পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশেষ সংবাদদাতা : রাজধানীর মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভারের উদ্বোধন আজ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ ফ্লাইওভারের সাতরাস্তা থেকে হলি ফ্যামিলি অংশটি উদ্বোধন করবেন। এ উপলক্ষে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। নানা সাজে সজ্জিত করা হয়েছে ফ্লাইওভারটিকে। প্রকল্প সূত্র জানায়, আজ বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফ্লাইওভারে চড়ে সাতরাস্তা থেকে হলি ফ্যামিলি হাসপাতালের সামনে নামবেন। এরপরই সব ধরনের যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হবে ফ্লাইওভারের এ অংশটি। গতকাল মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা গেছে, ফ্লাইওভারের ঢালাই কাজ শেষ করা হয়েছে কয়েকদিন আগেই। ল্যাম্প পোস্টগুলোতে বৈদ্যুতিক সংযোগ দেয়া হয়েছে। গার্ডারের কাজও শেষ। ফিনিশিং ও রঙের কাজও শেষ। চলছে ধোয়া-মোছার কাজ।
ফ্লাইওভারের প্রকল্প পরিচালক নাজমুল আলম জানান, ইতোমধ্যে প্রকল্পের ৭০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। তিন ধাপে পুরো প্রকল্পের কাজ শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে। সাতরাস্তা থেকে হলি ফ্যামিলি অংশ আজ খুলে দেয়ার পর বাংলামোটর থেকে মৌচাক অংশ জুনে খুলে দেয়া হবে। বাকিটা ডিসেম্বর বা জানুয়ারিতে খুলে দেয়া হতে পারে। ৯ কিলোমিটার দীর্ঘ চার লেনের এ ফ্লাইওভারটি পুরোপুরি চালু হলে রাজধানীর যানজট অনেকাংশে কমবে। কমবে যাত্রীদের দুর্ভোগ। রাজধানীর এফডিসি, মগবাজার, মৌচাক, শান্তিনগর, মালিবাগ ও মগবাজার রেল ক্রসিংয়ে যানবাহনের ধারণক্ষমতা বৃদ্ধি করে যানজট নিরসনে এ ফ্লাইওভার প্রকল্পটি হাতে নেয়া হয়। ২০১১ সালের ৮ মার্চ জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) প্রকল্পটির অনুমোদন দেয়া হয়। বহুল প্রতীক্ষিত এ ফ্লাইওভারটি নির্মাণ করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)।
প্রকল্প সূত্র জানায়, মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভারটি এমনভাবে নির্মাণ করা হচ্ছে, যা রিখটার স্কেলে ১০ মাত্রার ভূমিকম্প সহনীয়। প্রতিটি পিলার ১৫০ মিটার গভীর। ফ্লাইওভারটির বিভিন্ন জায়গায় ৮টি বড় মোড় রয়েছে এবং এর নীচে তিনটি রেলক্রসিং রয়েছে। ফ্লাইওভারটি ৮টি মোড় যথাক্রমে- সাতরাস্তা মোড়, এফডিসি মোড়, মগবাজার মোড়, মৌচাক মোড়, শান্তিনগর মোড়, মালিবাগ মোড়, চৌধুরীপাড়া মোড় ও রমনা থানা এবং মগবাজার, মালিবাগ ও সোনারগাঁসহ তিনটি রেলক্রসিং অতিক্রম করেছে। চার লেনের এই ফ্লাইওভার পুরোপুরি নির্মাণ সম্পন্ন হলে এক সাথে বহু যানবাহন চলাচল করতে পারবে। সেই সাথে তিনটি রেলগেটে যানবাহনকে অপেক্ষা করতে হবে না। এতে করে যানজট অনেকাংশে কমবে। কমবে যাত্রীদের দুর্ভোগ।
এ ফ্লাইওভারে ওঠানামার জন্য ১৫টি র্যাম থাকবে। এতে ফ্লাইওভার থেকে তেজগাঁও সাতরাস্তা, এফডিসি, মগবাজার, হলি ফ্যামিলি হাসপাতাল, বাংলামটর, মগবাজার, মালিবাগ, রাজারবাগ পুলিশ লাইন এবং শান্তিনগর মোড়ে ওঠানামা করা যাবে।
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, এফডিসি থেকে সোনারগাঁও অংশে রেলক্রসিং অতিক্রম করায় ৪৫০ মিটার ফ্লাইওভারে দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে ফ্লাইওভারের মোট দৈর্ঘ্য দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ৭ কিলোমিটার। প্রকল্পের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি পাওয়ায় ইউটিলিটিজ-এর কারণে ফাউন্ডেশনের ডিজাইন পরিবর্তন, পাইল সংখ্যা বৃদ্ধি এবং ভূমিকম্পন সহনীয় করতে পট বেয়ারিং ও শক ট্রান্সমিশন ইউনিট (এসটিইউ) সংযোজনের ফলে প্রকল্পের ব্যয় ও সময় বৃদ্ধি পেয়েছে। ফ্লাইওভারটি মেইডেন বরাবর সিঙ্গেল পাইল কলামের উপর নির্মিত হওয়া বর্তমান রাস্তা নির্মাণের পর পূর্বের ন্যায় ব্যবহার করা যাবে। ফ্লাইওভার নির্মাণের পূর্বে যান চলাচলের জন্য ব্যবহৃত রাস্তার প্রস্থ ঠিক রেখে ৩ তলা বিশিষ্ট ফ্লাইওভারটি নির্মাণ করা হচ্ছে। যেখানে অতিরিক্ত ৪ লেন বিশিষ্ট রাস্তার সুবিধা পাবে জনসাধারণ।
এদিকে, বহুল প্রতীক্ষিত মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভারটির একটি অংশ খুলে দেয়া হচ্ছে, এ খবরে রাজধানীবাসীর সাথে ফ্লাইওভারের আশপাশের বাসিন্দারাও দারুণ খুশি। মগবাজারের ব্যবসায়ী আহম্মদ হোসেন বলেন, ঢাকা শহরের যে সব স্থানে ভয়াবহ যানজট সৃষ্টি হয় তার একটি হলো মগবাজার। মতিঝিল, গুলিস্তান থেকে গুলশান, মহাখালী যাওয়ার জন্য বেশিরভাগ গাড়ি এ পথ ব্যবহার করে। পথিমধ্যে মগবাজার রেলগেইট একটি প্রধান বাধা। সকালে পিক আওয়ারে বার বার রেলগেইট বন্ধ থাকে ট্রেন চলাচলের জন্য। এ কারণে যানজট আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করে। ফ্লাইওভারটি চালু হলে গাড়িগুলো উপর দিয়ে চলে যাবে। নিচের রাস্তা ফাঁকাই পড়ে থাকবে। এতে করে মগবাজারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ক্রেতারা আসবে। ব্যবসা আবার চাঙ্গা হবে। মালিবাগের বাসিন্দা আসাদুজ্জামান বলেন, বহুদিন ধরে আমরা অপেক্ষা করছি এই ফ্লাইওভারের জন্য। এর একটি অংশ খুলে দেয়া হচ্ছে- এটাও কম কিসের? তিনি বলেন, এটি এলজিইডি নির্মাণ করছে। এটা আমাদের জন্য গর্ব বটে। আর কতোকাল আমরা বিদেশিদের উপর নির্ভরশীল থাকবো? এভাবে একটা একটা করে আমাদেরকে এগিয়ে যেতে হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।