পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চট্টগ্রাম ব্যুরো ঃ কোন পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই গত বুধবার থেকে চিকিৎসকদের অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটে চট্টগ্রামে রোগীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সীমাহীন। আকস্মিক ধর্মঘটের চতুর্থ দিনে গতকালও (শনিবার) বন্দরনগরী চট্টগ্রামের বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডাক্তারদের চেম্বার ছিল বন্ধ। মূল গেইটে বিএমএ’র কর্মবিরতির ব্যানার টানানো থাকে। এ অবস্থায় নগরীসহ বৃহত্তর চট্টগ্রাম অঞ্চল থেকে জরুরী চিকিৎসার জন্য অগণিত রোগী এবং তাদের স্বজনরা অবর্ণনীয় দুর্ভোগে পড়েন। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জেনারেল হাসপাতালে রোগীর উপচে পড়া ভিড়ে চিকিৎসায় বেসামাল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। জরুরী বিভাগে ও আউটডোরে দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে অসংখ্য রোগীকে। এদিকে গতকাল বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন (বিএমএ) চট্টগ্রাম শাখার নেতৃবৃন্দ ধর্মঘট চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। এতে করে ডাক্তারদের বেসরকারি ক্লিনিক ও চেম্বারে ফেরার সম্ভাবনা উবে গেছে। ৩ জন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় অবহেলা ও ভুল চিকিৎসার অভিযোগে রোগীর মৃত্যুর বিষয়ে স্বজনদের দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে বিএমএ’র ব্যানারে চিকিৎসকরা বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও চেম্বারে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট চালিয়ে আসছেন।
গতকাল চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে করে কর্মসূচি নিয়ে তাদের অবস্থানের কথা জানান আন্দোলনরত চিকিৎসকদের সংগঠন বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের (বিএমএ) চট্টগ্রাম শাখার নেতৃবৃন্দ। মামলা নিয়ে সম্মানজনক সমাধান হলে বেসরকারি হাসপাতাল ও ব্যক্তিগত চেম্বারে রোগী দেখা বন্ধের কর্মসূচি থেকে সরে আসবেন বলে জানান আন্দোলনরত চিকিৎসকরা। বিএমএ চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক ডা. মোহাম্মদ শরীফ সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনের পক্ষে নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করে বলেন, সম্মানজনক অবস্থা আসলে আমরা আজকেই কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেবো। উদ্যোগ নেয়া হোক। সম্মানজনক অবস্থা কি সেটা সুনির্দিষ্ট করে না বললেও মামলা প্রত্যাহারের দিকেই ইঙ্গিত দেন তিনি।
গত ১০ জানুয়ারি বেসরকারি হাসপাতাল সার্জিস্কোপে সন্তান জন্ম দিয়ে মারা যায় প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি’র ভাইঝি মেহেরুন্নেসা রীমা। অবহেলায় মৃত্যু হয়েছে অভিযোগ এনে ওইদিন রাতে হাসপাতাল ভাঙচুর করে তার স্বজনেরা। এ ঘটনায় স্বজনরা বিভিন্ন প্রতিবাদের পর গত ১৯ জানুয়ারি চমেক হাসপাতালের গাইনি বিভাগের অধ্যাপিকা শামীমা সিদ্দিকী রোজী ও তার স্বামী অধ্যাপক ডা. মাহবুবুল আলমের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ করলে পাঁচলাইশ থানার ওসিকে তা মামলা হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেয়। মামলার পরদিন বুধবার থেকেই চট্টগ্রামে সকলপ্রকার ব্যক্তিগত চেম্বার ও বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা প্রদান বন্ধ করে দেয় চিকিৎসকদের সংগঠনটি।
সংবাদ সম্মেলনে বিএমএ’র সাধারণ সম্পাদক ডা. শরীফ গত ১০ জানুয়ারি সার্জিস্কোপ হাসপাতালে ভর্তি হওয়া মন্ত্রীর ভাইঝি রীমার তখনকার পরিস্থিতি এবং ডা. শামীমা সিদ্দিকী রোজীর সে সময়ের নেয়া ব্যবস্থাগুলো উল্লেখ করেন। চিকিৎসকরা কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নন উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা সর্বোচ্চ মেধা-শ্রম দিয়ে একজন রোগী সুস্থ করে তোলার চেষ্টা করি। কিন্তু কোন কিছুরই সফলতার হার শতভাগ নয়। এর জের ধরে হাসপাতাল ভাঙচুর, চিকিৎসকদের নিরাপত্তাহীনতায় ফেলে দেয়া অনাকাক্সিক্ষত।
নিরাপত্তাহীনতার কথা তুলে ধরে ডা. শরীফ বলেন, ব্যক্তিগত চেম্বারে রোগী দেখার ক্ষেত্রে আমাদের এখনও অস্বস্তি হচ্ছে। পেশা ও চিকিৎসকদের সম্মান রাখার স্বার্থে আমরা বেসরকারি হাসপাতাল ও ব্যক্তিগত চেম্বার বন্ধ রাখার ঘোষণা দিতে বাধ্য হয়েছি। তিনি চিকিসৎকদের দায়বন্ধতার কথা তুলে ধরে বলেন, আমরা আন্দোলনের নামে সাধারণ রোগীদের জিম্মি করছি না। রোগীদের ব্যক্তিগত চিকিৎসাসেবা বন্ধ রাখলেও আমরা রোগীদের কথা বিবেচনা করে চট্টগ্রাম শহরসহ বিভিন্ন উপজেলায় সরকারি হাসপাতালগুলোতে নিয়মিত সেবা প্রদানসহ অপারেশন করে যাচ্ছি।
পেশাজীবী এ নেতা অপারেশনসহ চিকিৎসার ত্রুটি বা জটিলতা হলে তদন্ত ও বিচারিক কাজে বিশেষজ্ঞ প্যানেলের মতামত নিয়ে নিষ্পত্তির নিশ্চয়তা এবং কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনের আগে কোন চিকিৎসককে মামলা বা গ্রেফতার করে হয়রানি না করার দাবিও করেন। ডা. শরীফ চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহারসহ সার্জিস্কোপ হাসপাতালে ভাঙচুরের সাথে জড়িতদের শাস্তি দিয়ে চিকিৎসকদের সামাজিক সম্মান ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান। গতকালের সংবাদ সম্মেলনে চিকিৎসকদের পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই অনির্দিষ্টকালের ডাকা এ আকস্মিক ধর্মঘট নিয়ে চট্টগ্রাম বিএমএ’র নেতারা সাংবাদিকদের প্রশ্নবানে জর্জরিত হন। তবে তারা সে বিষয়টি অনেকটা এড়িয়ে দাবি আদায়ে ধর্মঘট চালিয়ে যাওয়ার কথাই জানান।
সংবাদ সম্মেলনে বিএমএ সভাপতি ডা. মুজিবুল হক খান বলেন, আমরা কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নই। কিন্তু দোষী প্রমাণিত হবার পর ব্যবস্থা যাতে নেয়া হয়। সংবাদ সম্মেলনে বিএমএ চট্টগ্রামের যুগ্ম সম্পাদক ডা. ফয়সাল ইকবাল চৌধুরী, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ডা. ইমরান বিন ইউনূস, অধ্যাপক ডা. নুরজাহান ভূইয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।