Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

লজ্জায় টাকা ফেরত দেয়া উচিত ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকের

প্রকাশের সময় : ৩০ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশ ব্যাংকের চুরি হওয়া অর্থ উদ্ধারে নিযুক্ত আইনজীবী আজমালুল হোসেন কিউসি বলেছেন, ‘আমি মনে করি বাংলাদেশ ব্যাংকের চুরি যাওয়া অর্থ লজ্জায় যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকের এমনিতেই ফেরত দেয়া উচিত। তিনি বলেন, নিজেদের সুনামের ঝুঁকি বিবেচনা করে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউ ইয়র্ক মামলা ছাড়াই ৮১ মিলিয়ন ডলার ফেরত দেবে বলে তার বিশ্বাস। বাংলাদেশের সঞ্চিত অর্থ ভুয়া আদেশে ফিলিপিন্সে পাঠানোর ক্ষেত্রে ফেডারেল রিজার্ভ কোথাও চুক্তির বরখেলাপ করেছে কি না এবং পুরো ব্যবস্থায় কোনো ফুটো আছে কি নাÑ সে বিষয়েই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন বলে তিনি জানান। গতকাল (মঙ্গলবার) দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনের নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
বাংলাদেশ ব্যাংক গত ১৩ মার্চ অর্থ মন্ত্রণালয়ে একটি প্রতিবেদন দেয়, যাতে অর্থ স্থানান্তরের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোর কর্তব্যে অবহেলা ছিল বলে উল্লেখ করা হয়। এরপর ‘প্রয়োজনে’ মামলা করার প্রস্তুতি নেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক, ২৩ মার্চ আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয় ব্যারিস্টার আজমালুল হক কিউসিকে।
আজমালুল হোসেন বলেন, চুক্তি অনুসারে ফেডারেল রিজার্ভ কেবল কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা অনুসারে বাংলাদেশের সঞ্চিত অর্থ স্থানান্তর করতে পারে। এক্ষেত্রে যেহেতু তা হয়নি, সেহেতু মামলা ‘করাই যায়’। এটা ক্লিয়ার। ইন্সট্রাকশন দিয়েছে চোর। চোরের ইন্সট্রাকশন অনুসারে কাজ করলে আমরা তো বলতেই পারিÑ তুমি আমার ইন্সট্রাকশন অনুসারে কাজ করোনি। আমার টাকা ফেরত দাও। এটা সহজ। মামলা করা লাগবে না। ওরা লজ্জায় এমনিতেই টাকা দিয়ে দেবে। আমার তো মনে হয় এমনি দিয়ে দেয়া উচিত। মামলা করার প্রয়োজন নেই। তিনি আরো বলেন, তাদের একটা বিরাট রেপুটেশন রিস্ক আছে। সবাই যদি মনে করে নিরাপদ নাÑ তাহলে তাদের টাকা নিয়ে যাবে। আর তাই তারা ব্যবসা করতে পারবে না। তিনি বলেন, অর্থ যাতে নিরাপদ থাকে সেজন্য বহু দেশ যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভে নিজেদের টাকা জমা রাখে। ফেডারেল রিজার্ভকে নিরাপদ স্থান ভাবা হলেও দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশের টাকা লোপাট হয়ে গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক কোনো পেমেন্ট ইন্সট্রাকশন দেয়নি। তা সত্ত্বেও চলে গেছে। উনারা কি বুঝতে পারেনি ফেইকভাবে টাকা চলে গেছে? উনারা চুক্তি ভঙ্গ করেছেন কি না সেটা আমি দেখছি। আরেকটা জিনিস দেখছি যে, সিস্টেমের মধ্যে কোনো ক্ষত আছে কি না। সিস্টেম ডিফিসিয়েন্সি আছে কি না। দেখা যাচ্ছে কিছু কিছু সিস্টেমে ডিফিসিয়েন্সি আছে। এই আইনজীবী বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক তাকে টাকা উদ্ধার করার দায়িত্ব দিয়েছে; দোষীদের ধরে ‘জেল-জরিমানা করা’ তার কাজ নয়। এফবিআইসহ বিভিন্ন সংস্থা সে কাজ করছে। আর তিনি চুক্তির বরখেলাপের বিষয়েই মনোযোগ দিচ্ছেন। ফেডারেল রিজার্ভ যে ইন্সট্রাকশনগুলোর ওপর অ্যাক্ট করেছে, সেগুলোর কয়েকটা মনে করেছে যে জেনুইন না। সেখানে কনফারমেশন চেয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। কনফারমেশন পাওয়ার আগে তারা পেমেন্ট করল। আরেকটা জিনিস আছে, বেআইনিভাবে যদি কোনো টাকা চলে যায় বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে, সেখানে একটা সিস্টেম আছে যে টাকাটা রিকল করতে পারে।... বাংলাদেশ ব্যাংক অনেক কমপ্লেইন করেছে...ইমেইল করেছে, চিঠি দিয়েছে। সুইফট মেসেজ দিয়েছে। সেগুলোর কোনো উত্তর আসেনি। অর্থ পরিশোধের অনুরোধ কার্যকরের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংকগুলো যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করেছিল কি না- তাও অনুসন্ধান করে দেখা হবে বলে ব্যারিস্টার আজমালুল জানান। তিনি বলেন, সব তথ্য পেয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বাংলাদেশ ব্যাংক মামলা করবে কি না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: লজ্জায় টাকা ফেরত দেয়া উচিত ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকের
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ