Inqilab Logo

শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

খালেদা জিয়ার জামিন শুনানি শেষ, নিম্ন আদালতের নথি আসার পর আদেশ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ৪:০৯ পিএম

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের ওপর শুনানি শেষ হয়েছে। নিম্ন আদালত থেকে নথি আসার পর জামিনের বিষয়ে আদেশ দেবেন আদালত। বিকেল সাড়ে ৩টায় শুনানি শেষ হয়।

রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে শুনানি শেষে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহীম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

শুনানিতে জামিন আবেদনের বিরোধিতা করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। জামিন আবেদনের শুনানিতে অংশ নিয়ে তিনি আদালতকে বলেন, ‘ইতিহাসে এ প্রথম কোনো প্রধানমন্ত্রী যিনি এতিমদের টাকা আত্মসাৎ করেছেন।’

শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল আরো বলেন, ‘একজন প্রধানমন্ত্রীর ছেলের স্বাক্ষরে কীভাবে টাকা চলে যায়? ওই সময় তার ছেলে প্রধানমন্ত্রীর বাসায়ই থাকতেন। একজন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি এত বড় দায় এড়াতে পারেন না।’

খালেদা জিয়ার পক্ষের আইনজীবীরা সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীর বয়স, অসুস্থতা ও সামাজিক অবস্থান বিবেচনা করে জামিন আবেদনের আর্জি করেন।

অন্যদিকে, দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবী জামিনের বিরোধিতা করেন।

এর আগে, খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের ওপর শুনানি শুরু করতে দুপুর ২টা ১০ মিনিটে এজলাস কক্ষে প্রবেশ করেন বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিম। কিন্তু আইনজীবীদের অতিরিক্ত উপস্থিতিতে বিচারকদ্বয় এজলাস কক্ষ ত্যাগ করেন।

বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম এজলাস কক্ষে প্রবেশ করে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীনকে লক্ষ্য করে বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট এমনটি হলে আমরা কীভাবে বিচারকার্য পরিচালনা করবো।’

জয়নুল আবেদীন জবাবে বলেন, ‘মাননীয় আদালত, এটি গুরুত্বপূর্ণ মামলা। এ মামলার প্রতি দেশবাসীর আগ্রহ আছে, আইনজীবীদেরও আগ্রহ আছে।’

এ সময় অপর বিচারপতি সহিদুল করিম বলেন, ‘আপনাদের উপস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে আমাদের ওপর চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে।’

২২ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিচারিক আদালতের দেয়া সাজার রায়ের বিরুদ্ধে খালেদা জিয়ার করা আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে জামিন আবেদনের ওপর শুনানির জন্য ২৫ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেন। পাশাপাশি স্থগিত করেন তার অর্থদণ্ড।

হাইকোর্টের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ ওই আদেশ দেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম এবং দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। খালেদার পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, খন্দকার মাহবুব হোসেন ও এ জে মোহাম্মদ আলী প্রমুখ।

এর আগে, ২০ ফেব্রুয়ারি বিকেলে খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ আপিল (আপিল নম্বর ১৬৭৬/২০১৮) করেন। আপিলের ফাইলিং আইনজীবী আবদুর রেজাক খান। ৪৪টি যুক্তি তুলে ধরে এ আপিল করা হয়।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার ৫নং বিশেষ জজ ড. আখতারুজ্জামান দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার পাঁচ বছর কারাদণ্ড দেন। একই সঙ্গে দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ অপর পাঁচ আসামির ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেন আদালত।

রায় ঘোষণার ১১দিন পর ১৯ ফেব্রুয়ারি বিকেলে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা রায়ের সার্টিফাইড কপি হাতে পায়। অন্যদিকে, রোববার জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার হাজিরার জন্য আবেদন করা হয়েছে। এ মামলায় তিনি রোববার পর্যন্ত জামিনে রয়েছেন।

খালেদা জিয়াকে আদালতে হাজির করতে গত বৃহস্পতিবার বিচারিক আদালতে আবেদন করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী। কিন্তু আবেদনের বিষয়ে আদালত কোনো আদেশ দেননি। আদালতের আদেশ না পাওয়ায় খালেদা জিয়াকে আদালতে হাজির করতে পুলিশ কারা কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদনও করেনি।



 

Show all comments
  • nurul alam ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ৫:১৫ পিএম says : 0
    নিম্ন আদালত হতে নথি আসতে ক’দ্দিন সময় লাগবে আল্লাহ মালুম । শত শত কোটি টাকার পচা গম আমদানীর পরও যাদের বিরুদ্ধে কোন দুর্নীতির মামলা হয়নি এবং উচ্চ আদালত হতে কোন স্ব-প্রণোদিত রুলও জারি হয়নি, আদালত কর্তৃক দন্ডিত হওয়ার পরও যারা এমপি/মন্ত্রী বহাল থাকে, দেশকে মাদক সাম্রাজ্য বানিয়েও যারা অবাধে আর দাপটে ঘুরে বেড়ায়, দন্ডিত হয়েও যারা পূর্ণ মেয়াদ শাস্তি ভোগ না করে জেলখানা হতে পালিয়ে যায় আর তাদের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নিতে বিব্রত বোধ করা, জলজ্যান্ত খুনের মামলার চার্জশীট দিতে বছরের পর বছর সময় ক্ষেপণ করার বিষয়ে ব্যবস্থা না নেয়া, কোন বিশেষ দলের লোকজনের প্রকাশ্য দুর্নীতির বিচার না হয়ে দায়মুক্তি দেয়া, ব্যাংক এবং শেয়ার বাজার লুণ্ঠনকারীরা ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থান করা সের্বোপরি অধিকার আন্দোলনে চরম লাঠিপেটা, গুম, খুন হয়রানি ইত্যাদির জন্য যখন কোন কার্যকরী পদক্ষেপ জাতির সামনে দৃষ্টিগোচর হয়না তখন ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আশা কতখানি ? সোনালী ব্যাংকের হাজার কোটি টাকা জালিয়াতিতে যারা জড়িত তাদেরকে যখন দুর্নীতি দমন কমিশন দায়মুক্তি দেয় তখনতো অন্য ব্যাংক তথা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে অরাজকতা চলবেই যেমন চলছে বর্তমানে ।
    Total Reply(0) Reply
  • এস ইসলাম ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ৫:২০ পিএম says : 4
    এর মধ্যে অারো কিছু ইবাদাত করে নিন
    Total Reply(1) Reply
    • Md.Altaf Hossain ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ৭:১০ পিএম says : 4
      নুরুল আলম ভাই আম-ই- আপনার কথায় একমত।
  • এম এস আর ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ৭:৫২ পিএম says : 0
    মহামান্য আদালতই বুঝবেন।
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammed Shah Alam Khan ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮, ১:০০ এএম says : 0
    এটা একটা জটিল মামলা এতে কোন সন্দেহ নেই। ............
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: খালেদা জিয়া

২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ