আসলাম পারভেজ, হাটহাজারী থেকে : হালদা নদীতে মা মাছ বিচরণ করতে দেখা যাচ্ছে। মেঘের গর্জন, প্রবল বৃষ্টি ও পাহাড়ি স্রোতে এশিয়ার বিখ্যাত মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে মা মাছ চলাচল করতে শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন তীরবর্তী ডিম সংগ্রহকারীরা।
মুষলধারে বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের মধ্যে হালদার মা মাছ ডিম ছাড়ে। মৎস্য বিভাগের তরফ থেকে ডিম সংগ্রহকারীদের জন্য হ্যাচারীগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা হয়েছে। নদী থেকে যেন মা মাছ মারতে না পারে সে জন্য হালদা নদীর মদুনাঘাট হতে সত্তার ঘাট পর্যন্ত আনুমানিক ২৫/৩০ কিলোমিটার রাত দিন ২৪ ঘণ্টা পাহারা দেয়া হচ্ছে। মা মাছ যাতে নিরাপদে বিচরণ করতে পারে এজন্য এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন।
প্রতি বছরে চৈত্র-বৈশাখ মাসে নানা প্রকার মা মাছ হালদা নদীতে ডিম দিয়ে থাকে। বিশেষ করে রুই,কাতলা,মৃগেল ও কার্প জাতীয় মা মাছ এখানে ডিম দেয়। বাংলা বছরের শেষ প্রান্তে সাঙ্গু নদী ও পোড়া কপালী, মগদায় খাল ও মাতা মহুরী, কর্ণফূলী নদীসহ হালদা নদীর সাথে সংযুক্ত বিভিন্ন নদী থেকে ডিম দিতে মা মাছগুলো হালদা নদীর মিষ্টি পানিতে চলে আসে। এই সব নদীগুলোতে উপযুক্ত পরিবেশ না থাকায় ডিম ছাড়ার পূর্বে এরা হালদা নদীতে চলে আসে। অনুকূল পরিবেশ থাকার কারণে আশে পাশের খাল ও নদী থেকে পেটে ডিম নিয়ে কার্প জাতীয় মাতৃ মাছগুলো হালদা নদীতে চলে আসে।
সম্প্রতি রাতে দফায় দফায় মেঘের গর্জন ও বৃষ্টি হওয়ার কারণে হালদা নদীতে মা মাছগুলোর বিচরণ করতে দেখতে পায় ডিম সংগ্রহকারীরা। ভারি বৃষ্টি ও মেঘের তীব্র গর্জন ও পাহাড়ি ঢল হালদা নদীতে প্রবেশ করা মাত্র মা মাছ ডিম ছাড়বে বলে জানিয়েছেন ডিম সংগ্রহকারীরা। মেঘের গর্জন হলেও প্রচন্ড বৃষ্টি না হওয়ার কারণে পাহাড়ি ঢল না থাকায় ডিম ছাড়তে পারছে না মা মাছগুলো। তবে নদীর প্রবল ঢল ও বজ্রসহ বৃষ্টি হলে অমাবস্যার অষ্টমী ও পূর্ণিমার তিথি না হলেও মা মাছ ডিম ছাড়েনা। পূর্ণিমা তিথিতে পর্যাপ্ত বৃষ্টি পাহাড়ি ঢল মেঘের তীব্র গর্জন শুরু হলে হালদা নদীতে মা মাছ ডিম ছাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন ডিম সংগ্রহকারীরা। গত কয়েকদিনে বৃষ্টি ও মেঘের গর্জন হওয়ায় হালদার তীরে বসবাসরত ডিম সংগ্রহকারীরা প্রস্তুত রয়েছে। প্রবল বৃষ্টি মেঘের গর্জন পাহাড়ি ঢল হালদায় প্রবেশ করলে এই মৌসুমে যে কোন সময় মা মাছ ডিম ছাড়বে বলে জানিয়েছেন ডিম সংগ্রহকারী ও বিষেশজ্ঞরা।