পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মহসিন রাজু, বগুড়া থেকে : বগুড়ার পশ্চিমাঞ্চলীয় উপজেলা কাহালু, দুপচাঁচিয়া, নন্দীগ্রাম ও আদমদীঘি উপজেলার সর্বত্রই এখন গাছে গাছে শোভা পাচ্ছে ঝুলন্ত সজনের সবুজ সমারোহ। শক্ত ও পোক্ত না হতেই হাট-বাজারে উঠছে সজনে উঠেছে সজনে। দ্বিগুণ দামে তা’ কিনছেন ক্রেতারা। বাজারে এখন প্রতিকেজি সজনে ডাঁটা ৮০ টাকা থেকে ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে দেদারসে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্থানীয় কৃষি বিভাগের সহযোগীতা ও পরামর্শে বাড়ছে সজনে চাষের প্রবণতা। গ্রামাঞ্চলের মেঠো পথে, বাড়ির আঙ্গিনায়, উঁচু ভিটায়, কৃষি জমির ধারে, বাড়ির পাশে, পুকুর পাড়ে ও ফাঁকা পরিত্যক্ত জায়গায় সজিনা গাছের ভাঙা বা কাটা ডাল রোপন করে তেমন কোন যতœ ছাড়াই সজনে গাছ বড় হয়ে অঢেল ফলন দিয়ে থাকে। ইংরেজিতে সজনের নাম ‘‘ড্রামস্ট্রিক’’। যার অর্থ ঢোলের লাঠি। বীজ থেকে সজনে চারা তৈরি ব্যয়বহুল, কষ্ঠসাধ্য এবং সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। পুষ্টি ও ঔষধি গুণসমৃদ্ধ সবজি সজনের ফুল-পাতা-ডাঁটা সবটাই খাওয়া যায়।এর সব কিছুতেই রয়েছে সমান পুষ্টিগুণ। জলবসন্ত, ডায়রিয়া, লিভারজনিত রোগ প্রতিরোধ করে সজনে। সজিনার ফুল ও পাতা শুধু শাক হিসেবেই নয়, পশু খাদ্য হিসেবেও ব্যবহার হয়ে থাকে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সজনের ডাঁটা ক্যানসার রোধ করে, রাতকানা দূর করে, দুর্বল হাড় শক্ত করে এবং রক্তশূন্যতা দূর করে রক্তচাপ কমায়। প্রতি ১০০ গ্রাম সজনেতে জ্বলীয় অংশ ৮৩.৩ গ্রাম, খনিজ ১.৯ গ্রাম, আঁশ ৪.৮ গ্রাম, খাদ্যশক্তি ৬০ ক্যালোরি, প্রোটিন ৩.২ গ্রাম, চর্বি ০.১ গ্রাম, শর্করা ১১.৪ গ্রাম, ক্যালশিয়াম ২১.০ মিলিগ্রাম, লোহা ৫.৩ মিলিগ্রাম, ক্যারোটিন ৭৫০ মাইক্রোগ্রাম, ভিটামিন বি ১০.০৪ মিলিগ্রাম, বি ১০.০২ মিলিগ্রাম, সি ৪৫.০ মিলিগ্রাম খাদ্যোপযোগী পুষ্টি উপাদান রয়েছে। অবশ্য সজনে গাছের প্রতি সবার তেমন আগ্রহ না থাকলেও ডাটার প্রতি আগ্রহ নেই এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন।
কৃষি অফিস সূত্র জানিয়েছে, সজনের ডাল রোপণ করলেই গাছ হয়। কোনো খরচ নেই। চৈত্র মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে গোটা বৈশাখ মাস পর্যন্ত সজিনা পাওয়া যাবে। বীজ ও ডাল এর মাধ্যমে সজিনার বংশ বিস্তার করা বেশ সহজ। এদেশে বীজ থেকে চারা তৈরি করে চাষাবাদের রীতি এখন পর্যন্ত অনুসরন করা হয়না। বীজের মাধ্যমে বংশ বিস্তারের ক্ষেত্রে এপ্রিল-মে মাসে গাছ থেকে পাকা ফল সংগ্রহ করতে হবে। সেটিকে শুকিয়ে ফাটালে বীজ পাওয়া যাবে। এ বীজ শুকনো বায়ুরোধী পাত্রে ১-৬ মাস পর্যন্ত সংরক্ষণ করে রাখার পর জুলাই-আগস্ট মাসে বীজ তলায় অথবা পলি ব্যাগে বপন করতে হয়। বপনের আগে বীজগুলোকে ২৪ ঘন্টা ভিজিয়ে রাখতে হবে। এতে বীজ থেকে চারা গজাতে সুবিধা হয়। বীজ থেকে চারা বের হতে সময় লাগে ১০ থেকে ২০দিন। চারা বের হবার পর নিয়মিত সেচ, সার প্রয়োগ ও অন্যান্য যতœ পরিচর্যা করতে হয়। বীজ থেকে সজিনা উৎপাদনের ক্ষেত্রে ডাল পুঁতে অঙ্গজ বংশ বিস্তারের চেয়ে কিছুটা দেরিতে ফল আসে। সজনে চাষে তেমন দক্ষতার প্রয়োজন হয়না। নন্দিগ্রাম উপজেলা কৃষি অফিসার মুহাম্মদ মুশিদুল হক উপরোক্ত তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, সজনে পাতা ও ফল সবজি খুবই পুষ্টিযুক্ত। সকল সবজির তুলনায় সাজনাতে বেশি পরিমাণ ভিটামিন ও ক্যালসিয়াম রয়েছে। সজনেয় নানা রকমের রসনাযুক্ত খাবার তৈরি হয়। এসবজি চাষে কৃষকেরা একটু মনোযোগী হলেই এ উপজেলায় সজিনার উৎপাদন বাড়বে। অন্যান্য সবজি উৎপাদনের চেয়ে সজনে লাভজনক বলেও জানান তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।