Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অবশেষে লজ্জা ঢাকতে চটে মোড়ানো হলো

পাকসেনার মতো মুক্তিযোদ্ধার ভাস্কর্য

নওগাঁ জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৪ মার্চ, ২০১৮, ১২:০০ এএম

নওগাঁর মান্দা উপজেলার সদর প্রসাদপুর বাজারের চৌরাস্তা মোড়ে নব নির্মিত গোলচত্বরে পাকসেনার আদলে মুক্তিযোদ্ধার ভাস্কর্য অবশেষে লজ্জা ঢাকতে গত বৃহস্পতিবার নওগাঁ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাড. ফজলে রাব্বী বকুর উপস্থিতিতে চটের বস্তা দিয়ে ঢেকে দেওয়া হলো। এছাড়া নতুনভাবে আবার সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েেেছ। তাতে লেখা হয়েছে নির্মাণ কাজ চলছে।
এর আগে গত ৪/৫ দিন ধরে ভাস্কর্যটি নিয়ে প্রথম ফেসবুকের একটি মন্তব্য কে কেন্দ্র করে চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরে বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকা , অনলাইন পত্রিকায় ব্যাপক লেখালেখি শুরু হয়। ব্যাপক প্রচারের ফলে ঘটনাটি নাটকীয়ভাবে অন্য দিকে মোড় নিয়ে তোলপাড়া শুরু হলে, টনক নড়ে জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষের।
জানা গেছে, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি এডিপির অর্থায়নে ১৫ লাখ ব্যায়ে ভাস্কর্যটি নির্মাণ করছে নওগাঁ জেলা পরিষদ। ইতোমধ্যে গোলচত্বরের ওপরের পিলারের দুইধারে দুটি ভাস্কর্য স্থাপন করা হয়েছে দুটি। মাঝখানে আরও একটি বিশালাকার ভাস্কর্য স্থাপন করা হবে বলে জানা গেছে। বেষ্টনির মধ্যে পিলারের ওপর উত্তর-দক্ষিণ করে দুটি স্থাপন করা আছে। ভাস্কর্য দুটি পাকিস্থানী সেনাদের আদলে তৈরি। কোমরে বাউন্ডলি, পরনে পাকিস্তানি পোশাক ও মাথায় হেলমেট। একজন দু’হাতে বন্দুক উঁচু করে মাথার ওপর তুলে ধরেছে, অপরজন বন্দুক আড়াআড়িভাবে ধরে আছে।
ফেসবুকে সুলতান মাহমুদ রায়হান তার আইডিতে লিখেছেন,‘স্বাধীনতার মাসে এ ধরনের প্রতিকৃতি মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকবে এটা মেনে নেওয়া যায় না। ভুল যাদেরই হোক সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আগামী ২৬ মার্চের আগেই ভাস্কর্যটি অপসারণ করতে হবে’। না হলে শহীদ মিনারে গণজমায়েত ও বিক্ষোভ মিছিল, মানব বন্ধন সহ নানা কর্মসুচি পালন করা হবে।
সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোজাম্মেল হক জানান, আসলে এটি মুক্তিযোদ্ধার আদলে নির্মিত হয়নি। পাকসেনাদের আদলে এ ভাস্কযর্টি নির্মিত হয়েছে। একটি স্বাধীন দেশে তাদের মূর্তি এভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেওয়া যায় না। বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারণ বাংলাদেশীদের জন্য এটি অত্যন্ত কষ্টের বিষয়। আমি এ ভাস্কর্যের নির্মাণকারী কর্তৃপক্ষের গাফলতির জন্য তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। তিনি ভাস্কর্যটি দ্রুত অপসারণের দাবি করেন ।
উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সরদার জসিম উদ্দিন জানান, প্রসাদপুর বাজারের চৌরাস্তায় নব নির্মিত গোলচত্বরে পাকসেনাদের আদলের ভাস্কর্যটি কোন কারণে স্থাপিত হলো তা আমার জ্ঞানে বুঝে আসে না। ফেসবুকে ও আপনাদের (সাংবাদিকদের) কল্যাণে ব্যাপক প্রচারের ফলে জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ ভাস্কর্যটি চটের বস্তাায় ঢেকে দিতে বাধ্য হয়েছে। অচিরেই সেখানে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ভাস্কর্য স্থাপন করা হবে বলেও তিনি জানান।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খন্দকার মুশফিকুর রহমান জানান, তার আসার আগে ভাস্কর্যটি জেলা পরিষদের অর্থায়নে নির্মিত হয়েছে। এ কাজের জন্য উপজেলা পরিষদ কোনভাবে সাথে ছিল না বলে আমার বিশ্বাস। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তপক্ষকে অবহিত করা হচ্ছে।
ভাস্কর্যটি চটের বস্তায় ঢেকে দেয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে নওগাঁ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাড. ফজলে রাব্বী বকু জানান, নির্মাণ কাজ এখনও শেষ হয়ে যায়নি। কাজ শেষে সব ঠিক হয়ে যাবে।



 

Show all comments
  • Mohi Uddin Helal ২৪ মার্চ, ২০১৮, ১:৪৬ এএম says : 0
    kisu bolar nai
    Total Reply(0) Reply
  • MD.MONIRUL ISLAM ২৮ মার্চ, ২০১৮, ৭:১৫ এএম says : 0
    VERY GOOD
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পাকসেনা
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ