Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আজ থেকে কোচিং সেন্টার বন্ধ প্রশ্ন ফাঁস হলেই পরীক্ষা বাতিল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৬ জানুয়ারি, ২০১৮, ১২:০০ এএম

আসন্ন এসএসসি, দাখিল ও সমমানের পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁসের প্রমাণ পাওয়া গেলেই সেই পরীক্ষা বাতিল করা হবে বলে জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আর এবারই প্রথমবারের মতো পরীক্ষার আগে কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আজ থেকেই সারাদেশের সব ধরনের কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখতে হবে। পরীক্ষা শেষ না হওয়া পর্যন্ত এসব কোচিং সেন্টার খুলতে পারবে না। গতকাল (বৃহস্পতিবার) এসএসসি, দাখিল ও সমমানের পরীক্ষাকে সামনে রেখে সচিবালয়ে আয়োজিত এক সভায় শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মোঃ সোহরাব হোসাইন এতথ্য জানান।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা সচিব বলেন, আমি স্পষ্টভাবে বলতে চাই, যদি এ রকম ঘটনা (প্রশ্ন ফাঁস হয়) ঘটে, পরীক্ষার পরেও যদি প্রমাণ পাওয়া যায় যে, পরীক্ষার আগে প্রশ্ন আউট হয়েছে সেক্ষেত্রে সে পরীক্ষা বাতিল হবে। কোনো অবস্থাতেই ফাঁস হওয়া প্রশ্নে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে না। পরীক্ষা হওয়ার পরেও যদি প্রমাণ হয় যে, এই প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে তাহলে সেই পরীক্ষাটি অবশ্যই বাতিল করব। কোনো অবস্থাতেই কোনো ধরনের আপস আমরা করতে রাজি নই। প্রশ্ন ফাঁস হওয়ার মত যত পথ আছে তা বন্ধের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে দাবি করে সোহরাব বলেন, কোনো অবস্থাতেই আমরা আমাদের এই প্রজন্মকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেওয়ার জন্য কাউকে সে পথে এগোতে দেব না। যদি কেউ এগোন এবং ধরা পড়েন, নিশ্চিত প্রমাণ পেলে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এবার থেকে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় সব শিক্ষা বোর্ডে পরীক্ষা হবে একই প্রশ্নে। অভিন্ন প্রশ্নে পরীক্ষা অনুষ্ঠানে কোনো ঝুঁকি থাকছে কি না- এ প্রশ্নে সচিব বলেন, আমরা বিভিন্ন কারণে এই ঝুঁকিটা নিচ্ছি। অনেক সময় অনেকে আমাদের অভিযুক্ত করছেন যে বিভিন্ন বোর্ডে বিভিন্ন মানের প্রশ্ন হচ্ছে, সারা দেশে একভাবে পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে না। ওই সমস্যা মেটাতেই সারা দেশে এক প্রশ্নে পরীক্ষা নেওয়ার উদ্যোগের কথা বলেন সচিব। ঝুঁকি আমরা এবার নিচ্ছি, পুরোপুরি নিচ্ছি, আমরা পরীক্ষা বাতিল করব। কোনো অবস্থাতেই ফাঁস হওয়া প্রশ্নে (যদি ফাঁস হয়) পরীক্ষা নেব না। শিক্ষার্থীদের এ বিষয়ে সতর্ক করে সোহরাব বলেন, কোনো অবস্থাতে যদি কেউ ফাঁস হওয়া প্রশ্ন পেয়ে আনন্দিত হন, তাহলে তার জন্য সংবাদ হচ্ছে, সেই পরীক্ষাটি বাতিল হবে।
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, কোচিং সেন্টারগুলো প্রশ্ন ফাঁস করার একটি ‘আখড়া’। তারা যদি প্রশ্নফাঁস করতে পারে তাহলে সেখানে ছাত্র বেশি যায়। আমরা শুক্রবার (আজ) থেকে কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখব। পরীক্ষা শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোচিং সেন্টারগুলো বন্ধ থাকবে। এসময় সভাতেই শুক্রবার থেকে দেশের সব ধরনের কোচিং সেন্টার বন্ধ করতে উপস্থিত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতিনিধিদের নির্দেশ দেন মন্ত্রী। পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে শুধু কেন্দ্রে প্রবেশ নয়, অবশ্যই সিটে বসতে হবে জানিয়ে নাহিদ বলেন, পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগেই প্রশ্নের প্যাকেট খোলা হবে। এর আগে কেউ প্রশ্নের প্যাকেট খুললে তার বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেব। ঠিক সময়ে কেন্দ্রে পৌঁছাতে যানজট কিংবা পরীক্ষা কেন্দ্র দূরে হলে তা আগে থেকেই বিবেচনায় নিয়ে বাসা থেকে রওনা হওয়ার পরামর্শ দেন শিক্ষামন্ত্রী।
এ সময় মন্ত্রী বলেন, তারা প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে খুবই ‘ডেসপারেট’ ও ‘অ্যাগ্রেসিভ’। কারণ দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। পরীক্ষার সময় একটি সীমিত সময়ের জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেইসবুক বন্ধ রাখার বিষয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ আলোচনা চলছে বলেও জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, কেন্দ্রসচিব একটি সাধারণ ফোন (স্মার্ট ফোন নয়) সঙ্গে রাখতে পারবেন। অন্য কেউ কোনো ধরনের মোবাইল সঙ্গে রাখতে পারবেন না। আমরাও পরীক্ষা কেন্দ্রে গেলে মোবাইল বাইরে রেখে যাব। এসময় সভায় কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আলমগীর ছাড়াও বিভিন্ন মন্ত্রণালয় এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিনিধিরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ