পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাজধানী ঢাকার পার্শ্ববর্তি মহানগর গাজীপুর ও দক্ষিণাঞ্চলের খুলনা সিটি করপোরেশনে দলীয় প্রার্থী নির্ধারণে অস্বস্তিতে পড়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। গাজীপুরের পুরনো দলীয় কোন্দল সিটি নির্বাচনকে ঘিরে আবার সামনে এসেছে। গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লাহ খান আর জাহাঙ্গীর আলম দু’জনই প্রার্থী। আর খুলনা সিটির সাবেক মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি তালুকদার আবদুল খালেক দলীয় কোন্দলের কারণেই সিটি নির্বাচনে নিজের প্রার্থী হতে অনিচ্ছার কথা প্রকাশ করেছেন। দুই সিটিতেই প্রার্থীদের এ বিরোধ নিয়ে দলে অস্বস্তি দেখা দিয়েছে। সেক্ষেত্রে কোন্দল নিরসনে গাজীপুরে দলের প্রথম পছন্দ এ্যাডভোকেট আজমতউল্লাহকে গাজীপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান করে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমকেই নৌকার প্রার্থী করা হতে পারে। অপরদিকে খুলনায় দলের প্রথম পছন্দ সাবেক মেয়র তালুকদার খালেকের পরিবর্তে শেখ পরিবারের শেখ সালাউদ্দিন জুয়েলের ভাগ্যে নৌকা প্রতীকের শিকে ছিড়তে পারে বলে আভাস পাওয়া গেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে দলের এক সিনিয়র নেতা জানান, দুই সিটিতে নৌকা প্রতীক কে কে পাবেন তা আগামীকাল (আজ রবিবার) দলের স্থানীয় সরকার নির্বাচনী বোর্ডের বৈঠকে চূড়ান্ত হবে। দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এ বৈঠক শেষে বিষয়টি চূড়ান্ত হবে। কে কে দুই সিটিতে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হবেন তা নির্ভর করছে দলীয় সভাপতির সিদ্ধান্তের ওপর। তিনি যাকে দলের মনোনয়ন দেবেন তার পক্ষেই নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচনী মাঠে নৌকার প্রার্থীকে বিজয়ী করতে ঝাঁপিয়ে পড়বে। তিনি আভাস দেন প্রার্থী নির্ধারণে বিভিন্ন বিকল্প ভাবনা দলের হাতে আছে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত শেখ হাসিনার।
জানা গেছে, গাজীপুরের মত খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সঙ্গে জেলা আওয়ামী লীগেরও রয়েছে দূরত্ব। দলীয় কোন্দলের কারণেই বিগত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়েও হেরে যান তিনি। তালুকদার খালেক রাজি না হলে প্রার্থী হতে পারেন শেখ পরিবারের শেখ সালাউদ্দিন জুয়েল। ইতোমধ্যে খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগ বর্ধিত সভার মাধ্যমে মেয়র পদে ১০ জনের নাম পাঠিয়েছে কেন্দ্রে। ওই সভায় উপস্থিত নেতারা মেয়র পদে তালুকদার আবদুল খালেকের পক্ষেই নিজেদের অবস্থানের কথা জানান। মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি তালুকদার আবদুল খালেক, মহানগর সহসভাপতি কাজী এনায়েত হোসেন, শেখ সৈয়দ আলী, এমডিএ বাবুল রানা, সদর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম, মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক এ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান পপলু, সোনাডাঙ্গা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বুলু বিশ্বাস এবং প্রধানমন্ত্রীর চাচাতো ভাই শেখ সালাউদ্দীন জুয়েল ও শেখ সোহেলের নাম পাঠানো হয়েছে কেন্দ্রে। এদের বাইরে গার্মেন্ট ব্যবসায়ী আবদুস সালাম মুর্শেদী ও খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য মিজানুর রহমানের খুলনা সিটির মেয়র প্রার্থী হওয়ার গুঞ্জন চলছে।
এদিকে, নির্বাচনে নিজের অনীহার কথা জানিয়ে তালুকদার আবদুল খালেক বলেন, মেয়র নির্বাচনের ব্যাপারে আমার কোনো আগ্রহ নেই। আমি মনে করি দলে অনেক তরুণ নেতা আছে, তাদের সুযোগ দেয়া উচিত। বিগত সিটি নির্বাচনে দলের নেতাকর্মীদের অসহযোগিতার দিকে ইঙ্গিত দিয়ে খালেক বলেন, ২০০৮ সালে হেফাজত, বিএনপি বা জামায়াত আমাকে ভোট দেয়নি। তখন আমি যে ভোট পেয়েছি, ২০১৩ সালে এর চেয়ে ৩০ হাজার ভোট কম পাই। অতএব এখানে নির্বাচন করার প্রশ্ন আসে না। তবে দলীয় সভাপতি ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা যদি আমাকে নির্দেশ দেন আমি প্রার্থী হবো। প্রসঙ্গত: তালুকদার খালেক গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্তও দলীয় মনোনয়ন ফরম তোলেননি।
অপরদিকে, গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমতউল্লাহ খান এবং সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম সরকার দু’জনই মেয়র প্রার্থী হওয়ার কারণে কেন্দ্রে তাদের নাম পাঠাতে বলা হয়নি। দু’জনকেই মনোনয়ন ফরম নিতে বলা হয়। বৃহস্পতিবার তারা দুজনই দলীয় মনোনয়ন ফরম তুলেছেন। এ বিষয়ে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমরা কাউন্সিলর পদের নামগুলো পাঠাচ্ছি। যেহেতু আমার সভাপতি এবং আমি দু’জনই মনোনয়ন প্রত্যাশী তাই কেন্দ্র থেকে আমাদের সরাসরি ফরম তোলার কথা জানানো হয়েছে।
এদিকে, গাজীপুর আওয়ামী লীগের কোন্দলও কয়েকদিন আগে টের পাওয়া গেছে। সম্প্রতি হয়ে যাওয়া গাজীপুরের তিনটি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সবগুলোতেই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের বড় পরাজয় ভাবিয়ে তুলেছে দলটির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে। তাদের শঙ্কা আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে এই ফলাফল নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। শুধু তাই-ই নয়, জেলা নেতৃত্বের কোন্দলের সুযোগ নিয়ে আবারো জয় পেতে পারে বিএনপি।
গত ২৯ মার্চ পিরুজালী, ভাওয়াল মির্জাপুর ও ভাওয়াল গড় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ভরাডুবি হয় আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের। এই ৩টি ইউপির মধ্যে ২টিতে জয় পেয়েছে বিএনপি এবং আরেকটি জয় লাভ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী। দলের এমন ফলাফলের পর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের স্বীকার করেছেন গাজীপুরের ইউপি নির্বাচনে হারের কারণ দলীয় কোন্দল। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকেও এসব কোন্দল নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
আজমতউল্লাহ খান, জাহাঙ্গীর আলম ছাড়াও গাজীপুর সিটিতে মেয়র নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী হতে দলের মনোনয়ন ফরম তুলেছেন সাইফুল ইসলাম, মতিউর রহমান, কামরুল আহসান সরকার রাসেল, সুমন আহমেদ শান্ত বাবু, কাজী আলিমুদ্দিন, আব্দুর রব নয়ন ও মো. ওয়াজেদুল মিয়া।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, রবিবার (আজ) আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের বৈঠকে সম্ভাব্য প্রার্থীদের সাক্ষাতকার শেষে প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে। দলীয় কোন্দলের বিষয়ে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের মতো বড় দলে তৃণমূলে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা থাকবে এটাই স্বাভাবিক। তবে প্রার্থী চূড়ান্ত হয়ে গেলে ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগ মাঠে নামবে।
আজ রবিবার সন্ধ্যা সাতটায় গণভবনে স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সভায় উভয় সিটিতে আগ্রহী প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার নেবেন দলীয় সভাপতি ও স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের প্রধান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার আগে দুই সিটির মেয়র পদে আগ্রহী প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠিত হবে।
এ ছাড়াও ওই সভায় একটি উপজেলা পরিষদ নির্বাচন, দুইটি পৌরসভা ও ১৩ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের মনোনয়ন দেয়া হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।