পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
এ.টি.এম. রফিক, খুলনা থেকে : কিছুতেই থামছে না বিশ্ব ঐতিহ্যের সুন্দরবনে রয়েল বেঙ্গল টাইগার হত্যা। একের পর এক বাঘের চামড়া উদ্ধারের পরও বাঘ হত্যা বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারছে না বনবিভাগ। আর বাঘের চাড়মা ও অঙ্গ-প্রতঙ্গ পাচারকারী চক্রের রাঘব বোয়ালরা বরাবরই রয়ে যাচ্ছে ধরা-ছোঁয়ার বাইরেই। ফলে সর্বশেষ বাঘ গননার পর গত ৮ মাসে ৪টি বাঘের চামড়া উদ্ধারের ঘটনা নতুন করে ভাবিয়ে তুলেছে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের অস্তিত্ব রক্ষার বিষয়টি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, গেল বছরের ৯ আগস্ট খুলনার কয়রা উপজেলার দক্ষিণ বেদকাশি থেকে ৩টি বাঘের চামড়াসহ ৬ চোরা শিকারিকে আটক করে পুলিশ। সে ঘটনার ৮ মাস পার না থেকেই গত রবিবার আবারও কয়রা উপজেলার সাতহালিয়া গ্রাম থেকে একটি বাঘের চামড়াসহ দুই পাচারকারীকে আটক করেছে র্যাব-৬। এরআগে গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে খুলনা মহানগরীর নতুন বাজার এলাকায় একটি মাছের ট্রলার থেকে বিপুল পরিমাণ বাঘের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গসহ দু’জনকে আটক করা হয়। এসব ঘটনায় দু’একজন ধরা পড়লেও রাঘব বোয়ালরা রয়ে গেছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে। ফলে বিশ্বঐতিহ্য সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগারের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা এখন প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, বাঘের চামড়া ও অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ পাচারের ঘটনায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বহিরাগতরাই জড়িত। এসব বহিরাগতদের অনেকেই রয়েছেন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ধরা ছোঁয়ার বাইরে। গত বছরের ৯ আগস্ট বাঘের ৩টি চামড়া উদ্ধারের পর আটক ৬ জন পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হলেও এ মামলার মূল আসামী বরিশালের মজনু পলাতক রয়েছে। স¤প্রতি উদ্ধার হওয়া বাঘের চামড়ার সাথে দু’জনকে আটক করা হয়েছে তাদের একজন খুলনা শহরের সোনাডাঙ্গা ও অন্যজন ঢাকার কেরানিগঞ্জের বাসিন্দা।
কয়রা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হরেন্দ্রনাথ সরকার বলেন, বাঘের চামড়া পাচার কাজে বহিরাগতরা জড়িত থাকলেও মূলত বাঘ শিকারে সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকার চিহ্নিত একটি চক্র জড়িত। এরা বনে দস্যুবৃত্তির সাথে বর্তমানে বাঘ শিকারে জড়িয়ে পড়েছে। এ চক্রটিকে ধরতে পুলিশের প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে বলে তিনি জানান। এদিকে পর পর এভাবে বাঘের চামড়া উদ্ধারে সুন্দরবনে বাঘের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বন ও প্রাণি বিশেষজ্ঞরা।
সেফ্ দ্যা সুন্দরবনের প্রেসিডেন্ট ড. ফরিদুল ইসলাম বলেন, সুন্দরবন থেকে উদ্বেগজনকহারে বাঘ কমে যাওয়ার পিছনে প্রধান কারণ চোরা শিকারিদের তৎপরতা। বিশেষ করে বনদস্যুরাই এর প্রধান কারণ। এ জন্য বাঘ রক্ষায় প্রথমে যে কাজটি করতে হবে তা হলো সুন্দরবন থেকে বনদস্যু নির্মূল করা।
বন ও প্রাণি বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, বর্তমান জরিপ অনুযায়ী সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে বাঘের সংখ্যা এসে দাঁড়িয়েছে মাত্র ১০৬টি। এখনই চোরা শিকারিদের অপতৎপরতা রোধে ব্যর্থ হলে সংখ্যাটি অচিরেই শূন্যেও কোঠায় পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে।
বনবিভাগ সূত্র জানায়, ২০০১ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত গ্রামবাসীর পিটুনি, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও চোরা শিকারিদের হাতে ৩৪টি বাঘের মৃত্যু হয়েছে। বনবিভাগের বাঘ জরিপের ২০০৪ সালের ফলাফল অনুযায়ী সুন্দরবনে ৪৪০টি বাঘ থাকার দাবি করা হয়। আর সর্বশেষ ২০১৫ সালের জরিপে সে সংখ্যা ১০৬। অর্থাৎ এক দশকের ব্যবধানে বনবিভাগের হিসাব অনুযায়ী সুন্দরবনে বাঘ কমেছে ২৩৪টি। অথচ এ সময় পর্যন্ত বনবিভাগের কাছে বিভিন্ন কারনে ৩৪টি বাঘের মৃত্যুর তথ্য রয়েছে।
তবে বাঘ রক্ষায় কার্যকর বিভিন্ন পদক্ষেপ বনবিভাগ হাতে নিয়েছে বলে দাবি করেছেন খুলনা বনাঞ্চল সংরক্ষক মোঃ জহিরউদ্দিন আহমদ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।