Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পুলিশের প্রতি ক্ষুব্ধ ইসি : কঠোর সাজার ব্যবস্থার নির্দেশ

সাতক্ষীরায় ভোটের আগে ভোট

প্রকাশের সময় : ৩১ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : দলীয় প্রতীকে অনুষ্ঠিত প্রথমবারের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের প্রথম ধাপে ভোটের আগের দিনে ব্যালট ছিনিয়ে নিয়ে সীল মেরে পরের দিন বাক্সে ফেলানোর ঘটনায় দ্রুত চার্জশীট দাখিল করে দুর্বৃত্তদের গ্রেফতারের মাধ্যমে বিচারের আওতায় আনার নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বুধবার সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার (এসপি) এবং ৫ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) তলব করে এর কারণ জেনে এ নির্দেশ দেন। তবে এই ঘটনায় গণমাধ্যমে কোন মন্তব্য করে নি এসপি চৌধুরী মঞ্জুরুল কবীর। প্রথম ধাাপের ভোটের আগের রাতে ব্যালটে সিল মারা এবং ভোটের দিন জোরপূর্বক ভোট জালিয়াতির অভিযোগে ১৪টি কেন্দ্রের ভোট বাতিল করে ইসি। এ ঘটনায় পুলিশের গুলিতে দু’জন দুষ্কৃতকারী আহত হয়ে গ্রেফতার রয়েছেন। এসব কেন্দ্রে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গাফলতির কারণ খতিয়ে দেখতে পুলিশের ৬ শীর্ষ কর্মকর্তাকে ইসি সচিবালয়ে তলব করা হয়। গতকাল বুধবার ইসির সভাকক্ষে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শুরু হয়ে শুনানি শেষ হয় দুপুর আড়াইটায়। এতে এসপিসহ ওই পুলিশ কর্মকর্তারা শুনানিতে অংশ নিয়ে ঘটনার দিনে পুলিশের ভূমিকা ও কারণ ব্যাখ্যা করেন।
বৈঠক সূত্র জানায়, শুনানিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রতি ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারাও অনিয়ম রোধে নির্বাচনী বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া ছাড়াও গুলি চালানোর বিষয়টি সামনে আনেন।
সে সময় নির্বাচন কমিশনার মো. আব্দুল মোবারক বলেন, আপনারা নির্বাচনী বিধি ভঙ্গ করার দায়ে ব্যবস্থা নিয়েছেন। কিন্তু ভোটের আগের রাতে কেন্দ্রের দরজা ভেঙ্গে ভোট কারচুপি হয়েছে, সেজন্য প্রচলিত পুলিশ আইনে কেন ব্যবস্থা নেননি।
নির্বাচন কমিশনার মো. শাহ নেওয়াজ বলেন, মামলা করেছেন কিন্তু এখানো তো কাউকে গ্রেফতার করেননি। অথচ তারা তো আপনাদের সামনেই ঘুরে বেড়ায়।
সূত্র জানায়, এ সময় পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অবশিষ্টদেরও গ্রেফতার করা হবে। একে একে পাঁচ ওসি এবং পুলিশ সুপারের বক্তব্য শোনার পর মামলার চার্জশিট কঠোরভাবে সম্পন্ন করার নির্দেশ দেন সিইসি। দুষ্কৃতকারীদের কঠোর সাজা হওয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলেন তিনি। একইসঙ্গে আসামিদের দ্রুত গ্রেফতারের প্রতি জোর দেন সিইসি।
এদিকে শুনানী থেকে বের হয়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের সামনে কোন মন্তব্য করেনি সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার চৌধুরী মঞ্জুরুল কবীর। সাংবাদিকদের পর পর তিনটি প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন আমার কোন মন্তব্য নেই। পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমি তো জানি না আপনাদের সঙ্গে কথা বলতে হবে। এখন কথা বলার জন্য ইসির অনুমতির প্রয়োজন। কিন্তু আমি তো অনুমতি নিইনি।
পরে নিজ কক্ষে সাংবাদিকের সাথে আলাপকালে কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ বলেন, কিছুকিছু ত্রুটির কারণে সাতক্ষীরার পুলিশ প্রধান ও ওসিদের ডেকেছিলাম। তাদের বক্তব্য শুনে বেশ কিছু নির্দেশনা দিয়েছি। এছাড়া ধরিয়ে দিয়েছি কোথায় কোথায় অনিয়ম আছে। কোথায় কোথায় ভুল আছে, তারাও বুঝতে পেরেছে। তিনি বলেন, আমাদের তো একটাই নির্দেশনা ছিল। নির্বাচনটা সুন্দরভাবে ও সুষ্ঠুভাবে কনডাক্ট করতে যা যা করা দরকার, সহযোগিতা করা দরকার, দায়িত্ব পালন করা দরকার তা যেন তারা সুন্দরভাবে পালন করে। শাহ নেওয়াজ বলেন, অন্যায়কারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে ও আইনের আওতায় আনার কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তারাও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন অন্যায়কারীদের আইনের আওতায় আনতে যা যা করা দরকার, তা করবেন। তবে তারা এও বলেছেন যে, এরইমধ্যে অপরাধীরা তাদের অপরাধ বুঝতে পেরেছে এবং তারা সরে আছে এলাকা থেকে। তাই যখনই সুযোগ পাবে তখনই তাদের গ্রেফতার করবে। ইতিমধ্যে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দু’জনকে গুলিও করা হয়েছে। কতোদিনের মধ্যে গ্রেফতার করা হবে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে এ কমিশনার বলেন, আইনের কোনো সময়সীমা নির্ধারণ করা নেই। তাদের যথাসম্ভব ব্যবস্থা নিতে বলেছি। তারাও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তাদের সর্বোচ্চ দিয়ে দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করবে।
তিনি আরো বলেন, শুনানিতে তাদের ব্যাখ্যায় সন্তুষ্টি এবং অসন্তুষ্টি দু’টোই জানিয়েছি। তারা অঙ্গীকার করেছেন এ ধরনের ভুলগুলো হবে না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পুলিশের প্রতি ক্ষুব্ধ ইসি : কঠোর সাজার ব্যবস্থার নির্দেশ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ