পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
হাসান সোহেল : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ ও পদোন্নতি বিধিমালাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে এক কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দিচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আজ মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬৯তম সভার আলোচ্য সূচিতে তিন কর্মকর্তার অতিরিক্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক পদে পদোন্নতির বিষয়ে উল্লেখ রয়েছে। ওই তিন কর্মকর্তার এক জনের রয়েছে শিক্ষাগত যোগ্যতার অভাব। আব্দুল হাকিম নামের ওই কর্মকর্তার শিক্ষা জীবনে রয়েছে ¯œাতক (পাশ) তৃতীয় বিভাগ।
বিএসএমএমইউ’র রেজিস্টার অফিসে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধিমালা অনুযায়ী প্রথম শ্রেণীর চাকরিতে শিক্ষা জীবনে তৃতীয় বিভাগ পাওয়া কোন প্রার্থী সরাসরি নিয়োগ পাবেন না। অথচ আব্দুল হাকিমকে এসব নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে ২০০০ সালে আরো ৫ জনের সঙ্গে তৎকালীন প্রশাসন সরসারি প্রথম শ্রেণীর সেকশন অফিসার পদে নিয়োগ দেয়। এরপর ২০০৯-এ নতুন প্রশাসন দায়িত্বগ্রহনের পর ডেপুটি রেজিস্টার পদে পদোন্নতি পান। বর্তমান প্রশাসন দায়িত্ব গ্রহনের পরপরই নিয়ম ভেঙে আব্দুল হাকিমকে আবারো অতিরিক্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (চলতি দায়িত্ব) হিসেবে পদোন্নতি দেন। যা এখন স্থায়ী করার চেষ্টা। অথচ নিয়ম অনুযায়ীÑ শিক্ষা জীবনে তৃতীয় বিভাগ পাওয়া কোন প্রার্থী সমগ্র চাকরি জীবনে একবার পদোন্নতি পাবে। যদিও ইতোমধ্যে আব্দুল হাকিম দু’বার পদোন্নতি পেয়েছেন। আবারও এই আব্দুল হাকিমকে পদোন্নতি দিতে সিন্ডিকেট সভায় উঠানো হচ্ছে।
প্রশাসনের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, ক্ষমতার অপব্যবহার করে আরো কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬৭ তম সিন্ডিকেট সভায় আব্দুল হাকিমের পদোন্নতির প্রস্তাব দেওয়া হয়। এ সময় কয়েকজন সিন্ডিকেট সদস্য এই কর্মকর্তার শিক্ষা জীবনে তৃতীয় শ্রেণী থাকায় তাদের পদোন্নতিতে অসম্মতি জানান। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় গ্র্যান্ট কমিশনের (ইউজিসি) কাছে গেলেও তারা পদোন্নতিতে নিষেধ করে। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন উপদেষ্টার কাছে গেলেও আব্দুল হাকিমকে পদোন্নতি প্রদানে নিষেধ করা হয়। পাশাপাশি যদি পদোন্নতি দিতে হয় তবেÑ নিয়োগ ও পদোন্নতি নীতিমালার ৬ এর ৭ উপধারা যদি সিন্ডিকেট বাতিল বা সংশোধন করে তাহলেই পদোন্নতি দেওয়া সম্ভব বলে জানানো হয়। ওই ধারায় বলা আছেÑ কোনো কর্মচারী (গ্রেড ৯-৩ পদের জন্য) নির্ধারিত শিক্ষাগত যোগ্যতার শর্ত পূরণ না করে চাকরিতে যোগদান পূর্বক কর্মরত থাকলে সমগ্র চাকরি জীবনে তিনি একবারই পদোন্নয়নের সুযোগ পাবেন। আব্দুল হাকিম বর্তমানে গ্রেড-৫-এ আছেন। সেখান থেকে গ্রেড-৪-এ পদোন্নতির জন্য মনোনয়ন পেয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দায়িত্বশীল সুত্র জানায়, কোন পরীক্ষায় তৃতীয় শ্রেণী প্রাপ্ত ব্যক্তি সরাসরি প্রথম শ্রেণীর পদে যোগদান করতে পারে না।
শিক্ষা জীবনে তৃতীয় শ্রেণীর বিষয়ে জানতে চাইলে মো. আব্দুল হাকিম বলেন, ২০০০ সালের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী যোগ্য হিসেবে বিবেচিত হওয়ায় তিনি চাকরি ও পদোন্নতি পেয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সেকশনের কয়েকজন সেকশন অফিসার জানান, এই কর্মকর্তাকে চাকরি দেওয়া থেকে শুরু করে একের পর এক পদোন্নতি প্রদান করেছে বিগত চারটি প্রশাসন। সর্বশেষ পদোন্নতি অতিরিক্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (চলতি দায়িত্ব) অত্যান্ত গোপনে করা হয়েছে। এমনকি এ সংক্রান্ত কোন চিঠিও কোন বিভাগে প্রেরণ করা হয়নি। অথচ যা প্রত্যেক দফতরে পাঠানোর কথা। এই পদে আব্দুল হাকিম দায়িত্বগ্রহণ করেছেন হাতে হাতে অদেশ করিয়ে নিয়ে।
এর আগে ডেপুটি পরিচালক হওয়ার সময়ও প্রধানমন্ত্রীর এক আত্মীয়ের নাম ভাঙ্গিয়ে সাবেক ভিসি প্রফেসর ডা. প্রাণ গোপালের কাছ থেকে পদোন্নতি নেন। একইভাবে বর্তমান ভিসিকে ম্যানেজ করে অতিরিক্ত পরিচালক ভারপ্রাপ্ত বনে গেছেন। শুধু পদোন্নতিই নয়; প্রো-ভিসি (প্রশাসন) প্রফেসর ডা. সারফুদ্দিন আহমেদকে ম্যানেজ করে বাগিয়ে নিয়েছেন ব্যাক্তিগত গাড়ীও। অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালা অনুযায়ী ডেপুটি পরিচালক বা অতিরিক্ত পরিচালক পদের কারোরই কোন গাড়ী পাওয়ার কথা নয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি (শিক্ষা) প্রফেসর ডা. সাহানা আখতার রহমান ইনকিলাবকে বলেন, সভার আলোচ্য সূচিতে আমি পদোন্নতির বিষয়টি দেখেছি। ওই কর্মকর্তার বিষয়ে বিস্তারিত পাইনি। আমি এই পদে নতুন যোগদান করেছি। এখনও অনেক বিষয়ে ওয়াকিবহাল নই। তারপরও কোন অনিয়ম হতে দেব না বলে উল্লেখ করেন তিনি। ##
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।