পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পশ্চিমা লঘুচাপের একটি বর্ধিতাংশের (ট্রাফ) সক্রিয় প্রভাবে হঠাৎ বদলে গেছে চৈত্রের আবহাওয়ার স্বাভাবিক চালচিত্র। গতকাল (শুক্রবার) রাতে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত রাজধানী ঢাকাসহ দেশের অনেক জায়গায় চৈতালী ধূলিঝড়, হিমেল দমকা হাওয়া, অবশেষে কালবৈশাখী ঝড় বয়ে গেছে। সেই সাথে ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে শিলাবৃষ্টি হয়েছে। প্রত্যাশিত এই হিমেল হাওয়া ও বর্ষণে সিক্ত হয়েছে দেশ। তবে চৈত্রের কালবৈশাখী ঝড়, বজ্রপাত ও শিলাবৃষ্টিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে ফল-ফসল, শাক-সবজি, গাছাপালা, আম-লিচুর নতুন গুটি ও মুকুল, ক্ষেত-খামারের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে উপড়ে গেছে বসতঘর, দোকান-পাট, বিদ্যুতের খুঁটি। একজন আবহাওয়াবিদ জানান, মওসুমের এই সময়ে আগাম কালবৈশাখী, বজ্রবৃষ্টি ও শিলাবৃষ্টি স্বাভাবিক। পূর্বাভাসের সাথেও সঙ্গতিপূর্ণ। সামনের দিনগুলোতে চৈত্রের অবশিষ্ট সময়ে এবং সামনে বৈশাখ মাসজুড়ে কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টি, বজ্রপাত হতে পারে। আজও (শনিবার) দমকা ও ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি, বজ্র ও শিলাবৃষ্টির পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। নদী বন্দরসমূহকে ২নং নৌ-হুশিয়ারি সঙ্কেত দেখাতে বলা হয়েছে।
এদিকে আবহাওয়া বিভাগ গতকাল রাত ১টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদী বন্দরসমূহের জন্য দেয়া সর্বশেষ পূর্বাভাসে (সংশোধিত) জানায়, রাজশাহী, টাঙ্গাইল, পাবনা, বগুড়া, ময়মনসিংহ, ঢাকা, ফরিদপুর, মাদারীপুর, কুমিল্লা, নোয়াখালী, যশোর এবং সিলেট অঞ্চলসমূহের উপর দিয়ে পশ্চিম, উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার গতিবেগে অস্থায়ীভাবে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। সেই সাথে বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নদী বন্দরসমূহকে ২ নং নৌ-হুঁশিয়ারি সঙ্কেত দেখাতে বলা হয়েছে। এছাড়া দেশের অন্যত্র একই দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিমি বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। সেই সাথে বৃষ্টি, বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নদী বন্দরসমূহকে ১নং নৌ-হুঁশিয়ারি সঙ্কেত দেখাতে বলা হয়েছে।
বিকেল সাড়ে ৪টা নাগাদ ঢাকার আকাশ হঠাৎ কালো মেঘে ঢেকে যায়। শুরু হয় দমকা ও ঝড়ো হাওয়া- সঙ্গে বজ্রবৃষ্টি ও শিলাবৃষ্টিতে রাজধানী হয়েছে শীতল, সিক্ত ও স্নিগ্ধ। জনজীবনে স্বস্তি দেখা গেছে। টানা খরতপ্ত আবহাওয়া কেটে গতকালের দমকা ও ঝড়ো হাওয়ার সাথে সাময়িক বৃষ্টিপাতের ফলে ঢাকায় মশার উৎপাত কিছুটা কমবে- এমনটি আশা করছে রাজধানীবাসী। যদিও ঢাকায় বৃষ্টিপাত হয়েছে মাত্র ১ মিলিমিটার। গতকাল দেশের সর্বোচ্চ বর্ষণ হয় (সন্ধ্যা ৬টা থেকে ২৪ ঘণ্টায়) সিলেটে ৪৪ মিমি।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানা গেছে, আজও (শনিবার) দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি, বজ্রবৃষ্টি ও শিলাবৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ৭২ ঘণ্টা পর তাপমাত্রা ক্রমশ বৃদ্ধি পেতে পারে।
গতকাল ২৪ ঘণ্টায় দেশের অন্যান্য স্থানে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল টাঙ্গাইল ১ মিমি, নিকলিতে ৫ মিমি, ময়মনসিংহে ১০ মিমি, নেত্রকোনায় ৩৪ মিমি, শ্রীমঙ্গলে ৯ মিমি, রাজশাহীতে ১ মিমি, ঈশ্বরদীতে ৯ মিমি, বগুড়ায় সামান্য, রংপুর ১ মিমি, তাড়াশে ৪ মিমি, দিনাজপুরে ৯ মিমি, সৈয়দপুরে ১৬ মিমি, তেঁতুলিয়ায় ৩১ মিমি, ডিমলায় ১৮ মিমি, রাজাহাটে ১২ মিমি, কুমারখালীতে ১৯ মিমি।
এদিকে আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে জানা গেছে, রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু’এক জায়গায় দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি ও বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। সেইসাথে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা কিছুটা হ্রাস এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। আগামী ২ দিনে বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে। পরের ৫ দিনে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে।
দীর্ঘমেয়াদী আবহাওয়ার পূর্বাভাসে চলতি মার্চ (ফাল্গুন-চৈত্র)মাসে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মাঝারি থেকে তীব্র আকারে কালবৈশাখী ঝড়, বজ্রঝড়, অনেক জায়গায় হালকা কালবৈশাখীর শঙ্কার কথা জানানো হয়। তাছাড়া মার্চে (৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঊর্ধ্বে) তাপপ্রবাহের পূর্বাভাসও দেয়া হয়। অবশেষে গতকাল মার্চের শেষ পর্যায়ে এসে কালবৈশাখী ঝড়, বজ্রঝড়, শিলাবৃষ্টি হলো। এরআগে উল্লেখযোগ্য কোন কালবৈশাখী ও বজ্রঝড় হয়নি। তাপমাত্রাও ছিল সহনীয় এমনকি স্বাভাবিকের নিচে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে এমনটি ঘটছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।