পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সুপ্রিম কোর্ট আপিল বিভাগের সিনিয়র বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞা পদত্যাগ করেছেন। গতকাল শুক্রবার নতুন প্রধান বিচারপতি নিয়োগ দেয়ার কয়েক ঘন্টা পর প্রেসিডেন্ট বরাবর পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন আপিল বিভাগের এই প্রবীণতম বিচারপতি।
অপক্ষোকৃত জুনিয়র বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগের আদেশে সই করার পরই বিচারপতি ওয়াহহাব মিঞা বঙ্গভবনে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন বলে তার একজন ব্যক্তিগত কর্মকর্তা জানিয়েছেন। দৃশ্যত চাকরির মেয়াদের ১০ মাস আগেই পদত্যাগ করলেন ওয়াহহাব মিঞা।
তবে প্রেসিডেন্টের কাছে পাঠানো চিঠিতে তার প্রকাশ ঘটেনি। সুপ্রিম কোর্টের প্যাডে পাঠানো ওই চিঠিতে ব্যক্তিগত কারণে পদত্যাগের কথা লিখেছেন বিচারপতি ওয়াহহাব মিঞা। তিনি লিখেছেন, আমার অনিবার্য ব্যক্তিগত কারণ বশত সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারকের পদ হইতে এতদ্বারা পদত্যাগ করিলাম। বিচারপতি ওয়াহহাব মিঞার পদত্যাগের ফলে আপিল বিভাগে এখন বিচারক থাকবেন চারজন।
আড়াই মাস আগে বিচারপতি এস কে সিনহার পদত্যাগের পর আপিল বিভাগের সিনিয়র বিচারপতি হিসেবে প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালন করছিলেন বিচারপতি ওয়াহহাব মিঞা। বিচারপতি হিসেবে ওয়াহহাব মিঞার চাকরির বয়স আছে আর ১০ মাস। নানা নাটকীয়তার মধ্যে বিচারপতি এস কে সিনহা গত নভেম্বরে পদত্যাগ করার পর থেকে প্রধান বিচারপতির পদটি শূন্য প্রেসিডেন্ট তখন আপিল বিভাগের সিনিয়র বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহহাব মিঞাকে দায়িত্বটি পালন করে যেতে বলেন। এস কে সিনহা ছুটিতে থাকার সময় মো. আব্দুল ওয়াহ্হাব মিঞাকে প্রথমে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি এবং পরে এস কে সিনহার পদত্যাগের পরও তিনি প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।
আপিল বিভাগে বর্তমানে পাঁচজন বিচারপতি রয়েছেন। ক্রম অনুযায়ী প্রথমে আছেন বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহহাব মিঞা। তিনি অবসের যাবেন চলতি বছর ১০ নভেম্বর। তার পরের বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের অবসরে যাবেন ২০২১ সালের ৩০ ডিসেম্বর। এর পর ক্রম অনুযায়ী রয়েছেন বিচারপতি মো. ইমান আলী, তিনি অবসরে যাবেন ২০২৩ সালে। এর পরে আছেন বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, তিনি অবসরে যাবেন ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর। আর পঞ্চম স্থানে আছেন বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার, তিনি অবসরে যাবেন ২০২১ সালে ২৮ ফ্রেব্রয়ারী।
৮১ দিন দায়িত্ব পালন করেন বিচারপতি ওয়াহ্হাব মিঞা। বিচারপতি এস কে সিনহা প্রধান বিচারপতির পদ থেকে পদত্যাগ এবং এর আগে ১ মাস ১০ দিন থেকেই তিনি ছুটিতে ছিলেন। তার ছুটির আবেদন করার পর ১ অক্টোবর থেকে আবদুল ওয়াহহাব মিঞা প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। বিচারপতি সিনহা ছুটিতে যাওয়ার পর সুপ্রিম কোটের বিরল এক বিবৃতি আসে, যাতে বিচারপতি ওয়াহহাব মিঞার নেতৃত্বে আপিল বিভাগের বিচারপতিদের উদ্ধৃত করে বলা হয়, বিচারপতি সিনহার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আসায় তার সঙ্গে কাজ করতে চান না তারা। বিচারপতি ওয়াহহাব মিঞা দায়িত্ব পালনকালেই নিন্ম আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলাবিধি নিয়ে সরকারের সঙ্গে বিচার বিভাগের টানাপড়েনের অবসান হয়। গেজেট গ্রহণ করে পাঁচ বিচারকের আপিল বেঞ্চের আদেশে বলা হয়েছিল, এই গেজেট আমরা পড়েছি। বিধিতে সুপ্রিম কোর্টের সুপ্রিমেসি বজায় রাখা হয়েছে। আমরা এই বিধিমালা গ্রহণ করেছি।
আইন অঙ্গণে অনেকের ধারণা ছিল প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালনরত বিচারপতি আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞা বিচার বিভাগের সংকটকালিন সময়ে ভূমিকা রাখেন। বিশেষ করে সদ্য পদত্যাগী প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার বিরুদ্ধে দুর্নীতিসহ ১১ অভিযোগের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের বিজ্ঞপ্তির বিষয়েও তিনি ভূমিকা পালন করেছেন। এসব বিষয় বিবেচনায় বিচারপতি ওয়াহ্হাব মিঞাকেই দেশের ২২তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু সরকার তার নিয়োগ না দিয়ে অপর একজন জুনিয়র বিচারপতিকে প্রধান বিচারপতি করেন।
আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞা ১৯৭৪ সালে বিচারিক আদালতে কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৭৬ সালে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। সিনিয়র আইনজীবী হিসেবে পেশা শুরু করেন ১৯৮২ সালে।
এরপর ১৯৯৯ সালে আপিল বিভাগে প্র্যাকটিস শুরু করেন। ১৯৯৯ সালের ২৪ অক্টোবর তিনি হাইকোর্ট বিভাগে অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে দায়িত্ব নেন। পরে ২০০১ সালের হাইকোর্ট বিভাগে স্থায়ী বিচারক হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন বিচারপতি আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞা। এরপর ২০১১ সালের ২৩ ফেব্রæয়ারি তিনি আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। ২০১৭ সালের ২ অক্টোবর সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা এক মাসের ছুটিতে গেলে ৫ অক্টোবর আব্দুল ওয়াহ্হাব মিঞা ভারপ্রাপ্ত বিচারপতি হন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।