পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন কিনা নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কাছে তা জানতে চেয়েছে বাংলাদেশে সফরত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতিনিধি দল। এছাড়া দেশের সকল রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানে স্বাধীন ও বিশ্বস্ত নির্বাচন কমিশন দেখতে চায় ইইউ।
সফররত ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) প্রতিনিধি দল গতকাল বুধবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নূরুল হুদার সঙ্গে বৈঠকে এমনটাই জানতে চেয়েছেন। এর জবাবে সিইসি বলেন. খালেদা জিয়া নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত আদালতের, নির্বাচন কমিশনের নয়। নির্বাচন ভবনে অনুষ্ঠিত প্রায় ৪৫ মিনিটের ওই বৈঠকে দেশের বিদ্যমমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও নির্বাচন ব্যবস্থার খুটিনাটি বিষয়ে আলোচনা হয়।
আট সদস্যের ওই প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব ইইউ পার্লামেন্টের দক্ষিল এশিয়া বিষয়ক কমিটির সদস্য জ্যঁ ল্যামবার্ট। সিইসি ছাড়াও বৈঠকে কমিশনের ভারপ্রাপ্ত সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ ও যুগ্ম সচিব এসএম আসাদুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে জ্যঁ ল্যামবার্ট সাংবাদিকদের জানান, বাংলাদেশে একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দেখতে চায় ইইউ। এজন্য নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, স্বাাধীন ও বিশ্বস্ত নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচনের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এটা আগামী নির্বাচনের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ যেন সর্বোচ্চ সংখ্যক ভোটাররা তাদের জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারে। এই লক্ষ্যে যেন সকল রাজনৈতিক দল নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিতে পারে সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে ইইউ অবগত কিনা এবং এই পরিস্থিতিতে বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন আয়োজন সম্ভব কিনা? - এমন প্রশ্নে জ্যঁ ল্যামবার্ট খোলাসা করে কিছু বলেননি। পুরো বিষয়টি আদালতের বিবেচ্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, মামলার বিষয়টি আদালত নিস্পত্তি করবে। পরে নির্বাচন কমিশনের আসলে সেটা নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত। তবে কোনো রাজনৈতিক দলের নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত একান্ত ওই দলের। বৈঠক শেষে নির্বাচন কমিশনের ভারপ্রাপ্ত সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। সচিব জানান, সুনির্দিষ্ট কোনো বিষয় নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়নি। বতর্মান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়েও কোনো আলোচনা হয়নি। নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, তারা সুনির্দিষ্ট কোনো ফোকাসের মধ্যে নাই। তারা কিছু প্রশ্ন জিজ্ঞেস করেছেন। কোনো পরামর্শ দেননি। ইইউ বলেছে, নির্বাচন কমিশন সংবিধান অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করবে সেটাই তারা প্রত্যাশা করেছে। নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন ও বিশ্বস্ত ভূমিকায় আনতে ইইউ কোনো সুপারিশ বা পরামর্শ দিয়েছে কিনা জানতে চাইলে ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিব বলেন, এরকম কোনো প্রস্তাব দিয়েছেন কিনা আমাদের জানা নাই। আমরা বলেছি যে, সংবিধান ও আইন অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনা করবে। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদার জিয়ার নির্বাচনে অংশগ্রহণের আলোচনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিএনপি নেত্রীর বিষয় নিয়ে একজন জিজ্ঞেস করেছেন। সিইসি বলেছেন, সেটি আদালতের বিষয়। আদালত যদি অনুমতি দেয় এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের কিছু করার থাকে না। অনুমতি না দিলে সেখানেও নির্বাচন কমিশনের কোনো ভূমিকা নেই। বৈঠকে বাংলাদেশের দেশের সংবিধান এবং প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ও সংসদ নির্বাচন সম্পর্কে ইইউ প্রতিনিধি দলের সদস্যরা জানতে চেয়েছেন।
সিইসি বলেছেন, বর্তমান প্রেসিডেন্ট একক প্রার্থী হিসেবে পুনরায় নির্বাচিত হয়েছেন। এমপিদের ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয়ে থাকে। আর সংসদীয় নির্বাচন প্রতি ৫ বছর পরপর হয়ে থাকে। আগামী ডিসেম্বরে যে সংসদ নির্বাচন হয়ে থাকে সেখানে নির্বাচন কমিশন নির্বাচন পরিচালনা করবে। নির্বাচনীয় ব্যয় নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়। সিইসি জানিয়েছেন, সরকারের তরফ থেকে এই অর্থ বহন করা হয়ে থাকে। নির্বাচন কমিশন থেকে যে পরিমাণ বরাদ্দ চাওয়া হয় সেই পরিমাণ সরকার দিয়ে থাকে। আমাদের বিভিন্ন প্রার্থীদের ডোনেশন দেয়া হয় এবং তারা অতিরিক্ত ব্যয় করে থাকেন সেক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিয়ে থাকে। যদি কেউ অভিযোগ করে থাকে এবং ইসি জানতে পারে সেটা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ব্যবস্থা নেয়া হয়। বৈঠকে প্রবাসী ভোটার নিয়েও আলোচনা হয় বলে জানান ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিব। তিনি বলেন, প্রবাসে যারা বসবাস করে তাদের কিভাবে ভোটার করা যায় তা পর্যালোচনা করা হচ্ছে। ভোটার তালিকা কিভাবে তৈরি করা হয় সে বিষয়টিও ইইউ প্রতিনিধি দলকে অবগত করা হয়েছে। আমরা জানিয়েছি, আমাদের ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা আছে এবং জাতীয় পরিচয়পত্র দেখে মূলত ভোটাররা ভোট দিয়ে থাকে।
ইপিজেডে ইউনিয়ন কবে, জানতে চায় ইইউ
রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা ইপিজেডে শ্রমিকদের ইউনিয়ন করতে দেওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার কী পদক্ষেপ গ্রহণ করছে, জানতে চেয়েছেন সফররত ইউরোপিয়ান সংসদীয় প্রতিনিধি দলের প্রতিনিধিরা।
গতকাল বুধবার সচিবালয়ে কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মো. মুজিবুল হক চুন্নুর সঙ্গে বৈঠকে ইউরোপীয় সংসদীয় প্রতিনিধি দলের নেতার এ প্রশ্ন তোলেন। দলের নেতা জিন ল্যাম্ববার্টের নেতৃত্বে প্রতিনিধিরা শ্রম আইন সম্পর্কেও জানতে চান। পরে সাংবাদিকদের কর্মসংস্থানের বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী মো. মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ইপিজেডের বিষয়টি দেখভাল করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। তবে ৮০ দশকে ইপিজেড প্রতিষ্ঠার সময় মালিকদের চাপে ইউনিয়ন করা অধিকার ব্যতিরেকে আইন করা হয়। এটি সংশোধন করে ইউনিয়ন করার অধিকার রেখে অচিরেই আইন করা হবে। যে কোনো কারখানার ৩০ শতাংশ শ্রমিক চাইলেই তারা ইউনিয়ন করতে পারবে। বর্তমানে দেশে প্রায় সাড়ে ৮ হাজার কারখানায় ইউনিয়ন রয়েছে। তবে দেশে কারাখানা রয়েছে কয়েক লাখ। শ্রম আইন সম্পর্কে ইইউ ও আইএমও ইউরোপীয় মান চায়। এটি বাংলাদেশ সম্ভব নয় বলে সাফ জানিয়ে দেন চুন্নু। তিনি বলেন, বাস্তবতা মেনে বাংলাদেশে কাজ করতে হবে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন দ্বিচারী ব্যবহার করে বাংলাদেশের সঙ্গে। তারা সব বিষয়ে তাদের মানে চায়। অন্যদিকে প্রতিযোগিতার দোহাই দিয়ে দিনে দিনে বাংলাদেশি পণ্যের দাম কমিয়ে দিচ্ছে। তিনি বলেন, তৈরি পোশাক শিল্পের কারখানা পরিদর্শন, ঝুঁকি নিরুপণ ও কারখানা নিরাপত্তা দেখভালের বিষয়ে ২০১৮ সালের মধ্যে বাংলাদেশ সক্ষমতা অর্জন করবে। এ লক্ষ্যে রেমিডিয়েশন কো-অর্ডিনেশন সেল (আরসিসি) কাজ করে যাচ্ছে। শ্রম আইন পরিবর্তন, শ্রমিক অধিকার বাস্তবায়ন এবং নারীর ক্ষমতায়নে কি কি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, প্রতিনিধি দলের সদস্যরা এমন প্রশ্নও করেন। এ বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ট্রেড ইউনিয়ন রেজিস্ট্রেশন সহজ করা হয়েছে। গত বছর চারশ’ ট্রেড ইউনিয়নের রেজিস্ট্রেশন দেওয়া হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।