Inqilab Logo

শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

মন্ত্রিত্ব থাকা নিয়ে নৈতিকতার প্রশ্ন বিশেষজ্ঞদের

প্রকাশের সময় : ২৮ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

শেখ জামাল : খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক মন্ত্রীপদে বহাল থাকবেন কি না তা নৈতিকতার প্রশ্ন জড়িত। নৈতিকতার বিষয়টি ভিন্ন, সংবিধানে নৈতিকতার বিষয়টি বলা হয়েছে সংসদ সদস্যপদের জন্য। তবে দুই মন্ত্রির মন্ত্রিত্ব এখন প্রধানমন্ত্রীর ওপর নির্ভর করছে বলে মনে করছেন সংবিধান বিশেষজ্ঞরা। প্রধানমন্ত্রী দুই মন্ত্রীকে মন্ত্রিসভা থেকে অপসারণ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করবেন বলে আশা করেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন। এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে মন্ত্রিসভা বলে জানালেন রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা মাহবুবে আলম। সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যরিস্টার শফিক আহমেদ বলেন, দুই মন্ত্রীর সাজা সংবিধানের ৫৮ ও ৬৬ অনুচ্ছেদকে আঘাত করে না। এ দুটি অনুচ্ছেদে কখন মন্ত্রিত্ব বা সংসদ সদস্যপদ কীভাবে চলে যাবে তা বলা হয়েছে। সাংবিধানিক পদধারী ব্যক্তি শপথ ভঙ্গ করলে তারা ওই পদে বহাল থাকার অযোগ্য হয়ে পড়েন বলে মন্তব্য করেন হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরী। আদালতের রায়ে দুই মন্ত্রী দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় মন্ত্রীপদে থাকার নৈতিকতা হারিয়েছেন মনে করেন ড. শাহদীন মালিক। ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি বলেন, অনৈতিক কারণে সাজা হলে সংসদ সদস্যপদ বাতিল হওয়ার বিধান রয়েছে। তাছাড়া কোন সংসদ সদস্যের যদি দুই বছরের বেশি সাজা হয় তাহলেও তার সদস্য পদ বাতিল হতে পারে।
জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার আপিলের রায় নিয়ে মন্তব্য করায় সরকারের খাদ্যমন্ত্রী ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রিকে আদালত অবমাননায় দায়ে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। অনাদায়ে সাত দিনের কারাদ-ের নির্দেশ দেন। প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এস কে) সিনহা নেতৃত্বাধীন আট সদস্যের আপিল বিভাগ গতকাল রোববার এই রায় দেন। একই সঙ্গে সরকারের এই দুই মন্ত্রীকে সাত দিনের মধ্যে এই অর্থ ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতাল ও লিভার ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশে দিতে হবে বলেন।
এরা আগে গত ৫ মার্চ একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি আয়োজিত এক গোলটেবিল আলোচনায় খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসির আদেশ পাওয়া মীর কাসেম আলীর আপিল মামলা পুনরায় শুনানির দাবি জানান। রায় নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে প্রধান বিচারপতিকে বাদ দিয়ে নতুন বেঞ্চে পুনঃশুনানির দাবি তোলেন সরকারের এই মন্ত্রী। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী মোজাম্মেল হকও প্রধান বিচারপতির মন্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে খাদ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের সাথে একমত পোষণ করেন।
সংবিধানে প্রধানমন্ত্রী ব্যতীত অন্যান্য মন্ত্রীর পদের মেয়াদ
৫৮। (১) প্রধানমন্ত্রী ব্যতীত অন্য কোন মন্ত্রীর পদ শূন্য হইবে, যদি-
(ক) তিনি রাষ্ট্রপতির নিকট পেশ করিবার জন্য প্রধানমন্ত্রীর নিকট পদত্যাগপত্র প্রদান করেন;
(খ) তিনি সংসদ-সদস্য না থাকেন, তবে ৫৬ অনুচ্ছেদের (২) দফার শর্তাংশের অধীনে মনোনীত মন্ত্রীর ক্ষেত্রে ইহা প্রযোজ্য হইবে না;
(গ) এই অনুচ্ছেদের (২) দফা অনুসারে রাষ্ট্রপতি অনুরূপ নির্দেশ দান করেন; অথবা
(ঘ) এই অনুচ্ছেদের (৪) দফায় যেরূপ বিধান করা হইয়াছে তাহা কার্যকর হয়।
(২) প্রধানমন্ত্রী যে কোন সময়ে কোন মন্ত্রীকে পদত্যাগ করিতে অনুরোধ করিতে পারিবেন এবং উক্ত মন্ত্রী অনুরূপ অনুরোধ পালনে অসমর্থ হইলে তিনি রাষ্ট্রপতিকে উক্ত মন্ত্রীর নিয়োগের অবসান ঘটাইবার পরামর্শ দান করিতে পারিবেন।
(৩) সংসদ ভাংগিয়া যাওয়া অবস্থায় যেকোন সময়ে কোন মন্ত্রীকে স্বীয় পদে বহাল থাকিতে এই অনুচ্ছেদের (১) দফার (ক), (খ) ও (ঘ) উপ-দফার কোন কিছুই অযোগ্য করিবে না।
(৪) প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করিলে বা স্বীয় পদে বহাল না থাকিলে মন্ত্রীদের প্রত্যেকে পদত্যাগ করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবে; তবে এই পরিচ্ছেদের বিধানাবলী-সাপেক্ষে তাঁহাদের উত্তরাধিকারীগণ কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত তাঁহারা স্ব স্ব পদে বহাল থাকিবেন।
(৫) এই অনুচ্ছেদে “মন্ত্রী” বলিতে প্রতিমন্ত্রী ও উপ-মন্ত্রী অন্তর্ভুক্ত।
সংবিধানে সাংসদ নির্বাচিত হইবার যোগ্যতা ও অযোগ্যতা-
৬৬। (১) কোন ব্যক্তি বাংলাদেশের নাগরিক হইলে এবং তাঁহার বয়স পঁচিশ বৎসর পূর্ণ হইলে এই অনুচ্ছেদের (২) দফায় বর্ণিত বিধান-সাপেক্ষে তিনি সংসদের সদস্য নির্বাচিত হইবার এবং সংসদ-সদস্য থাকিবার যোগ্য হইবেন।
(২) কোন ব্যক্তি সংসদের সদস্য নির্বাচিত হইবার এবং সংসদ-সদস্য থাকিবার যোগ্য হইবেন না, যদি
(ক) কোন উপযুক্ত আদালত তাঁহাকে অপ্রকৃতিস্থ বলিয়া ঘোষণা করেন;
(খ) তিনি দেউলিয়া ঘোষিত হইবার পর দায় হইতে অব্যাহতি লাভ না করিয়া থাকেন;
(গ) তিনি কোন বিদেশী রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব অর্জন করেন কিংবা কোন বিদেশী রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য ঘোষণা বা স্বীকার করেন;
(ঘ) তিনি নৈতিক স্খলনজনিত কোন ফৌজদারী অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হইয়া অন্যূন দুই বৎসরের কারাদ-ে দ-িত হন এবং তাঁহার মুক্তিলাভের পর পাঁচ বৎসরকাল অতিবাহিত না হইয়া থাকে; ১[ ***]
২[ (ঙ) তিনি ১৯৭২ সালের বাংলাদেশ যোগসাজশকারী (বিশেষ ট্রাইব্যুনাল) আদেশের অধীন যে কোন অপরাধের জন্য দ-িত হইয়া থাকেন;
(চ) আইনের দ্বারা পদাধিকারীকে অযোগ্য ঘোষণা করিতেছে না, এমন পদ ব্যতীত তিনি প্রজাতন্ত্রের কর্মে কোন লাভজনক পদে অধিষ্ঠিত থাকেন; অথবা]
(ছ) তিনি কোন আইনের দ্বারা বা অধীন অনুরূপ নির্বাচনের জন্য অযোগ্য হন।
৩[ (২ক) এই অনুচ্ছেদের (২) দফার (গ) উপ-দফা তে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোন ব্যক্তি জন্মসূত্রে বাংলাদেশের নাগরিক হইয়া কোন বিদেশী রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব অর্জন করিলে এবং পরবর্তীতে উক্ত ব্যক্তি-
(ক) দ্বৈত নাগরিকত্ব গ্রহণের ক্ষেত্রে, বিদেশী রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব ত্যাগ করিলে; কিংবা
(খ) অন্য ক্ষেত্রে, পুনরায় বাংলাদেশের নাগরিকত্ব গ্রহণ করিলে-
এই অনুচ্ছেদের উদ্দেশ্য সাধনকল্পে তিনি বিদেশি রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব অর্জন করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবেন না।]
৪[ (৩) এই অনুচ্ছেদের উদ্দেশ্য সাধনকল্পে কোন ব্যক্তি কেবল রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপ-মন্ত্রী হইবার কারণে প্রজাতন্ত্রের কর্মে কোন লাভজনক পদে অধিষ্ঠিত বলিয়া গণ্য হইবেন না।]
(৪) কোন সংসদ-সদস্য তাঁহার নির্বাচনের পর এই অনুচ্ছেদের (২) দফায় বর্ণিত অযোগ্যতার অধীন হইয়াছেন কিনা কিংবা এই সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ অনুসারে কোন সংসদ-সদস্যের আসন শূন্য হইবে কিনা, সে সম্পর্কে কোন বিতর্ক দেখা দিলে শুনানী ও নিষ্পত্তির জন্য প্রশ্নটি নির্বাচন কমিশনের নিকট প্রেরিত হইবে এবং অনুরূপ ক্ষেত্রে কমিশনের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হইবে।
(৫) এই অনুচ্ছেদের (৪) দফার বিধানাবলী যাহাতে পূর্ণ কার্যকরতা লাভ করিতে পারে, সেই উদ্দেশ্যে নির্বাচন কমিশনকে ক্ষমতাদানের জন্য সংসদ যেরূপ প্রয়োজন বোধ করিবেন, আইনের দ্বারা সেইরূপ বিধান করিতে পারিবেন।
সংবিধানে পদের শপথ
১৪৮। (১) তৃতীয় তফসিলে উল্লিখিত যে কোন পদে নির্বাচিত বা নিযুক্ত ব্যক্তি কার্যভার গ্রহণের পূর্বে উক্ত তফসিল-অনুযায়ী শপথগ্রহণ বা ঘোষণা (এই অনুচ্ছেদে “শপথ” বলিয়া অভিহিত) করিবেন এবং অনুরূপ শপথপত্রে বা ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষরদান করিবেন। ১[ * * *]
(২) এই সংবিধানের অধীন নির্দিষ্ট কোন ব্যক্তির নিকট শপথগ্রহণ আবশ্যক হইলে ২[ * * *] অনুরূপ ব্যক্তি যেরূপ ব্যক্তি ও স্থান নির্ধারণ করিবেন, সেইরূপ ব্যক্তির নিকট সেইরূপ স্থানে শপথগ্রহণ করা যাইবে।
৩[ ২ (ক) ১২৩ অনুচ্ছেদের (৩) দফার অধীন অনুষ্ঠিত সংসদ সদস্যদের সাধারণ নির্বাচনের ফলাফল সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপিত হইবার তারিখ হইতে পরবর্তী তিনদিনের মধ্যে এই সংবিধানের অধীন এতদুদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা তদুদ্দেশ্যে অনুরূপ ব্যক্তি কর্তৃক নির্ধারিত অন্য কোন ব্যক্তি যে কোন কারণে নির্বাচিত সদস্যদের শপথ পাঠ পরিচালনা করিতে ব্যর্থ হইলে বা না করিলে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার উহার পরবর্তী তিনদিনের মধ্যে উক্ত শপথ পাঠ পরিচালনা করিবেন, যেন এই সংবিধানের অধীন তিনিই ইহার জন্য নির্দিষ্ট ব্যক্তি।]
(৩) এই সংবিধানের অধীন যে ক্ষেত্রে কোন ব্যক্তির পক্ষে কার্যভার গ্রহণের পূর্বে শপথগ্রহণ আবশ্যক, সেই ক্ষেত্রে শপথ গ্রহণের অব্যবহিত পর তিনি কার্যভার গ্রহণ করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবে।
দুই মন্ত্রীর সাজার বিষয়ে হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, সাংবিধানিক পদধারী ব্যক্তি শপথ ভঙ্গ করলে তারা ঐ পদে বহাল থাকার অযোগ্য হয়ে পড়েন। আদালত অবমাননার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় দুই মন্ত্রী নিজ পদে বহাল থাকতে পারবেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সাংবিধানিক পদ যারা ধারণ করেন তাদের শপথ নিতে হয়। আর এই শপথের মূলমন্ত্র হলো ‘আমি সংবিধানের রক্ষণ, সমর্থন ও নিরাপত্তা বিধান করব।’ আর এই শপথ যখন ভঙ্গ হয় কিংবা ইচ্ছাকৃতভাবে কেউ যদি এই শপথ ভঙ্গ করে তাহলে তিনি ঐ পদে বহাল থাকার অযোগ্য হয়ে পড়েন।
ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি বলেন, অনৈতিক কারণে সাজা হলে সংসদ সদস্য পদ বাতিল হওয়ার বিধান রয়েছে। তাছাড়া কোন সংসদ সদস্যের যদি দুই বছরের বেশি সাজা হয় তাহলেও তার সদস্যপদ বাতিল হতে পারে। তবে আদালত অবমাননার অভিযোগে দুই মন্ত্রীর দ-িত হওয়ার বিষয়টিকে দুঃখজনক বলেছেন ডেপুটি স্পিকার। তিনি একটি বেসরকারি টেলিভিশনকে এসব কথা বলেন।
সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যরিস্টার শফিক আহমেদ বলেছেন, আদালত অবমাননার দায়ে দুই মন্ত্রীর মন্ত্রিত্ব থাকা না থাকার বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছের ওপর নির্ভর করছে। তিনি বলেন, দুইজন মন্ত্রীকে জরিমানা করা হয়েছে। তাদের যে সাজা হয়েছে, তা সংবিধানের ৫৮ ও ৬৬ অনুচ্ছেদকে আঘাত করে না। এ দুটি অনুচ্ছেদে কখন মন্ত্রিত্ব বা সংসদ সদস্যপদ কীভাবে চলে যাবে তা বলা হয়েছে। শফিক আহমেদ বলেন, দুই মন্ত্রী পদে বহাল থাকবেন কি না, এটি নৈতিকতার প্রশ্ন জড়িত। নৈতিকতার বিষয়টি ভিন্ন, সংবিধানে নৈতিকতার বিষয়টি বলা হয়েছে সংসদ সদস্য পদের জন্য। কারণ সংবিধানে বলা হয়েছে, ফৌজধারী অপরাধে নৈতিকতা জনিত কারণে দুই বছর সাজা প্রাপ্ত হয়। তাহলে তাদের সংসদ সদস্য পদ বহাল থাকবে না। আমি মনে করি, দুই মন্ত্রী যে সাজা পেয়েছেন, এতে তাদের মন্ত্রিত্ব যাবে না।
আদালতের রায়ে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় মন্ত্রী পদে থাকার নৈতিকতা হারিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী মোজাম্মেল হক। এ অভিমত সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. শাহদীন মালিকের। তাদের শিগগিরই পদত্যাগ করারও পরামর্শ দিয়েছেন এই আইনজীবী। শাহদীন মালিক বলেন, ‘আদালতে আদেশের পর এই দুই মন্ত্রী তাদের নৈতিকতা হারিয়ে ফেলেছেন। দেশের মানুষ জেনে গেছেন, তারা দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন।’ দোষী সাব্যস্ত হয়ে মন্ত্রীত্বে দায়িত্ব পালন করলে দেশের মানুষ কি বলবে? প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, ‘তারা নৈতিকতা হারিয়েছেন। অতএব আগামী মন্ত্রিসভার বৈঠকের আগেই তাদের পদত্যাগ করা উচিৎ।’
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির বিদায়ী সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, আদালত অবমাননার দায়ে সাজাপ্রাপ্ত দুই মন্ত্রীর (খাদ্যমন্ত্রী ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী) নৈতিক কারণে পদত্যাগ করা উচিত। যদি তাঁরা না করেন তবে প্রধানমন্ত্রী তাঁদের মন্ত্রিসভা থেকে অপসারণ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করবেন বলে তিনি আশা করেন। খন্দকার মাহবুব আরও বলেন, দুই মন্ত্রী দেশের সর্বোচ্চ আদালত নিয়ে যে মন্তব্য করেছেন সে জন্য তাঁদের আরও বেশি সাজা হওয়া উচিত ছিল। যদি কেউ এভাবে সর্বোচ্চ আদালতকে অবমাননা করে অল্প কিছু জরিমানা দিয়ে মুচকি হেসে চলে যান তাহলে তো সবাই অবমাননা শুরু করবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কতগুলো বিষয় কোনো আইনে লেখা থাকে না। একজন সাজাপ্রাপ্ত লোক মন্ত্রিসভায় থাকতে পারে না। এ জন্য কোনো আইনের প্রয়োজন হয় না।
অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, সরকারই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। তবে বিষয়টা ‘নৈতিকতার’। খাদ্যমন্ত্রী ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীকে আদালত দোষী সাব্যস্ত করার পর তাদের পদ থাকতে কোনো আইনি জটিলতা আছে কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, “এটি এই মুহূর্তে আমার পক্ষে বলা সম্ভব নয়। সংবিধানে এ ব্যাপারে বিস্তারিত আছে বলে মনে হয় না। “তবে বিষয়টি নৈতিকতার সাথে জড়িত। এটা সিদ্ধান্ত নেবে মন্ত্রিসভা।” এর আগে এইচ এম এরশাদ সরকারের মন্ত্রী হাবিবুল্লাহ খান আদালত অবমাননার দায়ে দ-িত হয়েছিলেন বলে অ্যাটর্নি জেনারেল জানান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মন্ত্রিত্ব থাকা নিয়ে নৈতিকতার প্রশ্ন বিশেষজ্ঞদের
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ