পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশেষ সংবাদদাতা : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যেকোনো কাজ-চ্যালেঞ্জ সামনে আসুক না কেন, সেটা আমরা অর্জন করতে সক্ষম হব। এই আত্মবিশ্বাস সব সময় নিজের মধ্যে থাকতে হবে। কাব স্কাউটের মূলমন্ত্র হচ্ছে যথাসাধ্য চেষ্টা করা। যথাসাধ্য চেষ্টা করলে আমরা কোনো ক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকব না। প্রধানমন্ত্রী গতকাল শনিবার সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কাব ক্যাম্পুরীর উদ্বোধনকালে এ কথা বলেন। গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাকে শুরু হয়েছে ছয় দিনব্যাপী অষ্টম জাতীয় কাব ক্যাম্পুরি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা চাই আমাদের প্রতিটি প্রাইমারি স্কুল থেকেই স্কাউটের কার্যক্রম শুরু হোক। তাতে ছেলে-মেয়েদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস গড়ে উঠবে। এই অভ্যাস তাদের চরিত্র গঠনে অবদান রাখবে। কারণ, দেশ সম্পর্কে তার ভালোবাসা বাড়বে। মানুষের প্রতি দায়বদ্ধতা ও ভালোবাসা বাড়বে। পরবর্তীকালে অভিভাবক থেকে শুরু করে প্রতিবেশীর প্রতি, দেশের প্রতি, জাতির প্রতি দায়বদ্ধতা পালনের প্রচেষ্টা চালাবে। এই মানসিকতা গড়ে উঠলে আমাদের দেশ এগিয়ে যাবে, দেশের মানুষ আরও উন্নত হবে।
তিনি আরো বলেন, আজকে যারা শিশু, আগামী দিনে তারাই এ দেশের কর্ণধার হবে। তাদের ওপরই আমরা দায়িত্ব দিয়ে যাচ্ছি। আমি এটাই চাই, জ্ঞান-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষা নিয়ে যুগোপযোগী হয়ে দেশকে তোমরা উন্নত করবে, সমৃদ্ধিশালী করবে। আমরা তো বুড়ো হয়ে গেছি। এখনতো আমি বুড়ি দাদু হয়ে গেছি। কাজেই আমাদের ভবিষ্যৎ তোমরা, স্কাউটরা, বাচ্চারা। তোমাদের হাতেই তো দেশকে রেখে যাবো। তোমাদের হাতেই দেশটাকে দিয়ে যাবো, তোমরাই আগামী দিনে দেশকে পরিচালনা করবে।
বাংলাদেশ স্কাউটসের উদ্যোগে গাজীপুরে জাতীয় স্কাউট প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে অষ্টম জাতীয় কাব ক্যাম্পুরি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। কাব স্কাউটদের সবচেয়ে বড় শিক্ষামূলক এ সমাবেশে সারাদেশের সকল উপজেলা থেকে আট হাজার স্কাউট ও কর্মকর্তা অংশ নিয়েছেন।
শেখ হাসিনা বলেন, আজকে যারা শিশু, ভবিষ্যতে তোমরাইতো জাতির কর্ণধার হবে। তোমাদের মধ্যে থেকেই তো কেউ প্রধানমন্ত্রী হবে, মন্ত্রী হবে, সচিব, বিজ্ঞানী, কৃষিবিদ হবে। সমাজের বিভিন্ন জায়গায় স্থান করে নেবে। দেশকে ভালোবাসবে, মানুষকে ভালোবাসবে, মানুষের জন্য কাজ করবে, মানুষের জন্য যে কোনো ত্যাগ স্বীকারে সবসময় প্রস্তুত থাকবে। তবেই দেখবে এ দেশ উন্নত হবে, সমৃদ্ধশালী হবে।
শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা চাই আমাদের এ দেশ শতভাগ শিক্ষিত হবে। শিক্ষিত জাতি পারে একটা দেশকে উন্নত সমৃদ্ধ করতে। সবাইকে আত্মবিশ্বাসী হওয়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, চরিত্রবান হতে হবে, সৎ হতে হবে। দৃঢ়চেতা হতে হবে। যে কোনো কাজে সবসময় আত্মবিশ্বাস নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। আত্মবিশ্বাসী হয়ে সব কিছু জয় করতে হবে।
আমরা যুদ্ধ করে বিজয় অর্জনকারী জাতি। বঙ্গবন্ধু বলেছেন, আমাদের কেউ ‘দাবায়ে’ রাখতে পারবে না। বিজয়ী জাতি সবসময় মাথা উঁচু করে চলে। আমাদের এই আত্মবিশ্বাস নিয়ে এখন থেকে নিজেদের গড়ে তুলতে হবে। আমরা কখনো পিছু হটবো না। পিছু হটা আমাদের চরিত্রে নেই।
ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়ে তুলতে সরকার কাজ করছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা যতটুকু পারি দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবো। আগামী দিনে যারা জাতির কর্ণধার হবে, তাদের ওপর দেশকে এগিয়ে নেওয়ার দায়িত্ব দিয়ে যাবো। সোনার বাংলা গড়ার সোনার ছেলেমেয়ে হিসেবেই নিজেদের সেভাবে গড়ে তুলবে।
জাতীয় কাব স্কাউট ক্যাম্পুরিতে অংশগ্রহণকারীদের উদ্দেশ্যে শেখ হাসিনা বলেন, যারা কাব ক্যাম্পুরিতে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছে তারা সৌভাগ্যবান। ক্যাম্পের অভিজ্ঞতা, একসঙ্গে সব থাকা, বিভিন্ন কারিকুলামে যোগদান করা, এটা কিন্তু অত্যন্ত কাজের।দুর্যোগসহ বিভিন্ন জাতীয় প্রয়োজনে স্কাউটদের দায়িত্বশীল ভূমিকার প্রশংসা করেন শেখ হাসিনা।
স্কাউটদের জন্য সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় কাবিং সম্প্রসারণ প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে ‘হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট থ্রো স্কাউটিং’ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এছাড়া বাংলাদেশ স্কাউটিং সম্প্রসারণ ও স্কাউট ভবন নির্মাণ প্রকল্পটি আমাদের কাছে এখনও আসেনি। এলে অবশ্যই অনুমোদন করা হবে। আমি চাই দ্রুত আসুক, অনুমোদন করা হবে। এসময় প্রতিটি বিভাগে ক্যাম্প করার জায়গা সুনির্দিষ্ট করারও নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ৮৫১ জন স্কাউটের মাঝে ‘শাপলা কাব অ্যাওর্য়াড’ প্রদান করা হয়। যার মধ্যে সবার প্রতিনিধি হিসেবে গণভবনে উপস্থিত ৭১ জনের হাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুরস্কার তুলে দেন।অনুষ্ঠানে গাজীপুরে ক্যাম্পুরি ময়দান থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গণভবনের সঙ্গে সংযুক্ত ছিলেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, ত্রাণ ও দুযোর্গ ব্যবস্থাপনামন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি। প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অংশগ্রহণকারী কয়েকজন শিশুর সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। গণভবনে উপস্থিত থেকে অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ স্কাউটসের সভাপতি, মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ, বাংলাদেশ স্কাউটসের প্রধান জাতীয় কমিশনার স্বরাষ্ট্র সচিব মোজাম্মেলন হক খান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।