পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সিরাজগঞ্জ থেকে সৈয়দ শামীম শিরাজী : সিরাজগঞ্জের যমুনার দূর্গম চরে রাখাল, দুগ্ধ ব্যবসায়ী ও ঘোষালরা মহিষের বাথান গড়ে তুলেছেন। চরে গো-খাদ্য অর্থাৎ তৃণভূমি থাকায় এ কাজ করছেন তারা। এতে স্বাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি বাড়তি আয়ের ব্যবস্থাও হচ্ছে তাদের। সিরাজগঞ্জ-পাবনা, টাঙ্গাইল জামালপুর, বগুড়াসহ বিভিন্ন চরঞ্চলের এ পশু পালন উত্তর উরত্তর বাড়ছে। সমৃদ্ধ হচ্ছে দেশের অর্থনীতি।
ভোর থেকে শুরু হয় রাখালদের কর্মযজ্ঞ। চরে রাখালদের থাকার তেমন ভালো ব্যবস্থা নেই। তারা ঝুপড়ি ঘর তুলে সেখানে কোনও রকমে গাদাগাদি করে থাকছেন। আড়াইশ’ মহিষের বাথানের পাশেই ১৫/২০ জন রাখাল ঝুপড়িতে পেতেছেন তাদের সংসার।
মহিষের দুধ দোয়ানো, নৌকা করে তা টাঙ্গাইল মিল্কভিটায় পাঠানো এবং মহিষগুলোকে মাঠে চরানো। আর বিকালে আবারও মহিষ চরানো। এর মাঝে কোনও এক ফাঁকে রাখালরা দুপুরের খাবার খেয়ে নেন। রাখালদের সঙ্গে মহাজনের নিয়োগকৃত ঘোষালরাও থাকেন।
সরেজমিনে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার দুর্গম শিমলা চরে গিয়ে দেখা গেলো রাখালদের মহাকর্মযজ্ঞ। যমুনার তীর ঘেঁষে অস্থায়ীভাবে গড়া বাথানে রাখালরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। কথা হয় বগুড়া জেলার গাবতলী উপজেলার দুর্গাহাটা গ্রামের রাখাল সুধীর ঘোষ, অধির ঘোষ, গোবিন্দ ঘোষ, শ্রীদাম ঘোষ, বিপ্লব ঘোষ, কানু ঘোষ, রাম ঘোষ, জামালপুরের বালিয়াঝারী গ্রামের তোষা ঘোষ, সিরাজগঞ্জের সদর উপজেলার গটিয়ার চরের আব্দুর রাজ্জাক, চর খারুয়ার বাবু প্রামানিকের সঙ্গে।
রাখাল তোষা ঘোষ বলেন, ‘সিরাজগঞ্জ বগুড়া ও জামালপুরের ১০/১৫ জন চাষীর মহিষ একত্রিত করে বাথান করা হয়েছে। শুকনো মৌসুমের ৮/৯ মাস যমুনার চরে মহিষ পালন করা হয়। বাকি তিন থেকে চার মাস বাড়িতেই মহিষ পালন করা হয়।’
গটিয়ার চরের আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘এ বাথানে আমার নিজেরও ১৮টি মহিষ রয়েছে। এছাড়া গরুও আছে ৫টি। আমরা মহিষ চাষিরা একত্রিত হয়ে চরাঞ্চলের জমির পরিত্যক্ত ফসল প্রতি বিঘা ২ থেকে তিন হাজার টাকায় কিনে গরু ও মহিষগুলোকে খেতে দেই।’
গাবতলীর মহিষাবান গ্রামের রশিদ প্রামানিক বলেন, ‘আমাদের বাথানে প্রায় আড়াইশ’ মহিষ ও এক’শ গরু রয়েছে। বঙ্গবন্ধু সেতু থেকে গাইবান্ধা ফুলছড়ি ঘাট পর্যন্ত প্রায় ২০/২৫টি বাথান রয়েছে।
গাবতলীর দুর্গাহাটা গ্রামের লিটন ঘোষ জানান, প্রতিটি মহিষ দু’বেলায় ৬ থেকে ১০ কেজি পর্যন্ত দুধ দেয়। প্রতি কেজি দুধ ফ্যাট অনুযায়ী ৫৫ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি করা হয়। টাঙ্গাইল মিল্কভিটার নৌকা এসে এসব দুধ নিয়ে যায়।
দুগ্ধ খামারিরা জানান, এখানে কর্মরতর রাখালদের ৮/১০ হাজার টাকা মাসিক বেতন দিতে হয়। এছাড়া গরু-মহিষের খাদ্যের জন্য পরিত্যক্ত ফসল কেনা ও রাখালদের খাবার বাবদ মাসে ৮/১০ হাজার টাকা খরচ হয়। প্রতিটি গরু-মহিষ থেকে মাসে ২০০ কেজি দুধ আসে। যার মূল্য প্রায় ১১ হাজার টাকা। ৮/১০টি মহিষ থেকে খরচ বাদে মাসিক আয় আসে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা। বছরে প্রতিটি মহিষ একটি করে বাচ্চা দেয়। মহিষ পালন করেই তারা সাবলম্বী হয়েছেন।
এ বিষয়ে সরকারের সার্বিক পৃষ্ঠপোষকতা পেলে অদূর ভবিষ্যতে দেশের অর্থনীতি আরো চাঙ্গা হবে বলে অভিজ্ঞ মহল তাদের সুচিন্তিত মতামত ব্যক্ত করেছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।