পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশেষ সংবাদদাতা : অবশেষে সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী একে দাম কমানো হিসাবে উল্লেখ না করে বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে দেশীয় বাজারের সমন্বয়ের কথা। গতকাল (সোমবার) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
মন্ত্রিসভার বৈঠক সূত্র জানায়, বিদ্যুৎকেন্দ্র ও শিল্প-কারখানায় ব্যবহৃত ফার্নেস তেলের দাম কমানোর সিদ্ধান্ত দূড়ান্ত হয়েছে। এছাড়াও অন্যান্য জ্বালানি তেলের দাম কবে থেকে কতটা কমবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসবে আগামী (এপ্রিল) মাসে।
বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে বিপিসি তেলভেদে প্রতি লিটারে ১৩ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত লাভ করছে।
আন্তর্জাতিক বাজারে বৃদ্ধির কারণে সর্বশেষ ২০১৩ সালের ৪ জানুয়ারি দেশে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি করা হয়। তখন পেট্রোল-অকটেন লিটার প্রতি ৫ টাকা এবং ডিজেল কেরোসিনের দাম ৭ টাকা করে বাড়ানো হয়েছিল। বর্তমানে প্রতি লিটার অকটেন ৯৯, পেট্রোল ৯৬, কেরোসিন ও ডিজেল ৬৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ফার্নেস তেলের দাম লিটার প্রতি ১৫ থেকে ১৬ টাকা পর্যন্ত কমতে পারে। তার মতে, ফার্ণেস অয়েলের দাম কমলে শিল্প উৎপাদন ব্যয় অনেকটাই কমে আসবে। সেইসাথে ফার্ণেস অয়েল নির্ভর বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর উৎপাদন খরচও কমবে।
অন্যান্য জ্বালানি তেলের বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সরকার সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম পুননির্ধারণ করবে। এ সব তেলের দাম কতটা কমানো হবে এবং তা কবে থেকে কার্যকর হবে সে বিষয়ে নীতিনির্ধারক মহলে কাজ চলছে।
উল্লেখ্য, দেশে বর্তমানে বিদ্যুতের উৎপাদন ক্ষমতা রয়েছে প্রায় ১৩ হাজার মেগাওয়াট। জ্বালানি তেল দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রতি ইউনিটে খরচ পড়ে প্রায় ১৭ টাকা। আর গ্যাস দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনে খরচ পড়ে মাত্র দুই টাকার মতো।
এদিকে, বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের কয়েক দফা দরপতনের পরও দেশের বাজারে দাম কমানো হয়নি। এ নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে অনেকদিন ধরেই ক্ষোভ বিরাজ করছে। ব্যবসায়ী ও শিল্প উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে জ্বালানি তেলের দাম কমানোর ব্যাপারে জোর দাবি জানানো হচ্ছিল। দেশের অর্থনীতিবিদরা বারবার সরকারকে জ্বালানি তেলের দাম কমানোর পরমর্শ দিয়েছেন।
সম্প্রতি ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই’র পক্ষ থেকে অর্থমন্ত্রীকে জানানো হয়েছে, তেলের দাম গড়ে ১০ শতাংশ কমানো হলে দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে।
অপরদিকে, দেশে সব ধরণের জ্বালানি তেলের দাম না কমায় অতিরিক্ত মুনাফা করছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)। এ ব্যাপারে সরকার পক্ষে থেকে বারবার বলা হয়েছে, বিপিসির দীর্ঘদিনের পুঞ্জিভূত লোকসান পুষিয়ে নিতেই দাম কমনো হচ্ছে না।
এরপরও জ্বালানি তেলের দাম আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে সমন্বয় করার ব্যাপারে সরকারের ওপর চাপ বাড়তে থাকলে জ্বালানি তেলের সার্বিক পরিস্থিতি জানতে গত ৬ জানুয়ারি জ্বালানি উপদেষ্টা এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রীকে এ বিষয়ে একটি চিঠি দেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
সেখানে তিনি বলেন, ‘জ্বালানি তেলের দাম নিয়ে আমাদের কিছু করণীয় আছে। এটা স্বীকার করতেই হবে ব্যাপক দরপতন হয়েছে। মনে হচ্ছে তেলের দরপতনটি কিছু দিনের জন্য স্থায়ী হবে। আর সে কারণেই এখন বাজার দর নিয়ে সরকারের চিন্তা করার যথোপযুক্ত সময়।’
দাম কমানোর প্রক্রিয়া হিসেবে অর্থমন্ত্রী জ্বালানি মন্ত্রণালয়কে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন তৈরি করতে বলেন। যা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি আন্ত:মন্ত্রণালয় কমিটিতে আলোচনা হবে বলে জানানো হয়।
অর্থ মন্ত্রনালয় থেকে ওই চিঠি পাওয়ার পর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এ সংক্রান্ত কার্যক্রম শুরু করতে জ্বালানি সচিবকে নির্দেশ দেন।
বিপিসি’র তথ্যানুযায়ী, বেশি দামে তেল কিনে কম দামে বিক্রি করায় ১৯ বছরে প্রতিষ্ঠানটির লোকসান দাঁড়িয়েছে ২৯ হাজার কোটি টাকা। তবে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলে দাম অস্বাভাবিক হারে নেমে যাওয়ায় গত দুই বছর ধরে বিপিসি দেশীয় বাজারে জ্বালানি তেল বিক্রি করে মুনাফা করছে। গত অর্থবছরে (২০১৪-১৫) বিপিসি পাঁচ হাজার কোটি টাকা লাভ করেছে। আর চলতি অর্থবছর (২০১৫-১৬) ৭ হাজার কোটি টাকা লাভের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। এরমধ্যেই অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে বিপিসি’র মুনাফা হয়েছে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা।
দেশে জ্বালানি তেলের চাহিদা প্রায় ৫৫ লাখ মেট্রিক টন। যার প্রায় পুরোটাই আমদানি করা হয়। এ তেল সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় পরিবহন খাতে, ৪৫ শতাংশ। এছাড়া বিদ্যুৎ খাতে ২৫ শতাংশ, কৃষি খাতে ১৯ শতাংশ, শিল্প খাতে ৪ শতাংশ এবং গৃহস্থালী ও অন্যান্য খাতে ৭ শতাংশ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।