পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানীর নাজিমুদ্দিন রোডে পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে ইবাদত-বন্দেগীতে সময় কাটছে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার। তিনি শেষ রাতে ঘুম থেকে উঠেই ওজু করে প্রথমে তাহাজ্জুদের নামাজ পড়েন এবং দোয়া দরূদ পড়ার পর ফজরের নামাজ আদায় করেন। নির্জন এ কারাগারে দিনের বেলায় মাঝেমধ্যে শুয়ে-বসে ও গল্প করে তার সময় কাটছে। নিয়মিত সংবাদপত্রও পড়ছেন। মাত্র তিনটি সংবাদপত্র তাকে দেয়া হচ্ছে। টিভি দেখার ব্যবস্থা করলেও শুধু বিটিভি ছাড়া অন্য কোন চ্যানেল বা ডিস লাইন সংযোগ দেয়া হযনি। খাবার ঠিক মতো খাচ্ছেন এবং রাতে নিয়মিত ঘুমাচ্ছেন বলে জানা গেছে কারা সূত্রে। এভাবেই তার গত তিন দিন কাটেছে বলে জানা গেছে। জানা যায়,কারাগারে খালেদা জিয়া মনোবল হারাননি, স্বাভাবিক আছেন। গতকাল সন্ধ্যায় তার সাথে মওদুদ আহমেদসহ দলের ৫ জন আইনজীবী দেখা করেছেন। তাদের সাথে সাক্ষাতকালে দলের নেতা কর্মীদের শান্ত থাকতে বলেছেন এবং বিভিন্ন বিষয়ে দিক নির্দেশনা দিয়েছেন।
খালেদা জিয়ার সাথে দেখা করার আগে কারা ফটকের সামনে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আইন অনুসারে ১৮ ক্যাটাগরির কারাবন্দি অটোমেটিক্যালি ডিভিশন পান। এজন্য আলাদা করে আবেদনের প্রয়োজন হয় না। কিন্তু, অত্যন্ত দুঃখের বিষয় খালেদা জিয়াকে কারাগারে আনার পর এখনও ডিভিশন দেয়া হয়নি। তিনি বলেন, আমরা নেত্রীর সঙ্গে দেখা করে ডিভিশন এবং আপিলের বিষয়ে তার সঙ্গে পরামর্শ করব। তার নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব। আর রায়ের নথিপত্র পাওয়ার পরই আমরা দ্রæত আদালতে আপিল করব।
কারা অধিদপ্তরের ঢাকা বিভাগের ডিআইজি তৌহিদুল ইসলাম বলেন, কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী খালেদা জিয়াকে কারাগারের মূলফটকের ভেতরে পুরনো অফিস ভবনে রাখা হয়েছে। সিনিয়র জেল সুপারের ওই অফিস কক্ষে একটি খাট, টেবিল, চেয়ার, টিভি ও দুটি ফ্যান রয়েছে। দেয়া হয়েছে টেলিভিশন, তবে সেখানে দেখানো হবে শুধু বিটিভি। পাশের রুমে গ্যাসের চুলায় রান্নার ব্যবস্থাও রয়েছে।
তিনি বলেন, তার চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে একজন চিকিৎসক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এছাড়া একজন নার্সও নিয়োগ দেয়া হয়েছে। ওই সেবিকা সার্বক্ষণিক তার সঙ্গে থাকবেন। ভিআইপিবন্দি ও জেল কোড অনুযায়ী খালেদা জিয়া সব সুযোগ-সুবিধা পাবেন।
আদালতের অনুমতি নিয়ে কারাগারে খালেদা জিয়ার সঙ্গে রয়েছেন তার ব্যক্তিগত পরিচারিকা ফাতেমা। ভিআইপি বন্দি ও জেলকোড অনুযায়ী খালেদা জিয়াকে সব সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে কারা কর্তৃপক্ষ। সকালে তাকে তিনটি জাতীয় দৈনিক পড়তে দেয়া হচ্ছে।
সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার গভীর রাতে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার পাশাপাশি এবাদত-বন্দেগি করেন তিনি। শনিবার ভোরে ফজর নামাজ পড়ে পত্রিকার পাতায় চোখ রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসন। পটরে সকালে নাস্তাা করেন তিনি।
সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর পাহারায় ছয়জন মহিলা কারারক্ষী তিন শিফটে নিযুক্ত রয়েছেন। এছাড়া তার নিরাপত্তায় কারাগারের ভেতরে মোট ২৫ জন কারারক্ষী মোতায়েন করা হয়েছে।
কারা সূত্র জানিয়েছে, প্রথম শ্রেণির বন্দিদের জন্য কারাগারে প্রতিদিন চিকন চালের ভাত, মাংস, সবজি ও ডালের ব্যবস্থা থাকে। সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর জন্যও তাই থাকছে। এছাড়া সকালে থাকছে পছন্দসই নাস্তা, বিকালে ফলমূল। সেসব খাবার হবে উন্নত মানের। এক্ষেত্রে তার পছন্দকে গুরুত্ব দেয়া হবে।
কারা সূত্রে আরো জানা গেছে, শুক্রবার কারাগারে খালেদা জিয়া প্রথম রাতে ভাত, মাছ ও সবজি খেয়েছেন। সকালে কারা কর্তৃপক্ষের দেয়া রুটি-সবজি দিয়ে নাস্তা করেন তিনি।
খালেদা জিয়ার সেবায় কারাগারে গৃহকর্মী ফাতেমা
দুর্নীতি মামলায় কারাগারে যাওয়া বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে রয়েছেন গৃহকর্মী ফাতেমা। তাকে কারাগারে যাওয়ার অনুমতি দেয় কারা কর্তৃপক্ষ। কারাগারে খালেদা জিয়ার সেলে চলে আছেন বিএনপি প্রধানের এই গৃহকর্মী।
এর আগে বেগম জিয়ার অসুস্থতাজনিত কারণে কারাগারে এই অ্যাসিস্ট্যান্ট রাখার জন্য আবেদন করেন তার আইনজীবীরা।
এদিকে কারা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য গত শনিবার মেহেরুন্নেছা নামের এক মহিলা ফার্মাসিস্ট নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
খালেদা জিয়ার আইনজীবী ও দলটির সহ-আইনবিষয়ক সম্পাদক জয়নুল আবেদীন মেজবাহ বলেন, রায় ঘোষণার পর খালেদা জিয়া অসুস্থ হয়ে পড়েন। আগে থেকেই অসুস্থ ছিলেন তিনি। অন্যের সহায়তা ছাড়া হাঁটতে পারেন না। তাই কারাগারে তার মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট চেয়ে আবেদন করা হয়।
খালেদা জিয়ার সাথে সাক্ষাত করলেন আইনজীবীরা
এদিকে গতকাল শনিবার কারাগারে বেগম খালেদা জিয়ার সাথে মওদুদ আহমেদসহ ৫ জন আইনজীবী সাক্ষাত করেছেন। বিকেল ৪টা ২৫ মিনিটে কারা কর্মকর্তা হাসান বিএনপি চেয়ারপারসনের আইনজীবীদের জেলগেটের দিকে নিয়ে যান। এর আগে দুপুর ২টা ৪০ মিনিট থেকে কারাফটকের সামনে অপেক্ষা করতে থাকেন খালেদার আইনজীবীরা। এরপর কারা কর্তৃপক্ষের অনুমতি পেয়ে খালেদার সঙ্গে দেখা করার অনুমতি পান অপেক্ষারত ৫ আইনজীবী।
খালেদা জিয়ার আইনজীবী প্যানেলের সদস্য হলেন- সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী, অ্যাডভোকেট আব্দুর রেজ্জাক খান, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার।
কারাফটকের সামনে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ সাংবাদিকদের বলেন, আইন অনুসারে ১৮ ক্যাটাগরির কারাবন্দি অটোম্যাটিক্যালি ডিভিশন পান। এর জন্য আলাদা করে আবেদনের প্রয়োজন হয় না। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় খালেদা জিয়াকে কারাগারে আনার পর এখনও ডিভিশন দেওয়া হয়নি। যেখানে তাকে রাখা হয়েছে এটি একটি নির্জন ও পরিত্যক্ত ভবন। এটা কোনো কারাগার নয়। এখানে ফাঁসির আসামিদের যেভাবে রাখা হয় তাকেও সেভাবেই রাখা হয়েছে। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।