Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বঙ্গোপসাগরে ভারতের মিসাইল পরীক্ষা : যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ

প্রকাশের সময় : ২৭ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

কূটনৈতিক সংবাদদাতা : চলতি মাসে বঙ্গোপসাগরে ডুবোজাহাজ (সাবমেরিন) থেকে পরমাণু বোমা বহনে সক্ষম ব্যালাস্টিক মিসাইলের পরীক্ষা চালায় ভারত। আর এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ভারতের সংবাদমাধ্যম ‘দ্য নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’ এ তথ্য জানিয়েছে। অন্যদিকে সমুদ্রগর্ভ থেকে ভারত যে মিসাইলের পরীক্ষা চালিয়েছে, তাতে আঞ্চলিক নিরাপত্তা বিঘিœত হতে পারে বলে জানিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর।
গত বৃহস্পতিবার মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র মার্ক টোনার ভারতের ব্যালাস্টিক মিসাইল পরীক্ষা সম্পর্কে বলেন, আমরা পারমাণবিক এবং মিসাইল উন্নয়নের যে কোনও ঘটনায় অবগত রয়েছি, যা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতাকে ক্ষুন্ন করে এবং যেকোনো ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষায় পরমাণু অস্ত্রের নিরাপত্তা ঝুঁকি বাড়ে। এজন্য সকল রাষ্ট্রের কাছে আমরা পরমাণু অস্ত্রের ব্যবহার ও উন্নয়ন কমিয়ে আনার আহ্বান জানাই এবং পরমাণু অস্ত্র ও ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা না চালাতে সব দেশকেই অনুরোধ করে যুক্তরাষ্ট্র।
তিনি জানান, মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নয়া দিল্লীকে তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। টোনার বলেন, আমি ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা সম্পর্কে নির্দিষ্ট করে কিছু বলতে চাইছি না। তবে আমরা কোনওভাবেই আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ভঙ্গ হোক, এমনটা চাই না। আমি এ সম্পর্কে সচেতন রয়েছি।
উল্লেখ্য, ২২ মার্চ মঙ্গলবার ভারত আবার কে-৪ ব্যালাস্টিক মিসাইলের সফল পরীক্ষা চালিয়েছে। বঙ্গোপসাগরের অজ্ঞাত স্থান থেকে ৯ মিটার লম্বা একটি ডুবোজাহাজের প্রতিরূপ (রেপ্লিকা) থেকে ওই মিসাইল ছোড়া হয়। পরমাণু বোমা বহনে সক্ষম কে-ফোর মিসাইলটি ১৭ টন ওজনের হতে পারে এবং প্রতিটি ক্ষেপণাস্ত্র ২ টন পর্যন্ত পরমাণু অস্ত্র বহনে সক্ষম। লেজার নিয়ন্ত্রিত কে-ফোর ক্ষেপণাস্ত্র সাড়ে তিন হাজার কিলোমিটার দূরত্ব পর্যন্ত লক্ষ্যবস্তুতে নিখুঁতভাবে আঘাত হানতে পারে। আর এই দূরত্ব অতিক্রম করে শব্দের চেয়ে দ্রুতগতিতে।
এই পরীক্ষার মধ্যদিয়ে ভারত জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্য এবং জার্মানীর পাশে নাম লেখাতে পারলো। যারা ভূমি, আকাশ এবং পানি - এই তিন স্থান থেকেই পরমাণু আক্রমণ চালাতে সমর্থ।
প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের মতে, সমুদ্রের গভীর থেকে পরমাণু হামলা চালানোর ক্ষমতা থাকলে তবেই একটি দেশকে প্রকৃত পরমাণু শক্তিধর বলা যায়। কারণ কোনো দেশের মূল ভূখন্ড প্রতিপক্ষের পরমাণু হামলার শিকার হয়ে গেলে, পাল্টা হামলা সমুদ্রপথেই চালাতে হয়। মূল ভূখ-ের সব পরমাণু পরিকাঠামো নষ্ট করে দেয়ার লক্ষ্য নিয়েই প্রতিপক্ষ পরমাণু হামলা চালানোর ছক কষে থাকে। কিন্তু সমুদ্রে লুকিয়ে থাকা সকল পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্রকে ধ্বংস করা সম্ভব হয় না। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের ঘন ঘন মিসাইল পরীক্ষা আঞ্চলিক অস্থিতিশীলতার কারণ হতে পারে বলেও সতর্ক করেছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা।
জাপানের সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ডিপ্লোম্যাট’ জানায়, চলতি মাসের চালানো পরীক্ষায় কে-ফোর ক্ষেপণাস্ত্রটি সাড়ে তিন হাজার কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করে। এর আগে ২০১৪ সালের মার্চে কে-ফোর ক্ষেপণাস্ত্রের অপর এক পরীক্ষা চলানো হয়। সেখানে ক্ষেপণাস্ত্রটি তিন হাজার কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করতে সক্ষম হয়েছিল। জানা গেছে, ভারতের ডিআরডিও অপর একটি কে ক্লাস ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার চিন্তা করছে যা পাঁচ হাজার কিলোমিটার দূরত্ব পর্যন্ত লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারবে।



 

Show all comments
  • omar ২৭ মার্চ, ২০১৬, ১১:০৮ এএম says : 0
    eta americari ekti koishol.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বঙ্গোপসাগরে ভারতের মিসাইল পরীক্ষা : যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ