Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

‘আমার বাবা আমায় ছেড়ে চলে যেতে পারে না’

| প্রকাশের সময় : ৪ মার্চ, ২০১৮, ১২:০০ এএম

মাগুরা জেলা সংবাদদাতা : বালীতে নিহত জাতী সংঘ মিশনে কর্মরত বাংলাদেশী ৪ সেনা সদস্যের মধ্যে আকতার হোসেনের বাড়ি মাগুরা জেলার শ্রীপুর উপজেলার বরালিদহ গ্রামে। মৃত্যু সংবাদ পাওয়ার পও তার বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। তার মেয়ে এসএসসি পরীক্ষার্থী রিমি বলে আমার বাবা আমায় ছেড়ে চলে যেতে পারে না। দু’মাস পরেই বাড়ি ফেরার কথা ছিল বাবার। বিদেশ থেকে কতকিছু আনার কথা ছিল সবার জন্য। কত ভালোবাসতো বাবা। গত কয়েকদিন আগেও বাবার সাথে কথা হয়েছিল তার। এসএসসি পরীক্ষার পর তাকে নিয়ে ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় বেড়াতে যাওয়ার কথা ছিল। তা আর হলো না রিমির। কথাগুলো কেঁদে কেঁদে বলছিল মালীতে শান্তিরক্ষী মিশনে দায়িত্বরত বাংলাদেশের চার জন সেনা সদস্যের একজন ল্যান্স কর্পোরাল আক্তার হোসেনের মেয়ে রিমি।
নিহত ল্যান্স কর্পোরাল আক্তার হোসেনের বাড়ি মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার নাকোল ইউনিয়নের বরালিদাহ গ্রামে। তিনি বরালিদাহ গ্রামের তালেম মোল্যার ছেলে। শুক্রবার সকালে তার গ্রামের বাড়ি বরালিদাহ গিয়ে দেখা গেছে শোকে নিঃস্তব্ধ আক্তার হোসেনের পরিবার ও এলাকাবাসী। স্বামীর মৃত্যুতে বার বার বাকরুদ্ধ হয়ে যাচ্ছে স্ত্রী মুসলিমা আক্তার রেণু। তার পিতা তালেম মোল্যা পুত্রশোকে নির্বাক হয়ে বসে আছেন রান্না ঘরের বারান্দায়। ৫ বছরের ছোট মেয়ে জান্নাতুল কিছুই বুঝে উঠতে না পেরে ফ্যাল ফ্যাল করে সকলের মুখের দিকে তাকাচ্ছিল। পাড়া প্রতিবেশি অনেকেই বাড়ির উপর বসে আছে মলিন মুখে। আত্মীয় স্বজনের মধ্যে অনেকেই এসে পৌঁছে গেছে খবর শোনার পর থেকেই। কেউ কেউ উচ্চস্বরে কাঁদতে কাঁদতে আসছে বাড়ির উপর। কেউ কেউ সমবেদনা জানাচ্ছেন শোকে বিহবল গোটা পরিবারকে। সবকিছু মিলিয়ে এ এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা।
অক্তার হোসেনের স্ত্রীর বড়ভাই শহিদুল ইসলাম জানান, কৃষিজীবী তালেম মোল্যা অনেক কষ্ট আক্তার হোসেনকে সেনাবাহিনীতে চাকরি দেন। সুখেই চলছিল তাদের সংসার। তার এই আকস্মিক মৃত্যুতে তার পরিবারের যে ক্ষতি হলো তা পুরণ হবার নয়। আক্তার হোসেন আনুমানিক ২০ বছর পূর্বে একই উপজেলার নলখোলা গ্রামের মৃত কওছার বিশ্বাসের মেয়ে মুসলিমা আক্তার রেণুকে বিয়ে করেন। তার দুই কন্যা সন্তান রয়েছে। বড় মেয়ে রিমি খাতুন এ বছর নাকোল রাইচরণ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এস.এস.সি পরীক্ষা দিচ্ছে। ছোট মেয়ে জান্নাতুল প্রথম শ্রেণিতে পড়ে।
নিহত আক্তার হোসেনের পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আগামী বৃহস্পতিবার মরদেহ এসে পৌছালে তাকে গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জাতী সংঘ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ