হয়ে থাকে। জানা যায়, বিসিক এলাকায় এরকম মুড়ি তৈরির আরো মিল রয়েছে। এ সব মুড়ি তৈরির মিলে ভেজাল বিরোধী অভিযান রহস্যজনক কারণেই পরিচালিত হয়না বলে অনেকেই মন্তব্য করেন। এমনকি আম, কলা, আনারস, পেঁপে ও কাঁঠাল কৃত্রিমভাবে পাকাতে ব্যবহার হয় ক্যালসিয়াম কার্বাইড, ইথেন, ইথিলিন, তুঁত। ফল তাজা রাখার জন্য ব্যবহার হয় সালফার। এই সালফার খাবারে থাকা ভিটামিন ‘বি’ ও ‘ই’-কে অকেজো করে দেয়। কিডনি ও লিভারের মারাত্মক ক্ষতিকারক ইউরিয়া সার ব্যবহার হয় মুড়িতে। পটোল, করলা, টমেটো, বেগুন, লালশাককে উজ্জ্বল দেখানোর জন্য ব্যবহার হয় টেক্সটাইল রং। গোশতের ওপরে চিকমিক আভা দেখাতে ব্যবহার করা সোডিয়াম নাইট্রেট পাকস্থলী ক্যান্সার তৈরি করে। মবিলমিশ্রিত তেলে ভাজা জিলাপি খাওয়ায় পুরুষের শুক্রাশয়ে শুক্রাণু তৈরি কমিয়ে দেয়, যা পুরুষ প্রজননের অক্ষমতার কারণ। পচা নারকেল তেল, পাকা কলা ও ডিজেল মিশিয়ে তৈরি করা হয় স্পেশাল ঘি। প্যাকেট গুঁড়া মসলায় মেশানো লিড ক্রোমেট মহিলাদের গর্ভপাতের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। ভাজা-পোড়া খাবার যেমন- চিপস, রোস্ট গ্রিল প্রভৃতি খাবার থেকে মহিলাদের ডিম্বাশয় ও জরায়ু ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। খাবার বেশিক্ষণ ভাজলে ‘ক্রকিলামাইড’ নামে এক প্রকার বিষাক্ত কেমিক্যাল তৈরি হয়, যা ক্যান্সার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। তারা বলছেন, জীবনরক্ষাকারী ওষুধ, ইনজেকশন, ডায়ালাইসিস ফ্লুয়িডÑ এসবও বাজারে নকল তৈরি হচ্ছে। কিছু কোম্পানির ওষুধে আটা, ময়দা, ট্যালকম পাউডার পাওয়া গেছে। কোনো কোনো এন্টিবায়োটিকে কার্যকারিতা নেই বললেই চলে। এ ছাড়া বেশকিছু ফার্মেসিতে বিক্রি হয় নিম্নমানের ওষুধ। এ সবকিছু ক্রয় করে প্রতারিত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। ভেজাল ইনজেকশন বা নিম্নমানের ওষুধ প্রয়োগে রোগীর মৃত্যু অবধারিত। জীবন সাজানোর উপকরণ প্রসাধন সামগ্রী বডিলোশন, পাউডার, লিপস্টিক, বিভিন্ন মোড়কে বিক্রীত রং ফর্সাকারী ক্রিম বিক্রি হচ্ছে। টুথপেস্টে গি−সারিনের পরিবর্তে ডাই ইথাইলিন গ−াইকল, পানির সঙ্গে সুগন্ধী আর স্পিরিট মিশিয়ে তৈরি হচ্ছে আফটার শেভ লোশন। এছাড়া মেয়াদ উত্তীর্ণ মানহীন ভেজাল প্রসাধনসামগ্রী মানবদেহে চর্মরোগ, দাঁদ, ক্ষত, ক্যান্সারসহ বিভিন্ন রোগ সৃষ্টি করছে। আসলে বিষাক্ত কেমিক্যাল মানবদেহে ‘কেমিক্যাল কার্সিনোজেন’ (ক্যান্সার তৈরির উপাদান) হিসেবে কাজ করে। এসব বিষাক্ত কেমিক্যাল শরীরে কোষের ক্রোমোজমের ক্ষতিসাধন করে। কোষ বিভাজন হয় অস্বাভাবিক। কোষের গঠন, আকৃতি, কার্যকারিতায় স্বাভাবিকতা বজায় থাকে না। কুমিল্লা জেলাসহ আশপাশের জেলাগুলোর একশ্রেণীর অসৎ লোক বিনাবাধায় জনস্বাস্থ্যবিরোধী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এর প্রতিকার হওয়া উচিত বলে দাবি করছেন সর্বস্ত—রের জনগণ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।