পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
#আন্দোলনকারীদের সাথে পুলিশের দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া
#ঢাবিতে পুলিশের বেপরোয়া লাঠিচার্জ, রাবার বুলেট, জলকামান ও শতাধিক টিয়ারশেল নিক্ষেপ
#সাংবাদিক, পুুলিশসহ আহত শতাধিক, আটক ৫
বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের ব্যানারে পূর্বঘোষিত পদযাত্রা শেষে গতকাল বিকেল ৩ টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করে রাখেন সরকারি চাকুরিতে ৫৬% কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
রাত ৮টার পর সেখান থেকে আন্দোলনকারীদের হঠাতে পুলিশ বেপরোয়া লাঠিচার্জ করতে শুরু করে। একইসাথে পুলিশ মুহুর্মুহু টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। একইসাথে জলকামানে ব্যবহারও করে পুলিশ।
এঘটনায় ৪ জন পুলিশ সদস্য, সাংবাদিক ও আন্দোলনকারীসহ আহত হন প্রায় শতাধিক।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি আহত শিক্ষার্থীরা হলেন বিজয় একাত্তর হলের মাহিন ও আসলাম ; কবি জসিম উদ্দীন হলের মো. রফিক; জিয়া হলের মাহফুজুর রহমান ঢাবির সূর্যসেন হলের রাফি আলামিন ও আকরাম হোসেন; বঙ্গবন্ধু হলের আবু বকর সিদ্দিক।
এছাড়া রাবার বুলেটবিদ্ধ হয়েছেন চারজন। এরা হলেন কবি জসিম উদ্দীন হলের রাজ, জিয়া হলের সাবেক শিক্ষার্থী সোহেল। সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের ওমর ফারুক, জহিরুল ইসলাম হলের খুরশেদ।
সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আরো দুজন রাবার বুলেট বিদ্ধ হয়ে ঢামেকে ভর্তি হয়েছেন। তাদের একজনের বুকে ও একজনের চোখে বুলেট বিদ্ধ হয়েছে।
আন্দোলনকারীদের পিছু হঠাতে পুলিশ চারুকলার সামনে অবস্থান নিয়ে দফায় দফায় টিয়ার শেল ছুড়তে থাকলে শিক্ষার্থীরা সেখানে আগুন জ¦ালিয়ে জড়ো হতে থাকেন। রাত ৯টার দিকে পুলিশ আবারও সর্বশক্তি নিয়ে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দিলে শিক্ষার্থীরা তখন পিছু হটে। তারপর আবার তারা বিভিন্ন হল থেকে এসে ঢাবির টিএসসি ও কেন্দ্রীয় মসজিদ সংলগ্ন চত্বরে জড়ো হতে থাকে।
এদিকে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে পুলিশের এমন হামলার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিশ^বিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, এই পরিস্থিতি প্রত্যাশিত না, আন্দোলনের নামে যা হচ্ছে..। আর আমরা চাইবো দুই পক্ষই যেন যার যার অবস্থান থেকে সরে যাওয়া। পুলিশের ক্যাম্পাসে অবস্থান নেয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অলরেডি পুলিশ ক্যাম্পাস থেকে সড়ে গেছে, পুলিশকে সড়ে যেতে বলা হয়েছে। এখন ছেলেরাই বরং দল বেধে অগ্রসর হচ্ছে ঐদিকটায়।
সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ঢাবিতে তখনো আন্দোলনকারীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ চলছিল।
আন্দোলনকারীদের সমন্বয়ক হাসান আল মামুন বলেন, পুলিশ আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে নির্বিচারে হামলা চালিয়েছে। পুলিশের টিয়ারসেল, ফাঁকা গুলিতে আমাদের শতাধিক আন্দোলনকারী আহত হয়েছেন। আটক করা হয়েছে পাঁচজনকে। আমরা এ হামলার নিন্দা জানাই। তিনি বলেন, পুলিশ শুধু আমাদের ওপর হামলা করে ক্ষান্ত হয়নি। বঙ্গবন্ধুর ছবিকেও অবমাননা করেছে।
এর আগে দুপুর থেকেই আন্দোলনকারীরা বিভিন্ন স্থান হতে এসে জড়ো হতে থাকেন ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় এলাকা ও তার আশপাশে।
অবস্থানকালীন সময়ে আন্দোলনকারীরা ‘সেভ মেরিট, সেভ নেশন’, ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায় কোটা বৈষম্যের স্থান নাই’, ‘কোটা দিয়ে কামলা নয়, মেধা দিয়ে আমলা চাই, ইত্যাদি শ্লোগানে মুখরিত করে রাখেন পুরো শাহবাগ এলাকা। আন্দোলনকারীদেও সেসময় বঙ্গবন্ধুর ছবি সম্বলিত পোস্টার ও ব্যানারও বহন করতে দেখা যায়।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবি, তারা মুক্তিযুদ্ধা কোটার বিরোধী নয়। তারা শুধুমাত্র এই কোটাকে সহনীয় মাত্রায় রেখে সংস্কারের পক্ষে যাতে প্রকৃত মেধাবীরা তাদের মেধার যোগ্য মূল্যায়ন পায়।
ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মুহসিনুর রহমান বলেন, আমরা শুধুমাত্র কোটা প্রথার সংস্কার চাই। অনেকে আমাদের আন্দোলনকে বিভ্রান্ত করতে বলে বেড়াচ্ছেন যে আমরা মুক্তিযুদ্ধা কোটা বাতিল চাই। অথচ আমরা মোটেও সেটি বলিনি। আমরা শুধু বলতে চেয়েছি আমরা এই কোটার সহনীয় মাত্রায় সংস্কার চাই।
ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ বলেন, সরকারের কাছে আমাদের আবেদন এই অযৌক্তিক ৫৬% কোটা সংস্কার করে তা ১০% এ নামিয়ে আনুক। যাতে সরকারি পরীক্ষায় মেধাবীরা চান্স পায়। এতে সরকার দেশ ও জাতি সকলের জন্য মঙ্গল হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।