Inqilab Logo

শক্রবার ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আবারো সুন্দরবনে আগুন, দেড় একর জায়গা পুড়ে ছাই

প্রকাশের সময় : ২৯ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মনিরুল ইসলাম দুলু, সান্তানুর রহমান খোকন
সুন্দরবনের নাংলী এলাকার গহীন বনে লাগা আগুন পুরোপুরিভাবে নিয়ন্ত্রণে এসেছে। সোমবার দুপুর ২টার দিকে আগুন সম্পূর্ণ নিভে যায় বলে জানিয়েছেন সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) বেলায়েত হোসেন। আগুনে পুড়ে গেছে শত শত গাছ। রোববার রাতে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সোমবার সকাল থেকে বন বিভাগ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ফায়ার লাইন কেটে আগুন নিভানোর চেষ্টা চালায়। ততক্ষণে প্রায় ১ দশমিক ৬৬ একর বনের গাছপালা পুড়ে গেছে। এখন কোথাও আগুন দেখা না গেলেও বিভিন্নস্থান থেকে ধোয়া বের হচ্ছে। সোমবার সকাল থেকে বনবিভাগ, ফায়ার সার্ভিস, সিপিজি ও স্থানীয়সহ দেড়শতাধিক মানুষ আগুন নিভানোর কাজে অংশ নেয়। বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল সুন্দরবনের চাঁদপাই ও শরণখোলা রেঞ্জের উত্তর ও উত্তর-পূর্বাংশের নিচু এলাকায় এর আগেও বিভিন্ন সময়ে অগ্নিকা- ঘটেছে।
এসিএফ বেলায়েত হোসেন বলেন, রোববার সন্ধ্যায় এ অগ্নিকা-ের সূত্রপাত হয়। বনের অভ্যন্তরে দেড় থেকে দুই একর এলাকায় আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। তবে বর্তমানে আগুন নিয়ন্ত্রণে আছে।
মোড়েলগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা স্বপন কুমার ভক্ত বলেন, আমরা রোববার রাতে সুন্দরবনে অগ্নিকা-ের খবর পাই। কিন্তু রাতে সুন্দরবনে প্রবেশ করতে সমস্যা হওয়ার কারণে সকালে এসে প্রায় ৫ ঘণ্টা চেষ্টা করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনি। এতে ১৫ জন ফায়ার সার্ভিস কর্মী ও নাংলি ফরেস্টারসহ স্থানীয় জনসাধারণ সহযোগিতা করে। বনের মধ্যে পচা পাতা থেকে তৈরি হওয়া মিথেন গ্যাসের স্তর জমে গেলে বনজীবীদের ফেলা বিড়ি-সিগারেট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। বর্তমানে আগুন নিভে গেলেও কিছু কিছু জায়গায় আগুনের ফুলকি রয়েছে। তবে আগুন যেন ছড়িয়ে না পড়ে সেজন্য বনের ভেতরে ফায়ার লাইন (নালা) কাটা হয়েছে।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) সাইদুল ইসলাম জানান, বসন্তের শেষ ও গ্রীষ্মের শুরুতে বাতাসের তীব্রতা বেশি থাকে। এমন মৌসুমে বনে আগেও অগ্নিকা- হয়েছে। এ মৌসুমে মৌয়ালরা মধু আহরণ করতে বনে আসেন। চাক ভাঙার সময় তারা আগুন ব্যবহার করে। হয়তো সেখান থেকে বনে আগুন ছড়িয়ে পড়েছে।
এদিকে আগুন লাগার ঘটনায় পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জ কর্মকর্র্তা মো: বেলায়েত হোসেনকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বন বিভাগ। কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের স্টেশন কর্মকর্তা (এসও) গাজী মতিয়ার রহমান ও ধানসাগর স্টেশন কর্মকর্তা (এসও) সুলতান মাহমুদ। কমিটিকে আগামী তিনদিনের মধ্যে আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করে পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো: সাইদুল ইসলামের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের গুলিশাখালী ক্যাম্প সংলগ্ন পয়ষট্টিছিলা এলাকায় আগুন লেগে অন্তত পাঁচ একর বনভূমি পুড়ে যায়। ২০১১ সালে ধানসাগর স্টেশনের নাংলি ক্যাম্প এলাকায় পুড়ে যায় দুই একর বনভূমি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আবারো সুন্দরবনে আগুন
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ