Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মাটির নিচে হবে চার সড়ক

প্রকাশের সময় : ৪ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : ঢাকা শহরে মাটির নিচ দিয়ে চারটি সড়ক (সাবওয়ে) নির্মাণের কাজ শুরু করতে যাচ্ছে সরকার। বর্তমান অবস্থায় নতুন সড়ক নির্মাণে ভূমি অধিগ্রহণ, অবকাঠামো অপসারণ ও পুননির্মাণ, পুনর্বাসনের মত কাজের উচ্চ ব্যয় এড়ানোর জন্য এ পদ্ধতি হাতে নেয়া হচ্ছে। এমআরটি এর বেশির ভাগ অংশ মাটির নিচে সাবওয়ে নির্মাণ করা সমিচীন। গতকাল (রোববার) বনানীর সেতু ভবনে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ঢাকা সাবওয়ে (আন্ডার গ্রাউন্ড মেট্রো) নির্মাণের বিষয়ে মতামত ও পরামর্শ গ্রহণের লক্ষ্যে সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রী মৌখিকভাবে ঢাকা শহরে সাবওয়ে নির্মাণের বিষয়ে সেতু বিভাগকে নির্দেশনা দেন। সে প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ প্রাথমিক কার্যক্রম হাতে নেয়। গত ২৪ মার্চ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ঢাকা শহরের যানজট নিরসনকল্পে সাবওয়ে নির্মাণের কার্যক্রম তরান্বিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করে পত্র প্রদান করে।
এ উদ্দেশ্যে আরএসটিপি এর সাথে সামঞ্জস্য রেখেই ৪টি লেইনের পরিকল্পনা প্রণীত হয়েছে। ২০২১ সালের মধ্যে প্রাথমিকভাবে আরএসটিপি এর এমআরটি-১ এবং এমআরটি-২ অ্যালাইনমেন্ট বরাবর দু’টি সাবওয়ে নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে।
৩২ কি.মি. দীর্ঘ সাবওয়ে লাইন-১ টঙ্গী হতে শুরু করে এয়ারপোর্ট-কাকলী-মহাখালী-মগবাজার-পল্টন-শাপলা চত্বর হয়ে সায়েদাবাদ পর্যন্ত হবে যা পরবর্তীতে নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত সম্প্রসারিত করা হবে। সম্ভাব্য নির্মাণ ব্যয় হবে ৫.২৬৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। আর সাবওয়ে লাইন-২ এর দৈর্ঘ হবে ১৬ কি.মি.। এটি আমিনবাজার থেকে শুরু করে গাবতলী-শ্যামলী-আসাদগেট-নিউমার্কেট-টিএসসি-ইত্তেফাক হয়ে সায়েদাবাদ পর্যন্ত হবে যা পরবর্তীতে উভয়দিকে সম্প্রসারিত হবে। সম্ভাব্য নির্মাণ ব্যয় হবে ২.৮৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। মোট ৪৮ কিমি. সাবওয়ে দু’টির মোট সম্ভাব্য নির্মাণ ব্যয় হবে ৮.১৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। যা পরবর্তীতে সমীক্ষা সম্পাদনের মাধ্যমে প্রকৃত ব্যয় নিরূপণ করা হবে। অন্যদিকে প্রাথমিক প্রস্তাব অনুসারে সাবওয়ের তৃতীয় রুটটি যাবে গাবতলী থেকে সদরঘাট পর্যন্ত এবং চতুর্থটি যাবে রামপুরা থেকে সদরঘাট পর্যন্ত।
ঢাকা শহরের যানজট নিরসন ও গণপরিবহন ব্যবস্থা, নগর উন্নয়ন, কারিগরী নির্মাণ পদ্ধতি অর্থনৈতিক সবদিক হতে বিষয়টি জটিল। এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তই মূখ্য। প্রধানমন্ত্রী ঢাকা শহরের যানজট নিরসন ও গণপরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়নে সুদূরপ্রসারী পাতাল রেলের মাধ্যমে সমাধানের নির্দেশনার প্রেক্ষিতে সভায় বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ একটি প্রস্তাবনা প্রণয়ন করেছে সভায় আলোচনা হয়।
আলোচনায় নগর উন্নয়নে নাগরিক সুবিধা তথা অর্থনৈতিক কর্মকা- গতিশীল করতে গণপরিবহন অপরিহার্য্য। ব্যক্তি সুযোগ বৃদ্ধি, জ্বালানী ব্যয় ও যানজট কমাতে, অর্থনৈতিক সুযোগ সৃষ্টি, ভ্রমণব্যয় সাশ্রয়ে, জলবায়ু পরিবর্তনে গণপরিবহনের প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য্য বিষয়গুলো প্রাধান্য পায়।
একই সাথে ঢাকা শহরের বর্তমান অবস্থায় এলিভেটেড এবং এ্যাট-গ্রেড আকারের রাস্তা নির্মাণ করতে গেলে নির্মাণকালীন জটিলতা যথা ভূমি অধিগ্রহণ, বিদ্যমান অবকাঠামো অপসারণ ও পুননির্মাণ, ক্ষতিগ্রস্থদের পুনর্বাসনের মত কাজের উচ্চ ব্যয়, পরিবেশ নীতিমালা সংরক্ষণ, বাস্তবায়নকালীন সময় জনদুর্ভোগ ও ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট ইত্যাদি বিষয়গুলো বিবেচনা করে ঢাকা শহরের অভ্যন্তরে এমআরটি এর বেশির ভাগ অংশ মাটির নিচে সাবওয়ে নির্মাণ করা সমিচিন বলে সিদ্ধান্ত হয়।
অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী’র সভাপতিত্বে সভায় বিআরটিএ’র চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম, সেতু বিভাগের সচিব খোন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আবু সাঈদ, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন, ডিটিসিএ’র নির্বাহী পরিচালক মো. কায়কোবাদ হোসেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মেজর জেনারেল মো. ছিদ্দিকুর রহমান সরকার ও আবু সাঈদ মো. মাসুদ, বুয়েটের প্রফেসর শামসুল হক, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী ইবনে আলম হাসান, সেতু বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী কবির আহম্মেদসহ সেতু বিভাগ ও সংশ্লিষ্ট সংস্থার প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন। সভায় সার্ভে বিষয়ক উপস্থাপনা করেন, ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি’র অধ্যাপক ড. হোসেইন মো. শাহীন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মাটির নিচে হবে চার সড়ক
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ