পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অর্থনৈতিক রিপোর্টার : অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, ব্যাংকিং কমিশন আপাতত গঠন করা হচ্ছে না। গতকাল রোববার সচিবালয়ে ‘ইকোনোমিক রিপোর্টার্স ফোরাম’ (ইআরএফ)-এর সঙ্গে এক প্রাক-বাজেট মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা জানান। সার্বিকভাবে ব্যাংকিং খাতের সংস্কার ও উন্নয়নে চলতি ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেট বক্তব্যে একটি ব্যাংকিং কমিশন গঠনের কথা বলা হয়েছিল।
মতবিনিময় সভায় এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ব্যাংকিং কমিশন করার এখন কোন ইচ্ছা নেই আমার। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, বিশেষ করে ব্যাংকিং খাতে অনেকগুলো ঘটনা-টটনা ঘটে গেছে, সেখানে যেসব ইনকোয়ারি হচ্ছে, সেগুলো লিমিটেড ইনকোয়ারি। এটার ফল-টল দেখা দরকার। তারপর ঠিক করা যাবে- ব্যাংকিং কমিশন করার প্রয়োজন কি আছে বা থাকলে কীভাবে সেটাকে কাস্ট করা যায়। তিনি আরো বলেন, অনেক হৈ চৈ করে ‘ফাইনান্সিয়াল রিপোর্টিং অ্যাক্ট’ (এফআরএ)-টা পাস করলাম। কিন্তু এখন পর্যন্ত ‘এফআরএ কাউন্সিল’ গঠন করা সম্ভব হয়নি। আশা করছি, আগামী বছর এটা বাস্তবায়িত হবে।
রাজস্ব আদায় বাড়াতে আগামী বাজেটে প্রতি উপজেলায় কর অফিস স্থাপনের ওপর গুরুত্বারোপ করে মতবিনিময় সভায় উপস্থিত রাজস্ব বোর্ড কর্মকর্তাদের উদ্দেশে অর্থমন্ত্রী বলেন, ৪৯৫টি উপজেলায় কর অফিস স্থাপনে চেয়ারম্যানদের সময়সীমা বেঁধে দিয়ে একটা কর্মসূচী দাও। এ সময় এনবিআর-এর পক্ষ থেকে জানানো হয় যে, বর্তমানে ৮৬টি উপজেলায় কর অফিস আছে। তবে এগুলোকে সক্রিয় করা প্রয়োজন।
এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, কৃষি ও কৃষকের ওপর কোন কর নেই। কৃষি উপকরণ আমদানির ওপর কর আছে, আবার নেই-ও। অপর এক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশের জন্য জুলাই-জুন পর্যন্ত সময়টিই অর্থবছর হিসেবে সর্বোত্তম, এপ্রিল-মার্চ নয়। জুলাইয়ে অর্থবছর শুরু হলে প্রকল্পের অর্থছাড় করতে করতে তিন মাস লেগে যায়। তারপর অক্টোবর থেকে মার্চ-এপ্রিল পর্যন্ত কাজ করা যায়।
সরকারের পক্ষ থেকে ‘উদ্যোক্তা তহবিল’ গঠনের প্রস্তাবের বিরোধিতা করে মুহিত বলেন, উদ্যোক্তা তহবিল সরকারের কোনমতেই থাকা উচিত নয়। এটা করার জন্য অন্যান্য পার্টি আছে। অর্থমন্ত্রী বলেন, বাজেটে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের ওপর সরকার বরাবরই জোর দিয়ে আসছে। কারিগরি শিক্ষাটাকে ‘প্রশিক্ষণ’ বলা উচিত নয়। এটা আসলে বৃত্তিমূলক শিক্ষা। প্রশিক্ষণ হচ্ছে যেটা বিএমইটি দিয়ে থাকে। আমরা বিএমইটি’র প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা আরো বাড়িয়েছি। কারণ এখান থেকে পাস করে যারা বেরোয়, তারা বেকার থাকে না। তাদের অনেক দাম। যারা বাইরে যায় তারাও প্রচুর টাকা-পয়সা পাঠায়।
পুঁজিবাজারে সরকারের হস্তক্ষেপ অধিক হওয়া উচিত নয়
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, পুঁজিবাজারে সরকারের হস্তক্ষেপ অধিক হওয়া উচিত নয়। এখানে সরকারের হস্তক্ষেপ হবে পুঁজিবাজারের নিয়মনীতি ও বিধিমালা বাস্তবায়নে যাতে এটা ভালোভাবে চলতে পারে। এখানে আমাদের কোনো হস্তক্ষেপ করা ঠিক হবে না। বাজার তার স্বাভাবিক নিয়মে চলবে। তারপর এটা আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যাবে। অর্থমন্ত্রী বলেন, এটা খুবই আশ্চর্যের বিষয় যে, যখন কোনো কোম্পানি আইপিও (প্রাথমিক গণপ্রস্তাব) মাধ্যমে বাজারে আসে তখন কোম্পানি যত পারে বাজার থেকে টাকা তুলে নিতে চায়। এতে ফেস ভ্যালুর কয়েকগুণ বেশি অর্থ নিয়ে যায় তারা। ক্রেতাদের প্রিমিয়াম দিয়ে শেয়ার কিনতে হয়। আর যখন এটা বাজারে আসে তখন লসটা এসে যায়।
ইলেক্ট্রনিক ক্যাশ রেজিস্ট্রার (ইসিআর) বাধ্যতামূলক হচ্ছে
আগামী বাজেটে ইলেক্ট্রনিক ক্যাশ রেজিস্ট্রার (ইসিআর) বাধ্যতামূলক করা হবে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, একটা নির্দিষ্ট পর্যায় পর্যন্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অবশ্যই ইসিআর স্থাপন করতে হবে। গত কয়েক বছর ধরে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ইলেক্ট্রনিক মেশিনের কথা বলে আসলেও এর তেমন প্রসার হচ্ছে না। এবার এটি বাধ্যতামূলক করা হবে। এটা হলে মেশিনের বাইরেও বিক্রি হবে, তবে সেটা কমে যাবে, চুরিও কমবে। একজন উদ্যোক্তা যদি একাউন্টিং প্র্যাকটিস করেন তাহলে তার দায়বদ্ধতা কমে যায় এবং এটা প্রতিষ্ঠানের জন্যও ভাল। ‘একাউন্টিং প্র্যাকটিসটা কতটা বাড়ানো যায়-এটাই হচ্ছে ভ্যাট আদায়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিক্রয় মূল্যের ওপর ভ্যাট আরোপ করা হবে না। এটা কোন লেভেলেই সম্ভব নয়।
আয় বৈষম্য বাড়ছে
আয় বৈষম্য প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, আয় বৈষম্য বাড়ছে, এতে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু এটা এমন পর্যায়ে যাচ্ছে না যেটা যাতে কোন সামাজিক সমস্যা বা বিদ্রোহের পর্যায়ে না যেতে পারে সেদিকে আমরা সব সময় সচেষ্ট আছি। আয় বৈষম্য কিছুটা বাড়বেই। আমরা সব সময় চেষ্টা করি আয় বৈষম্য কমিয়ে আনতে।
তিনি বলেন, অন্যদিকে আমাদের যে আয় প্রবৃদ্ধি হচ্ছে, এর একটা যথেষ্ট অংশ নীচের দিকেও যাচ্ছে। যে কারণে চলতি বছর শেষে চরম দরিদ্রের হার অবশ্যই দুই ডিজিটের নীচে নেমে আসবে। আমাদের যে প্রবৃদ্ধি হচ্ছে সেখানে সাধারণ দরিদ্রদের অংশগ্রহণ তেমন না থাকলেও, চরম দরিদ্রদের অংশগ্রহণ আছে। সেখানে সামাজিক নিরাপত্তা বলয় কর্মসূচীটি খুবই কার্যকর ভূমিকা রাখছে।
‘বর্তমানে চরমতম দরিদ্রের হার ১১ শতাংশের মতো’ দাবি করে মুহিত বলেন, সেদিক থেকে আমরা একটা বাহাদুরী নিতে চাই। প্রাক-বাজেট এ মতবিনিময় সভায় ইআরএফ-এর সভাপতি সাইফ ইসলাম দিলাল, সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমানসহ কার্যকরী কমিটির বিভিন্ন সদস্যরা বিভিন্ন বিষয়ে সুপারিশ তুলে ধরেন। সভায় এনবিআর চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান, অর্থসচিব মাহবুব আহমেদও সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন।
ইআরএফ-এর মতবিনিময় সভাকে ‘অত্যন্ত ফলপ্রসূ’ হিসেবে আখ্যায়িত করে অর্থমন্ত্রী বলেন, এসব প্রস্তাবের অধিকাংশই আগামী বাজেটে উল্লেখ করা হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।