Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

দেশনেত্রীকে নিয়েই নির্বাচনে যাবো

জাপা’র (জাফর) সভায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১০ মার্চ, ২০১৮, ১২:০০ এএম

বেগম খালেদা জিয়া ছাড়া ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নির্বাচনের অপচেষ্টা দুঃস্বপ্ন থেকে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘সরকারের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, দেশনেত্রী খালেদা জিয়া, বিএনপি ও ২০ দলকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখা। যাতে করে গণবিচ্ছিন্ন আওয়ামী লীগ বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় আবারও ক্ষমতায় যেতে পারে। খালেদা জিয়াকে বাইরে রেখে যারা নির্বাচনের কথা ভাববে, তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে না। দেশনেত্রীকে অবশ্যই মুক্তি দিতে হবে এবং দেশনেত্রীকে নিয়েই আমরা নির্বাচনে যাব। ৫ জানুয়ারীর মতো নির্বাচন নামের প্রহসন এদেশে আর চলবে না। গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবের দ্বিতীয় তলায় খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরীক জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। ‘বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও অবাধ-নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি’তে এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। বিএনপির প্রতিটি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচীতে বাধা দেয়া হচ্ছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল আরো বলেন, আপনারা বললেন, আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বিশ্বাস করি। সরকার দাবি করছে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধ দেয়া হবে না। অথচ এমন কোনো কর্মসূচি নাই, যেখানে আপনারা (সরকার) বাধা দেননি। গণতান্ত্রিক দেশে এটা জনগণের সঙ্গে প্রতারণা। এই প্রতারণা করে আপনারা (আওয়ামী লীগ) বেশি দিন ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবেন না।
জাতীয় পার্টি (জাফর) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ড. টি আই এম ফজলে রাব্বি চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় অন্যানের মধ্যে বক্তৃতা করেন দলের মহাসচিব মোস্তফা জামাল হায়দার, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির সভাপতি অধ্যাপিকা রেহানা প্রধান, ইসলামী ঐক্য জোটের চেয়ারম্যান এম এ রকিব, জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য আবু আব্বাস, জাগপা সাধারণ সম্পাদক লুৎপর রহমান, ন্যাপের মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভুইয়া, ছাত্রনেতা এস এম শামীম প্রমূখ।
সরকারের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, গণতান্ত্রিক নির্বাচনের জনগনের ভোটের মাধ্যমে যদি ক্ষমতায় যদি যেতে চান, তাহলে অবশ্যই সমস্ত রাজবন্দীদের মুক্তি দিতে হবে। খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে। জুলুম নির্যাতন বন্ধ করে জনগণের সমন্ত অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। মিথ্যা মামলা সবগুলো প্রত্যাহার করতে হবে। সবার অংশগ্রহণের নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করে একটা অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে হবে। যে নির্বাচন পরিচালনা করবে একটি নিরপেক্ষ সরকার। তাহলেই আপনাদের ক্ষমতায় যাওয়ার সম্ভাবনা আছে, অন্যথায় ক্ষমতায় যাওয়ার সম্ভাবনা নেই। চীরদিন ক্ষমতায় থাকার জন্য সংবিধান কেটে ছেঁটে নিজেদের উপযোগী করে তৈরি করেছে। চিরকাল ক্ষমতায় থাকার বাকশালী চিন্তার দিন শেষ হয়ে গেছে। ‘কোনো রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্বাচনে আনতে আমরা নতুন করে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করবো না’ প্রধান নির্বাচন কমিশনের এ বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সরকারের যে মূল এজেন্ডা, সরকার যা চাইছে, সেই কথাটা বলেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশন। আপনারা (ইসি) করবেন না, সেটা আমরা জানি। আপনাদের (ইসি) ওখানে বসানো হয়েছে আওয়ামী লীগকে আবার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা নিয়ে আসার জন্য। এটা আমরা বলেই যাচ্ছি। এর মধ্যে আমাদের কোনো রাগ নেই।
খালেদা জিয়ার সাজা প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলাটি সম্পূর্ণ জাল নথির উপর প্রতিষ্ঠিত। কারণ তাদের (সরকার) মূল উদ্দেশ্য খালেদা জিয়া, বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখা। যাতে করে আওয়ামী লীগ জনগণের ভোট ছাড়াই নির্বাচন নামের প্রহসনের মাধ্যমে আবারও ক্ষমতায় যেতে পারে। এ ধরনের মামলায় সাজা হওয়ার পরেই জামিন পাওয়া ন্যুনতম নাগরিক অধিকার। সেখানেও তারা হস্তক্ষেপ করেছে। সুতরাং সেই অধিকার থেকে খালেদা জিয়া বঞ্চিত হয়েছেন।
দেশে কোথায় গণতন্ত্র- এ প্রশ্ন রেখে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা গণতন্ত্রের কথা বলছি। কিন্তু সেই গণতন্ত্র কোথায়। অধিকার কোথায়? আপনারা (আওয়ামী লীগ) ৭ মার্চ পালন করলেন। খুব ভালো কথা। সরকারি টাকা খরচ করে, বিলবোর্ড লাগিয়ে এবং ঢাকার শহর বন্ধ করে ৭ মার্চ পালন করলেন। তাহলে আমাদের সমাবেশ করতে দিচ্ছেন না কেনো? আমাদের সভাগুলোতে পুলিশকে লেলিয়ে দিয়ে বাধা দিচ্ছেন কেনো? আপনারা বলছেন, শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা দিবেন না। আমাদের প্রত্যেকটা কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ। কিন্তু বাধা দেয়া হচ্ছে। আমাদেরকে অফিস থেকে বের হতে দেন না। আর বলবেন, আপনারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেন। এটা জনগণের সাথে প্রতারণা। প্রতারণা করে বেশিদিন ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবেন না। ড. টিআইএম ফজলে রাব্বী চৌধুরী বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে বাদ দিয়ে দেশে কোনো নির্বাচন হতে দেয়া হবে না। তাকে বেশিদিন কারাগারে আটক করেও রাখা যাবে না। মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, অবিলম্বে বেগম জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে। কোনো ষড়যন্ত্র করেই বেগম জিয়াকে বন্দী করে রাখা যাবে না।



 

Show all comments
  • নজরুল ১০ মার্চ, ২০১৮, ৫:৩২ এএম says : 0
    বলার সাথে সাথে কাজেও দেখাতে হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • আব্বাস ১০ মার্চ, ২০১৮, ৫:০৪ পিএম says : 0
    ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমেই সেটা সম্ভব
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: দেশনেত্রী
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ