Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

রাজনৈতিক বিভেদে বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের পুনরুত্থান ঘটতে পারে -আইসিজি

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ৩:২৪ পিএম | আপডেট : ৬:১৪ পিএম, ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮

ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ (আইসিজি) বলছে, জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক মেরুকরণের ফলে যে বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়েছে, তাতে জঙ্গিরা এর সুযোগ নিতে পারে।

বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে এই আশঙ্কার বিষয়টি জানিয়েছে সংস্থাটি। এতে বলা হয়, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে সহিংসতা বন্ধের বিষয়টি সাময়িক হিসেবে প্রমাণিত হতে পারে। বাংলাদেশে এখন জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণ করে নিষিদ্ধ সংগঠন জামাত-উল মুজাহেদিন ও আনসার আল ইসলাম। এর আগে ২০০৪ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত জঙ্গিদেরকে সফলতার সঙ্গে মোকাবেলা করেছে বাংলাদেশ।

২০১৪ সালের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত বিতর্কিত নির্বাচনের পরে সৃষ্ট তীব্র রাজনৈতিক বিভেদ জঙ্গিবাদের জন্য পুনরায় দ্বার উন্মুক্ত করে দিয়েছে। অর্থ কেলেঙ্কারিতে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে জেলে পাঠানোর বিষয়ে সংস্থাটি বলেছে, এটি ইঙ্গিত দেয় যে ২০১৪ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত চলা রাজনৈতিক সংঘাত আবারো শুরু হতে পারে। এছাড়া অভিযোগ রয়েছে, জঙ্গি কার্যক্রম বন্ধের জন্য সন্ত্রাসবিরোধী কৌশল নেয়ার পরিবর্তে সরকার দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, জোরপূর্বক গুম ও ঢালাওভাবে বিরোধী দলের ওপর অভিযান চালানোর ওপর মনোনিবেশ করছে।

আইসিজি’র প্রতিবেদনে বলা হয়, জেএমবি’র একটি অংশ আইএস এর সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে। এছাড়া আনসার আল ইসলামকে আলকায়েদার দক্ষিণ এশিয়া শাখা হিসেবে উল্লেখ করা হয়। এতে বলা হয়, ১৯৯০ সালের দিকে বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের সূচনা হয়। যার নেতৃত্ব দেয় আফগান ফেরত জঙ্গিরা। এখানে জেএমবি ও হরকাতুল জিহাদ জঙ্গিরা প্রথম হামলা চালায় ২০০৫ সালে। তখন একযোগে ৬৩টি জেলায় বোমার বিস্ফোরণ ঘটায় তারা। তৎকালীন সরকার জেএমবি নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়। কিন্তু পরে দলটি আবারো সংগঠিত হয়। পাশাপাশি আনসার আল ইসলাম নামে জেএমবি’র আরেকটি শাখা গড়ে ওঠে। তারা নিজেদেরকে ইসলামিক স্টেট অব বাংলাদেশ বলে আখ্যা দেয়। এছাড়া ইরাক ও সিরিয়ায় যোদ্ধা পাঠায় তারা।

আইসিজি মনে করে, দ্বিতীয় দফা জঙ্গিবাদের উত্থানের পেছনে রাজনৈতিক বিরোধের ভূমিকা রয়েছে। আনসার আল ইসলাম ১৯৭১ সালে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারকে ইসলামের ওপর আঘাত বলে মনে করে। তারা ব্লগার ও উদারপন্থীদের ওপর হামলা চালায়, যারা মানবতা বিরোধী অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়েছিল।

জেএমবি’র শত্রু তালিকা বেশ দীর্ঘ। তারা ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র ও ইসলামী অনুশাসন মেনে চলে না এমন ব্যক্তিদেরকে হামলাকে বৈধ মনে করে এদেরকে আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু বানায়। এছাড়া পুলিশের দাবি, আহমদি মসজিদ, বৌদ্ধ ও হিন্দু মন্দির ও শিয়াদের উৎসব সহ সংখ্যালঘু, ধর্মীয় স্থাপনা ও অনুষ্ঠানে যেসব হামলা চালানো হয়েছে, তাতে এই দলটির হাত রয়েছে। যদিও আইএস এসব হামলার দায় স্বীকার করেছে।

আইসিজি’র প্রতিবেদনে ২০১৬ সালের ১লা ও ২রা জুলাই ঢাকার রেস্টুরেন্টে হামলার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়। যাতে ২০ জন নিহত হয়েছিল। এর মধ্যে বেশির ভাগই ছিল বিদেশী। গ্রামের মাদ্রাসা ছাত্র ও শহরের অভিজাত তরুণদের ওপরে চালানো এই হামলা থেকে বোঝা যায় যে, জঙ্গি দলগুলোর মধ্যে তেমন সমন্বয় নেই।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ