পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
চালের অগ্নিমূল্যের পরেও ধানের বাজার কৃষকদের স্বস্তি দিচ্ছে না
চালের নজিরবিহীন অগ্নিমূল্যের মধ্যেও মাঠ পর্যায়ে কৃষক ন্যায্যমূল্য না পেলেও নতুন করে বোরো আবাদ শুরু হয়েছে দেশের সর্বত্র। সদ্য ওঠা আমন চালের কেজি ৪০ টাকার ওপরে হলেও ধানের মন ৭ শ থেকে ৮ শ টাকার বেশী নয়। ফলে চালের দাম বাড়লেও কৃষকের লাভবান হবার সুযোগ এখনো অনুপস্থিত। বিগত রবি এবং খরিপ-২ মওশুমে বোরো ও আমন আবাদের লক্ষ পুরন হলেও একের পর এক প্রাকৃতিক দূর্যোগে উৎপাদন কিছুটা ব্যাহত হয়। চলতি মওশুমেও প্রায় ১ কোটি ৯৫ লাখ টন চাল পাবার লক্ষ নিয়ে দেশের ৪৮ লাখ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ শুরু হয়েছে ইতোমধ্যে। লক্ষমাত্রার প্রায় ৩০ ভাগ জমিতে বোরো আবাদ সম্পন্ন হলেও লাগাতার শৈত্য প্রবাহের ফলে ‘কোল্ড ইনজুরী’তে বেশ কিছু বোরো বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে ক্ষতিগ্রস্ত বীজ বাদ দিয়ে ভাল বীজ বপনের পরামর্শ দিয়েছে কৃষি স¤প্রসারন অধিদফ্তর। প্রয়োজনে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত বীজতলা থেকে উত্তোলন বাদ দিয়ে নতুন করে বীজ বপনেরও সুযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছে তারা। দেশের মধ্য ও উত্তরাঞ্চলে ১৫ফেব্রæয়ারী এবং দক্ষিণাঞ্চলে মার্চের প্রায় মধ্যভাগ পর্যন্ত বোরো রোপনের সুযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষিবীদগন।
চলতি রবি মওশুমে দেশে ৪৮ লাখ হেক্টরে বোরো ধান আবাদের মাধ্যমে ১ কোটি ৯৪ লাখ ৪৮ হাজার টন চাল পাবার লক্ষ স্থির করেছে কৃষি মন্ত্রণালয়। এরমধ্যে বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের ১১ জেলার ৩ লাখ ৫ হাজার হেক্টর জমিতে আবাদের মাধ্যমে প্রায় সাড়ে ১২ লাখ টন চাল পাবার লক্ষ রয়েছে। বিগত রবি মওশুমে দেশে ৪৮ লাখ হেক্টর লক্ষমাত্রার বিপরিতে প্রায় ৪৭.৯৭ লাখ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়। চাল উৎপাদনের লক্ষ ছিল ১ কোটি ৯১ লাখ টন । লক্ষ অনুযায়ী আবাদ সামান্য কিছু কম হলেও উৎপাদন লক্ষে পৌছতে আশাবাদী ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর-ডিএই। কিন্তু হাওর এলাকায় ব্যাপক বিপর্যয়ের পাশাপাশি দেশের কয়েকটি জেলার বোরো ধান ছত্রাকবাহী ‘বøাষ্ট’ রোগের সংক্রমনে ক্ষতির কবলে পড়ায় উৎপাদন হ্রাস পায় প্রায় ১০ লাখ টন। গত বছর বোরো থেকে ১ কোটি ৮৪ লাখ টনের মত চাল পাবার কথা বলেছে ডিএই।
গতবছর ‘খরিপ-২’ মওশুমে দেশে ৫৫.৬০ লাখ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ লক্ষমাত্রার অতিরিক্ত কুড়ি হাজার হেক্টরে আবাদ সম্পন্ন হওয়ায় প্রায় ১ কোটি ৭০ লাখ টনের মত চাল উৎপাদনের কথা জানানো হয়। তবে সদ্য সমাপ্ত আমন মওশুমে দক্ষিণাঞ্চলসহ সারাদেশে ৫৩ লাখ ৫ হাজার হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষ অর্জন না হলেও উৎপাদন লক্ষমাত্রা ১ কোটি ৩৬ লাখ টন অতিক্রম করেছে বলে আশাবাদী ডিএই। সদ্য কৃষকের গোলায় ওঠা এ চালের চুড়ান্ত হিসেব চলছে। তবে এবার অতি বর্ষনসহ অগ্রহায়নের অকাল বর্ষনে দক্ষিণাঞ্চলে আমনের উৎপাদন কিছুটা ব্যাহত হলেও সামগ্রীকভাবে সারাদেশে লক্ষ অনুযায়ী ফসল পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে ডিএই। সদ্য সমাপ্ত খরিপÑ২ মওশুমে শুধু বরিশাল অঞ্চলেই প্রায় ৭ লাখ ২৫ হাজার হেক্টর জমিতে আবাদ আমন ধান থেকে প্রায় ১৫ লাখ টন চাল পাবার ব্যপারে মাঠ পর্যায়ের কৃষিবীদদের মধ্যে কিছুটা সন্দেহ রয়েছে।
বিগত ‘খরিপ-১’ মওশুমে দেশে আবাদ প্রায় ১১ লাখ হেক্টরে আউশ ধান থেকে প্রায় ৩০ লাখ টন চাল পাবার লক্ষ স্থির ছিল। সারা দেশেই আউশ আবাদ লক্ষমাত্রা অতিক্রমও করে। দক্ষিণাঞ্চলে দুই লক্ষাধিক হেক্টর জমিতে আউশের আবাদ সম্পন্ন হলেও অকাল বর্ষন ও অতি বর্ষনে উৎপাদন কিছুটা ব্যহত হয়। দক্ষিণাঞ্চলের কৃষকের ঘরে প্রায় সাড়ে ৫ লাখ টন আউশ চাল এসেছে। দেশে আবাদ মোট আউশ ধানের ২০ ভাগই হচ্ছে দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলায়। তবে এত বিপুল পরিমান চাল উৎপাদন হলেও বাজারে যেমনি তার দাম কমছেনা, তেমনি কৃষক তুলনামূলকভাবে ধানের ভাল দামও পাচ্ছেন না। ধান-চালের পুরো বাজার এখন কতিপয় মিল মালিক ও ফরিয়াদের নিয়ন্ত্রনে। তাদের মর্জি মাফিকই এসব খাদ্য ও কৃষি পণ্যের দাম নির্ধারিত হয়ে থাকে। ফলে কৃষকের ভাগ্যের পরিবর্তন এখনো সুদুর পরাহত।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।