পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কিছু দ্বিমত থাকলেও ফলপ্রসূ আলোচনা দু’পক্ষের : প্রতিনিধিদল চীনে ফিরে বোর্ডের সাথে আলোচনার করে পরবর্তী করণীয় ঠিক করবে
দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) কৌশলগত বিনিয়োগকারী নির্ধারণ নিয়ে নতুন শর্তও মেনে নিয়েছে চীনের শেনজেন স্টক এক্সচেঞ্জের প্রতিনিধিদল। প্রতিনিধি দলটি চীনে গিয়ে তাদের বোর্ডের সাথে আলোচান করে আইনী জটিলতার সুরহা করে শিগগিরই বাংলাদেশের সাথে অংশীদারিত্ব ক্রয় নিয়ে অন্যান্য কার্যক্রম সম্পন্ন করবে বলে সূত্র জানিয়েছে। ফলে শেয়ারবাজারের অংশীদারিত্ব বিক্রি নিয়ে আর কোন বাধা রইলো না। গতকাল শেনজেন প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করে ডিএসই’র দেয়া নতুন ৫টি শর্তও মেনে নেয় চীনের প্রতিনিধিদলটি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডিএসই’র এক পরিচালক বলেন, দেশের স্বার্থে, বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে, বাজারের অস্থিরতা নিয়ন্ত্রণে এবং বিএসইসি ও ডিএসই’র সম্মান, বাংলাদেশ ব্যাংকের মানি মার্কেট সমস্যা, আর্থিক সমস্যাসহ নানা দিক বিবেচনা করে বিএসইসি বিষয়টি মেনে নিয়েছে। চীনও কিছু দ্বিমত থাকলেও সকল শর্ত মেনে নিয়েছে। তাই এখন চীনের কাছে ডিএসই’র অংশীদারিত্ব বিক্রি নিয়ে কোন ধরণের বাধা থাকলো না।
বৈঠকে অংশগ্রহণ করা শাকিল রিজভী স্টক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও ডিএসই’র সাবেক পরিচালক শাকিল রিজভী ইনকিলাবকে বলেন, বৈঠকে দু’পক্ষের ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। তিনি জানান, শেনজেন স্টক এক্সচেঞ্জের প্রতিনিধি দলটিই নীতিনির্ধারক নয়; তারা চীনে ফিরে বোর্ডের সাথে আলোচনার মাধ্যমে পরবর্তী করণীয় ঠিক করবে। শাকিল রিজভী বলেন, আলোচনায় চীনের কিছু দ্বিমতও ছিল তাও সমাধান করা হয়েছে। এখনই সরাসরি না বললেও আশা করা যায় চীন আমাদের সাথে থাকছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
ডিএসই নবনির্বাচিত পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইনকিলাবকে বলেন, ডিএসই’র শেয়ার বিক্রি ইতিবাচক পথে রয়েছে। আমি আশাবাদী সমাধান হবে। আইনের মারপ্যাচে না গিয়ে দু’পক্ষই ইতিবাচক সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে। সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যানও সর্বাত্মক সহযোগীতা করছেন। মিনহাজ মান্নান বলেন, আলোচনায় চীন ও বাংলাদেশ দুই পক্ষই খুশি। আইনী দিকগুলো সুরহা করে দ্রæত সমাধানের পথে যাচ্ছে শেয়ারবাজারের কৌশলগত অংশীদারিত্ব নির্ধারণ। তিনি জানান, গতকালের (বুধবার) বৈঠকে দুই দেশের আইনজীবীরাও উপস্থিত ছিলেন।
সূত্র মতে, চীনের শেনজেন স্টক এক্সচেঞ্জ একটি প্রতিনিধি দল গত মঙ্গলবার ঢাকায় আসে বিএসইসি’র দেয়া নতুন ৫টি শর্ত নিয়ে আলোচনার জন্য। এরই অংশ হিসেবে গতকাল তাঁরা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠক সূত্রে জানা যায়, চীন ন্যায্যাতার ভিত্তিতে শেয়ার নেয়ার কথা জানায়। পরে আলোচনার ভিত্তিতে দুই পক্ষই সকল শর্তই ইতিবাচকভাবে মেনে নেয়। পাশাপাশি দ্রæত অন্যান্য কার্যক্রম সম্পাদনেও একমত হয়।
এর আগে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) শেয়ার বিক্রির ব্যাপারে কোনো ধরনের রাজনীতি চায় না চীন বলে জানিয়েছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ঝাং জিউ। সাংবাদিকদের কাছে দেওয়া লিখিত বক্তব্যে রাষ্ট্রদূত জানান, বিষয়টি সম্পূর্ণ বাণিজ্যিক। বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের এক্ষেত্রে সর্বোচ্চ স্বচ্ছতার সঙ্গে উপযুক্ত অংশীদার খুঁজে নেওয়া উচিত।
চীনের কাছে স্টক এক্সচেঞ্জের শেয়ার বিক্রির ব্যাপারে প্রস্তাব সংশোধন করে নতুন করে যে ৫টি শর্ত দেওয়া হয় সেখানে বলা হয়েছেÑ শেয়ার পারচেজ এগ্রিমেন্টে (এসপিএ) এমন কোনো শর্ত রাখা যাবে না যা স্থানীয় আইনের সাংঘর্ষিক। পাশাপাশি ডিএসইর সাধারণ শেয়ারহোল্ডার ও বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেট উন্নয়নে বিরুদ্ধে না যায়। এমন কোনো প্রস্তাব রাখা চলবে না যা পরিপালন করতে ডিএসইর বিদ্যমান মেমোরেন্ডাম এবং আর্টিকেলস অব অ্যাসোসিয়েশন সংশোধন করতে হয়। এসপিএসহ কৌশলগত ইস্যু চূড়ান্ত করে কমিশনে জমা দেওয়ার আগে ডিএসইর শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদন নিতে হবে। কৌশলগত বিনিয়োগকারী ইস্যুতে গঠিত কমিটির প্রতিবেদন ডিএসইর সাধারণ সভায় উপস্থাপন করতে হবে। ডিএসইর সাধারণ সভার সিদ্ধান্তপত্র, এসপিএসহ কনসোর্টিয়ামের অন্যান্য কাগজাদি নিয়ে কমিশনে চূড়ান্ত আবেদন করতে হবে।
উল্লেখ্য, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের কৌশলগত অংশীদার হতে চার মাস আগে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসইর) আহŸানে চীন ও ভারতের দুটি কনসোর্টিয়াম বা জোট গঠন করে দরপত্র জমা দেয়। কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে ডিএসইর প্রতি শেয়ারের জন্য চীনা প্রতিষ্ঠান শেনজেন ও সাংহাই স্টক একচেঞ্জ দর প্রস্তাব করেছে ২২ টাকা। বিপরীতে প্রায় একই পরিমাণ শেয়ার কেনার জন্য ১৫ টাকা দরপ্রস্তাব করে ভারতীয় ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জের (এনএসই) নেতৃত্বাধীন বিনিয়োগকারীদের আরেকটি কনসোর্টিয়াম। চীনের প্রতিষ্ঠানটি ২৫ শতাংশ শেয়ারের দাম ধরেছে ৯৯২ কোটি টাকা। এ ছাড়া কারিগরি সহায়তা বাবদ ৩০০ কোটি টাকা দেয়ার প্রস্তাব করে। অপর দিকে ভারতীয় প্রতিষ্ঠানটির দর ছিল ৬৭৬ কোটি টাকা।
ঢাকা স্টক একচেঞ্জ যাচাই-বাছাই করে গত ১৯ ফেব্রæয়ারি ডিএসই চীনের সাংহাই এবং সেনজেন স্টক এক্সচেঞ্জকে নিয়ে গঠিত কনসোর্টিয়ামকে কৌশলগত বিনিয়োগকারী হিসেবে বেছে নেয়। আর ভারতের এনএসইর নেতৃত্বে গঠিত জোটটি দরপ্রস্তাবে পিছিয়ে থেকে নানাভাবে অনৈতিক চাপ প্রয়োগ করে ডিএসই’র অংশীদার হতে।
পরে ডিএসই’র এ প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয় পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড একচেঞ্জ কমিশনকে (বিএসইসি)। তারা একটি পর্যালোচনা কমিটি করে। ওই কমিটি গত ১৫ মার্চ তাদের প্রতিবেদন জমা দেয়। এরপর গত ২০ মার্চ বিএসইসি চীনের শেনজেন ও সাংহাই স্টক একচেঞ্জ নিয়ে গঠিত কনসোর্টিয়ামের প্রস্তাবে কৌশলে ৫টি শর্ত দিয়ে সংশোধনের কথা বলে। এরপর গত মঙ্গলবার চীনের শেনজেন স্টক এক্সচেঞ্জের একটি প্রতিনিধি দল ঢাকায় আসে আলোচনার জন্য। গতকাল এ নিয়ে আলোচনায় দু’পক্ষই সমঝোতায় পৌছায়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।