পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
শেখ জামাল : দু’মন্ত্রী পদত্যাগ না করলে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ হবে। তাদের পদত্যাগের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী সঠিক সিদ্ধান্ত নেবেন বলে মনে করছেন আইনজ্ঞগণ। তারা বলছেন, নৈতিকতার দিক থেকে খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম ও মুক্তিযুদ্ধ-বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের পদ ছেড়ে সরে যাওয়া উচিত ছিল। পদত্যাগ না করে তারা মন্ত্রিপরিষদ বৈঠকেও গেলেন। এই এক অদ্ভুত গণতন্ত্র। নৈতিকতার ধার না ধারে গোজামিল দিয়ে চলছে এই সরকার।
এদিকে দুই মন্ত্রী ‘নৈতিকভাবে মন্ত্রী পদে থাকার অধিকার হারিয়েছেন’ বলে আইনজীবীদের একটি অংশ দাবি করলেও এ বিষয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলছেন, এটা সম্পূর্ণ দুই মন্ত্রীর ব্যক্তিগত বিবেচনার ব্যাপার। সরকারের খাদ্যমন্ত্রী ও মুক্তিযুদ্ধ-বিষয়ক মন্ত্রীকে আদালত অবমাননায় দায়ে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেন রোববার সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। অনাদায়ে সাত দিনের কারাদ-ের নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে সরকারের এই দুই মন্ত্রীকে সাত দিনের মধ্যে এই অর্থ ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতাল ও লিভার ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশে দিতে হবে বলেন।
এই সাজার পর কামরুল ও মোজাম্মেল মন্ত্রী পদে থাকতে পারেন কি না সেই প্রশ্ন উঠলে আইনজীবীদের এক পক্ষে বলা হয়, এই রায়ের কারণে মন্ত্রিত্ব না থাকার কোনো বিধান সংবিধানে নেই। অন্য পক্ষের দাবি, ‘শপথ ভঙ্গের’ কারণে তারা মন্ত্রী থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন। এ নিয়ে আলোচনার মধ্যেই গতকাল সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে অংশ নেন খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম এবং মুক্তিযুদ্ধ-বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। বৈঠক শেষে বেরিয়েই এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দিতে হয় আইনমন্ত্রীর। কামরুল ও মোজাম্মেল আর মন্ত্রী পদে থাকতে পারেন কি না-এ প্রশ্নে আনিসুল হক বলেন, ‘এখানে এটা একদমই পরিষ্কার, এখানে কিন্তু সংবিধান ক্ষুণœ হওয়ার কোনো ব্যাপার নাই। এখানে পদত্যাগ করার কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। এটা সম্পূর্ণ তাদের ব্যক্তিগত বিবেচনার ব্যাপার।’ আদালত নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্যে মন্ত্রীদের শপথ ভঙ্গ হয়েছে কি না-এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘না, শপথ ভঙ্গ হয়নি।’
এই বিষয়ে বিশিষ্ট আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী বলেন, দুই মন্ত্রী তাদের শপথ ভঙ্গ করায় দ- দিয়েছেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত। তারা শপথ নিয়ে মন্ত্রিপরিষদের সদস্য হয়েছে। শপথ নেওয়ায় আদালত তাদের ডেকেছে। বুঝতে হবে অন্যদের আদালত ডাকেনি। নৈতিকতার দিক থেকে তাদের পদ ছেড়ে সরে যাওয়া উচিত ছিল। আদালত দ- দেওয়ার পরও তারা মন্ত্রিপরিষদ বৈঠকে গেছেন। এই দুই মন্ত্রীর বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী ব্যবস্থা না নিলে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ হবে।
সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. শাহ্দীন মালিক বলেন, আশা করেছিলাম দুই মন্ত্রী পদত্যাগ করবেন। তারা তা না করে মন্ত্রিপরিষদ বৈঠকে অংশ নিয়েছেন। এই সরকারের অর্ধেক সংসদ সদস্য বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত। যে সরকারের বিরোধী দলের মন্ত্রী রয়েছে। নীতি-নৈতিকতা ধার না ধারে গোজামিল দিয়ে সরকার চলছে। এই এক অদ্ভুত গণতন্ত্র। সর্বোচ্চ আদালত থেকে দোষী সাব্যস্ত হয়ে সাজাপ্রাপ্ত অপরাধীর মন্ত্রী হিসেবে বহাল থাকার কোনো নৈতিক অধিকার নেই বলে জানান তিনি।
সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ বলেছেন, মন্ত্রিপরিষদ বৈঠকে দুই মন্ত্রী অংশ নিতে কোনো বাধা নেই। আদালত অবমাননার দায়ে দুই মন্ত্রীর মন্ত্রিত্ব থাকা না থাকার বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছের উপর নির্ভর করছে। তিনি বলেন, দুইজন মন্ত্রীকে জরিমানা করা হয়েছে। তাদের যে সাজা হয়েছে, তা সংবিধানের ৫৮ ও ৬৬ অনুচ্ছেদকে আঘাত করে না। এ দুটি অনুচ্ছেদে কখন মন্ত্রিত্ব বা সংসদ সদস্য পদ কীভাবে চলে যাবে তা বলা হয়েছে। শফিক আহমেদ বলেন, দুই মন্ত্রীর পদ থাকা না থাকা নৈতিকতার মধ্যে পড়ে না।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির বিদায়ী সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন আগের দিন বলেন, আদালত অবমাননার দায়ে সাজাপ্রাপ্ত দুই মন্ত্রীর (খাদ্যমন্ত্রী ও মুক্তিযুদ্ধ-বিষয়ক মন্ত্রী) নৈতিক কারণে পদত্যাগ করা উচিত। যদি তারা না করেন তবে প্রধানমন্ত্রী তাদের মন্ত্রিসভা থেকে অপসারণ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করবেন বলে তিনি আশা করেন। অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছিলেন, সরকারই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। তবে বিষয়টা ‘নৈতিকতার’।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।