পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অর্থনৈতিক রিপোর্টার : দেশের অর্থনীতি গতিশীল রাখার অন্যতম প্রধান খাত ‘কৃষিতে’ ঋণ বিতরণ বাড়ছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো লক্ষ্যমাত্রার ৬৯ শতাংশ কৃষিঋণ বিতরণ করেছে। পাশাপাশি এ সময়ে যে পরিমাণ কৃষিঋণ বিতরণ হয়েছে তা গেল অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় ১৫ শতাংশ বেশি। তবে এ সময়ে সরকারি খাতের ব্যাংকের চেয়ে বেসরকারি ও বিদেশী খাতের ব্যাংকগুলো কৃষিঋণ বিতরণে এগিয়ে রয়েছে। যদিও এ সময় পর্যন্ত বিদেশি ব্যাংকগুলোর মধ্যে ব্যাংক আল ফালাহ, কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলন ও ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান কোনো ঋণ বিতরণ করতে পারেনি। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
বাংলাদেশের ৫৬টি ব্যাংকের জন্য চলতি অর্থবছরের জন্য কৃষি খাতে ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৬ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। যা গত অর্থ বছরে ছিল ১৫ হাজার ৫৫০ কোটি টাকা। প্রতিবেদন দেখা গেছে, জুলাই-ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এই আট মাসে ব্যাংকগুলো ১১ হাজার ৩৭৪ কোটি ৪২ লাখ কৃষি ঋণ বিতরণ করেছে। যা লক্ষ্যমাত্রার ৬৯ দশমিক ৩৭ শতাংশ। গেল ২০১৪-২০১৫ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে এ খাতে ৯ হাজার ৯১৪ কোটি ১০ লাখ টাকার ঋণ বিতরণ করা হয়েছিল। এ হিসাবে চলতি অর্থবছরে কৃষিঋণ বিতরণ বেড়েছে ১৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরে সরকারি খাতের ব্যাংকগুলোর কৃষিঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৯ হাজার ২৯০ কোটি টাকা। প্রথম আট মাসে বিতরণকৃত ঋণের পরিমাণ ৫ হাজার ৮০৯ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। যা লক্ষ্যমাত্রার ৬২ দশমিক ৫৪ শতাংশ।
কৃষি ঋণ বিতরণের জন্য বিশেষভাবে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক সর্বোচ্চ ৩ হাজার ৭০ কোটি ২৬ লাখ টাকা ঋণ বিতরণ করেছে। কৃষি ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, চলতি অর্থবছরে ব্যাংকটির লক্ষ্যমাত্রা ৪ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি অর্জনের আশাবাদ ব্যক্ত করে কৃষি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ ইউসুফ ইনকিলাবকে বলেন, আমরা লক্ষ্য অনুযায়ী কৃষি ঋণ বিতরণের সব ধরনের ব্যবস্থা করেছি। একই সঙ্গে সামনে বর্ষা মৌসুম। যা কৃষি ঋণ বিতরণের গুরুত্বপূর্ণ সময়। এই সময়ে কৃষি ঋণ বিতরণের হার আরও বাড়বে বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, আশা করছি, লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি অর্জন করতে পারেবা। অপর বিশেষ ব্যাংক রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব) ৭০৬ কোটি ৩ লাখ টাকার কৃষি ঋণ বিতরণ করেছে। চলতি অর্থ বছরে ব্যাংকটির কৃষি ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা এক হাজার ৬০০ কোটি টাকা।
সরকারী খাতের সোনালী ব্যাংক ৮৩২ কোটি ৮৫ লাখ টাকা ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক মাত্র ১ কোটি ৩৬ লাখ টাকার কৃষি ঋণ বিতরণ করেছে, যা লক্ষ্যমাত্রার ২ দশমিক ৭২ শতাংশ। যদিও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের পক্ষ থেকে এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা বাকী সময়ে লক্ষ্যপূরণের আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, কৃষিঋণসহ ব্যাংককে গতিশীল করতে সম্প্রতি কিছু পরিবর্তনও আনা হয়েছে। তাই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে লক্ষ্য অর্জনে সক্ষম হবে ব্যাংক।
এদিকে প্রতিবছর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নানাবিধ সুযোগ ও বারবার তাগিদ স্বত্তেও বেসরকারি ও বিদেশি ব্যাংকগুলোকে কৃষি খাতে ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারতো না। চলতি অর্থ বছরে বাংলাদেশ ব্যাংক আগে থেকেই বেসরকারি ও বিদেশি ব্যাংকগুলোর প্রতি ‘কঠোর’ হয়। ব্যাংকগুলোকে কৃষি ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে না পারলে অনার্জিত অংশের পুরোটাই কেন্দ্রীয় ব্যাংকে বাধ্যতামূলক জমা রাখার নির্দেশ দেয়। আর এ অর্থের ওপর কোনো সুদ দেয়া হবে না বলেও নির্দেশে উল্লেখ করা হয়। এ নির্দেশের সুফলও পাওয়া গেছে কৃষি ঋণ বিতরণের প্রথম ৮ মাসে। এ সময়ে বেসরকারি ও বিদেশী খাতের ব্যাংকগুলো কৃষিঋণ বিতরণ করেছে ৫ হাজার ৫৬৬ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। যা লক্ষ্যমাত্রার ৭৮ দশমিক ২৯ শতাংশ। চলতি অর্থবছরে বেসরকারি ও বিদেশি ব্যাংকগুলোর জন্য ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা দেয়া হয়েছে ৭ হাজার ১১০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ইসলামী ব্যাংক সর্বোচ্চ ৭৬৭ কোটি ৪৭ লাখ টাকার ঋণ বিতরণ করেছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই ৮ মাসে ব্যাংকগুলো সবচেয়ে বেশি ঋণ বিতরণ করেছে খাদ্যশস্য উৎপাদনে। এতে বিতরণকৃত ঋণের পরিমাণ ৫ হাজার ৮৮২ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। এর পরে কৃষকরা বেশি ঋণ নিয়েছে মুরগি পালন ও মাছ চাষের জন্য। মুরগি পালনের জন্য ব্যাংকগুলোর বিতরণকৃত ঋণের পরিমাণ ১ হাজার ৬২৭ কোটি ৯১ লাখ এবং মাছ চাষে মোট ঋণ দেয়া হয়েছে ১ হাজার ২০২ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। এদিকে, একক মাস হিসেবে ফেব্রুয়ারি মাসে কৃষিঋণ বিতরণ কমেছে। এ মাসে কৃষিঋণ বিতরণ হয়েছে ১ হাজার ২৯৭ কোটি টাকা। যা জানুয়ারি মাসে ছিল ১ হাজার ৩২৩ কোটি টাকা। অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইতে কৃষিঋণ বিতরণ হয়েছিল মাত্র ৮৬১ কোটি ৯১ লাখ টাকা। তবে আগস্টের থেকে কৃষিঋণ বিতরণ স্বাভাবিক হতে শুরু করে। আগস্ট মাসে কৃষিঋণ বিতরণ হয় ৯৫২ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। সেপ্টেম্বর ১ হাজার ৩৮৯ কোটি ৯০ লাখ টাকা, অক্টোবরে ১ হাজার ৪২৭ কোটি, নভেম্বরে ৯০৩ কোটি ও ডিসেম্বরে ৩ হাজার ২২১ কোটি টাকার টাকার কৃষিঋণ বিতরণ হয়।
চলতি অর্থবছরে ব্যাংকগুলোকে মোট ঋণের ন্যূনতম আড়াই শতাংশ কৃষি ও পল্লী খাতে বিতরণ করতে হবে। নতুন ব্যাংকগুলোর জন্য এ হার ৫ শতাংশ। কৃষি নীতিমালা অনুযায়ী, যারা লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সক্ষম হবে না তাদেরকে অর্থবছর শেষে লক্ষ্যমাত্রার অনর্জিত অংশ বাংলাদেশ ব্যাংকে বাধ্যতামূলক জমা করতে হবে। ব্যাংক এই জমার ওপর কোনো সুদ পাবে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।