পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে গত ৮ ফেব্রæয়ারি থেকে কারাবাসে রয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। দীর্ঘ এক মাসের কারাবাসে খালেদা জিয়ার সঙ্গে একাধিকবার দেখা করেন তার বোন সেলিনা ইসলাম, ছোট ভাই শামীম এস্কান্দর, স্ত্রী কানিজ ফাতিমাসহ পরিবারের সদস্যরা। আইনজীবী হিসেবে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, খন্দকার মাহবুব হোসেন, আবদুর রেজাক খান ও এ জে মোহাম্মদ আলী গত ১০ ফেব্রæয়ারি তার সাথে সাক্ষাত করেন। এসব সাক্ষাতের পর আনুষ্ঠানিকভাবে খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে কোন বার্তা কিংবা বক্তব্যও রাখেননি তারা। তবে গতকাল (বুধবার) প্রথমবারের মতো দলের সিনিয়র নেতারা তার সাথে দেখা করার সুযোগ পেলেন। সাক্ষাত শেষে বের হয়ে দলের নেতাকর্মী থেকে শুরু করে দেশবাসীর জন্য খালেদা জিয়ার পাঠানো বার্তাও জানিয়েছেন তারা। জানিয়েছেন আন্দোলন-সংগ্রামের নির্দেশের কথাও। গতকাল বিকেল তিনটায় বিএনপি চেয়ারপারসনের সাথে পূর্ব নির্ধারিত সাক্ষাতের সময় থাকলেও এর আগে থেকেই একে একে সিনিয়র নেতারা নাজিমউদ্দিন রোডের সাবেক কেন্দ্রীয় কারাগারে আসতে থাকেন। সবার আগে দুপুর আড়াইটার কিছু সময় পরে কারাগারে আসেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। এরপর একে একে আসেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, মীর্জা আব্বাস ও আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। রাস্তায় যানজটের কারণে ৩টা ১২ মিনিটে কারাগারে পৌছান দলের স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার। সোয়া ৩টার দিকে প্রতিনিধি দলকে নিয়ে কারাগারের ভেতরে ঢুকেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। খালেদা জিয়ার সাথে সিনিয়র নেতাদের সাক্ষাতের কারণে নাজিমউদ্দিন রোড এলাকায় গণমাধ্যম কর্মী, বিএনপি নেতাকর্মী থেকে শুরু করে সাধারণ উৎসুক মানুষেরও ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। সবার আগ্রহ কি বার্তা দেবেন বিএনপি চেয়ারপারসন। প্রায় সোয়া এক ঘণ্টা কারাগারের ভেতরে অবস্থানের পর বের হয়ে আসেন দলের সিনিয়র নেতারা। সাক্ষাতের বিষয়ে স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ম্যাডাম সুস্থ্য আছেন। ভাল আছেন। আমরা যতটুকু দেখলাম উনার মনোবল অনেক চাঙ্গা। তার শারীরিক অবস্থা নিয়ে আমরা বেশ উদ্বিগ্ন রয়েছি। তবে তিনি আমাদেরকে বলেছেন আমি ভাল আছি। শারীরিক অবস্থাও ভাল। কোন চিন্তা করবেন না। দলের জন্য কোন নির্দেশনা দিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, মহাসচিব আনুষ্ঠানিকভাবে সকলকেই জানাবেন। একটু পরেই দেখা হয় স্থায়ী কমিটির সিনিয়র সদস্য ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকারের সাথে। তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ম্যাডামের শারীরিক অবস্থার কথা আমরা জিজ্ঞেস করেছি। উনি বলেছেন আমি ভাল আছি। জমিরউদ্দিন সরকার বলেন, ম্যাডাম বলেছেন, আমি জানি দেশবাসী আমাকে নিয়ে অনেক উদ্বিগ্ন। দেশবাসীকে আমার সালাম জানাবেন। আর বলবেন আমি ভাল আছি। গণতন্ত্রের জন্য, তাদের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য যে কোন ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত আছি। দেশবাসীসহ নেতাকর্মীদের তিনি হতাশ না হওয়ার আহŸান জানিয়ে বলেছেন, হতাশ হবেন না। মনোবল শক্ত রাখুন। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমেই গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা হবে।
দলের আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য জানান, আন্দোলন-সংগ্রামসহ দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির কথা উঠলে ম্যাডাম আমাদেরকে বলেছেন, আমি এখান থেকেই খবর রাখছি। আপানারা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে যাচ্ছেন। সারাদেশের নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষও এই আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। আর এই শান্তিপূর্ণ আন্দোলনেও আপনাদের ওপর হামলা করা হচ্ছে, গ্রেফতার হচ্ছে অনেকেই। ওই নেতা জানান, খালেদা জিয়া জানিয়েছেন জেলে থেকেই তিনি দলের নেতাকর্মীদের খোঁজ-খবর রাখছেন। কারা, কোথায়, কিভাবে আন্দোলন পরিচালনা করছেন। কারা কারা দলের দুঃসময়ে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। সবকিছুই তিনি জানেন এবং আমাদেরকে কয়েকজনের নাম উল্লেখ করেও বলেছেন। এর মধ্যে কয়েকটি জেলার নেতাও রয়েছেন। যারা আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। অপর এক স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, খালেদা জিয়ার সাথে কথা বলার সময় তাকে স্বাভাবিক মনে হয়েছে। তিনি মানসিকভাবে শক্ত আছেন। কারাগারে থাকলেও তিনি চলমান আন্দোলন সংগ্রামের খোঁজখবর রাখছেন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠানোর পর তিন দিন ধরে ডিভিশন না দেওয়া, সাবেক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে প্রাপ্য সুযোগ সুবিধা না দিয়ে মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ করে আসছে বিএনপি। এছাড়া নাজিমউদ্দিন রোডের কারাগারকে নির্জন ও পরিত্যক্ত দাবি করে সেখানে বেগম খালেদা জিয়াকে রাখার প্রতিবাদও করছেন তারা। কারাগারে পাঠানোর পর খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়েই দলের নেতাকর্মী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষও সবচেয়ে বেশি উদ্বিগ্ন রয়েছেন। গত ৫ মার্চ চিকিৎসকদের একটি প্রতিনিধি দল বেগম জিয়ার সাথে দেখা করতে গিয়ে ফিরে আসেন। পরে তারা এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, নানাবিধ রোগে আক্রান্ত বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। এজন্য তার সুচিকিৎসা, বিশেষজ্ঞ মেডিকেল টিমের মাধ্যমে শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার দাবি করেন সচেতন চিকিৎসক সমাজ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।