পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পঞ্চায়েত হাবিব : প্রশাসনে তিন স্তরে পদোন্নতির এক মাস যেতে না যেতে আবারো উপসচিব হিসেবে ৩৯১ জন কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দিয়েছে সরকার। এবার বাদ দেয়া হয়েছে বিএনপিপন্থী কর্মকর্তাদের বলে জানা গেছে।
প্রশাসনে সিনিয়র সহকারী সচিব পদমর্যাদার এই কর্মকর্তাদের উপসচিব হিসেবে পদোন্নতি দিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার রাতে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। পদোন্নতি দিয়ে রেওয়াজ অনুযায়ী তাদের ওএসডি করা হয়েছে। পরে আলাদা প্রজ্ঞাপন জারি করে তাদের পদায়ন করা হবে। গত বছর ডিসেম্বর পদোন্নতির প্রজ্ঞাপনগুলো গভীর রাতে জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অ্যাপয়েন্টমেন্ট, পোস্টিং অ্যান্ড ডেপুটেশন (এপিডি) অতিরিক্ত সচিব শেখ ইউসুফ হারুন ইনকিলাবকে বলেন, প্রশাসনের পদোন্নতি দেয়ার ক্ষেত্রে কোন রাজনৈতিক দল দেখে দেয়া হয় না। এখনো যোগ্যতা অনুসারে দেয়া হয়। আর যারা বঞ্চিত হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ রয়েছে। সে কারণে অনেকই বাদ পড়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপিপন্থী এক সিনিয়র সহকারী সচিব ইনকিলাবকে বলেন, সকল যোগ্যতা থাকার পরও ২৪ ব্যাচের অনেক কর্মকর্তাকে এবার পদোন্নতি দেয়া হয়নি। আর যারা যোগ্যতা অর্জন করেনি এবার তাদেরও পদোন্নতি দেয়া হয়েছে শুধু সরকারি দলের লোক দেখে দেখে দেয়া হয়েছে।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বর্তমান সরকারের মেয়াদে ষষ্ঠ দফায় জনপ্রশাসনের কর্মকর্তারা বড় ধরনের পদোন্নতি পেলেন। এবার উপসচিব পদে ২৪তম ব্যাচের কর্মকর্তাদের বিবেচনায় আনা হয়েছে। এর আগে বাদপড়া ব্যাচের কর্মকর্তারাও এই পদে পদোন্নতি পেয়েছেন। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, উপসচিবের স্থায়ী পদ আছে সাড়ে আটশর মত। এই পদে নতুন করে পদোন্নতি দেয়ার পরে বর্তমানে উপসচিবের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৭৪৫ জন। ২০১৬ সালে ৬ এপ্রিল ৮৭৩ জন কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেয়া হয়। এর মধ্যে সিনিয়র সহকারী সচিব থেকে উপসচিব পদে ৩৪৩ জন, উপসচিব থেকে যুগ্মসচিব পদে ২৯৯ জন এবং যুগ্মসচিব থেকে অতিরিক্ত সচিব পদে ২৩১ জন ছিলেন। জনপ্রশাসনে অনুমোদিত কাঠামোয় সচিবের সংখ্যা ৭৮ (রাষ্ট্রদূত ও রিজার্ভ পদসহ) জন। অতিরিক্ত সচিব ১০৭, যুগ্মসচিব ৪৩০, উপসচিব ৮৩০ জন। এছাড়া অনুমোদিত সিনিয়র সহকারী সচিবের সংখ্যা প্রায় ২ হাজার এবং সহকারী সচিবও প্রায় ২ হাজারের মতো। সব মিলিয়ে ৫ হাজারের মতো কর্মকর্তা নিয়ে জনপ্রশাসনের সাংগঠনিক কাঠামো। এদিকে প্রশাসনের উঁচুস্তরের কর্মকর্তা বিশেষ করে উপসচিবের অনুমোদিত পদের সংখ্যা ৮৩০ হলেও কাজ করছেন ১২৮০ কর্মকর্তা। কিন্ত গত বছর এপ্রিলে এ পদে ৩৪৩ জনের পদোন্নতির ফলে বর্তমানে কর্মকর্তার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৬২৩ জন। যুগ্মসচিব হিসেবে কাজ করে আসছিলেন ৮৬৭ জন কিন্তু অনুমোদিত পদ ৪৩০টি। গত বছর এপ্রিলে এ পদে ২৯৯ জনকে পদোন্নতি দেয়ায় বর্তমানে যুগ্মসচিবের সংখ্যা ১ হাজার ১৬৬ জন। এছাড়া অতিরিক্ত সচিবের পদ ১০৭টি হলেও কাজ করে আসছিলেন ২২৬ জন। এ পদে ২৩১ জনকে গতবছরে এপ্রিলে পদোন্নতি দেয়ার ফলে এখন অতিরিক্ত সচিবের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৫৭ জনে। অর্থাৎ অনুমোদিত পদের চেয়ে উপসচিব দ্বিগুণ, যুগ্মসচিব তিন গুণ এবং অতিরিক্ত সচিব চার গুণ হয়েছে। পক্ষান্তরে সিনিয়র সহকারী সচিব এবং সহকারী সচিবের সংখ্যা অনুমোদিত পদের চেয়ে অনেক কম। নতুন পদোন্নতি জনপ্রশাসনে উপরের পদে কর্মকর্তার সংখ্যা আরো বাড়বে। অন্যদিকে মাঠ পর্যায়ে কর্মকর্তার সংখ্যা কম থাকায় রুটিন কাজ চালানো বেশ কঠিন হয়ে উঠছে। এক কর্মকর্তাকে একাধিক দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। এতে তৃণমূল পর্যায়ে মানুষ কাক্সিক্ষত সেবা পাচ্ছেন না দেশের জনগণ। সরকারের উপসচিব, যুগ্ম-সচিব, অতিরিক্ত সচিব ও সচিব পদে পদোন্নতি বিধিমালা, ২০১৪ অনুযায়ী উপসচিব পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে ৭৫ শতাংশ প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের ও ২৫ শতাংশ অন্যান্য ক্যাডারের কর্মকর্তাদের বিবেচনায় নিতে হবে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, প্রশাসনে উপসচিব পদে এমনিতেই নিয়মিত পদের চেয়ে বেশিসংখ্যক কর্মকর্তা রয়েছেন। তার উপর আবার নতুন করে পদোন্নতি দেয়া হলো। এতে প্রশাসনে আরো বিশৃঙ্খলা দেখা দেবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।