পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রায় একমাস ধরে চলে আসা শৈত্যপ্রবাহ শীতের তীব্রতা আর গাঢ় কুয়াশার কবলে পড়ে মরতে বসেছে টাকার গাছ। অর্থাৎ পানপাতা। রাজশাহী অঞ্চলের মানুষ পান পাতাকে টাকার গাছ হিসাবে অভিহিত করে থাকে। কারণ পান গাছের পাতা বিক্রি করে পাওয়া যায় নগদ টাকা। এবারে শীতের বৈরী আবহাওয়া অন্য ফসলের সাথে কামড় বসিয়েছে পান বরজের উপর। শীতের তীব্রতা সইতে না পেরে বরজ গুলোয় শুরু হয়েছে পানপাতা ঝরে পড়া। বাজারে পানের দামও কমে গেছে। রাজশাহী অঞ্চলের পান বিশেষ করে সাঁচিপানের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে দেশ বিদেশে। আবাদ হয় প্রায় সব উপজেলাতে। বিশেষ করে পবা, মোহনপুর, বাগমারা, দুর্গাপুর এলাকায় পানের বরজ বেশী। এসব এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায় দু’সপ্তাহের বেশী সময় ধরে শুরু হয়েছে পান পাতা ঝরা। পান চাষীরা জানান সবুজ পানপাতা হাল্কা হলদে হয়ে ঝরে পড়ছে। যে গাছে ঝরতে শুরু করছে তা দু’একদিনের মধ্যে ঝরে একেবারে পাতা শূন্য হয়ে যাচ্ছে। তারা এসব ঝরে পড়া পানপাতা নামমাত্র মূল্যে বিক্রি করছেন। পান পাতা ঝরা থেকে রক্ষার জন্য নানা রকম প্রতিষেধক ব্যবহার করে ফল পাচ্ছে না। অনেক বরজের পান গাছ পাতা শুন্য হয়ে পড়েছে। হলদে হয়ে ঝরে পড়া পানপাতা বিক্রির ক্রেতা না পওয়ায় তা কুড়িয়ে ফেলে দিচ্ছেন। বাগমারার পান চাষী মজিদ মিয়া বলেন, চৈত্র মাসে পানের ভাল দাম পাওয়া যায়। এদিকে লক্ষ্য রেখে বরজে পান চাষ করেছেন। কিন্তু এখন সব ঝরে পড়ছে। পান বিক্রির মোকাম হিসাবে খ্যাত মোহনপুরের কেশরহাটে গিয়ে দেখা যায় পানের বেচাকেনা কমে গেছে। পানের সরবরাহ থাকলেও তেমন ক্রেতা নেই। আবার দামও একেবারে পড়ে গেছে। নামমাত্র দামে পান বেচাকেনা হচ্ছে। একজন পান চাষী হতাশ কন্ঠে বলেন মাত্র কিছুদিন আগে এক পোয়া (২০৪৮টি) পান বিক্রি করেছেন তিন থেকে চার হাজার টাকায়। আর এখন পানের বাজার নেমে এসেছে চার পাঁচশো টাকায়। পানের দর এমনভাবে নেমে যাওয়ায় শংকিত বরজ মালিকরা। যাদের বরজ এখনো ঠিক আছে তারাও পড়েছেন বিপাকে। পানের এমন দামে যে বরজ থেকে পান পাতা সংগ্রহ করার টাকা উঠছেনা। বাগমারার মোহনগঞ্জ আসা একজন পান ব্যবসায়ী বলেন তারা পান কিনতে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন। বাজারে ঝরে পড়া পানের সরবরাহ বেশী। এসব পান দু’একদিনের বেশী রাখলে পচে যাচ্ছে। ফলে তারা এসব পান কিনে ঝুকি নিতে চাচ্ছেন না। ফলে বাজারে ব্যাপক হারে পান সরবরাহ থাকলেও ক্রেতার আগ্রহ না থাকায় বাধ্য হয়ে পান চাষীরা যা আসে তাই-ই লাভ এমনটি ভেবে একেবারে ফেলনা দামে পান বিক্রি করছেন। পান চাষীরা বলেন বছর পাঁচেক আগে তাদের একবার এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছিল। আবার এখন পানপাতা ঝরা শুরু হয়েছে। যেভাবে পানপাতা ঝরে পড়ছে তা আর দিন পনের অব্যাহত থাকলে বরজ পান শুন্য হয়ে পড়বে এমন শংকা করছেন। কৃষি বিভাগ সূত্র জানায় এবার কান্ড ও গোড়াপচা রোগ এবং শীতজনিত কারনে পানপাতা হলুদ হয়ে ঝরে পড়ছে। তবে ব্যাপকতা খুব বেশী নয়। কৃষি বিভাগের মাঠ কর্মীরা এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও পরামর্শ মূলক প্রচারপত্র বিলি করে বরজ মলিকদের করনিয় বিষয়ে সজাগ করা হচ্ছে। শীতের বৈরী আবহাওয়া আঘাত হেনেছে বোরোর বীজতলায়। শৈত্যপ্রবাহ ও ঘন কুয়াশার কারনে হলুদবর্ণ ধারন করছে বোরোর বীজতলা। সূর্যের আলো ঠিকমত না পৌছার কারনে বোরো ধানের বীজতলা হলুদ এবং ছোট বয়সের চারা গুলো সাদা হয়ে যাচ্ছে। কৃষক বীজতলা বাঁচাতে নানা পথ অবলম্বন করে যাচ্ছে। আলু ক্ষেত লেটব্রাইট রোগের প্রকোপ দেখা যাচ্ছে। ক্ষতি হয়েছে আমের মুকুলের। প্রায় মাসখানেক ধরে এখানকার তাপমাত্রা রয়েছে একক সংখ্যার ঘরে। আবহাওয়া অফিসের মতে তাপমাত্রা দশডিগ্রী সেলসিয়াসের নীচে নেমে গেলে ধরা হয় শৈত্যপ্রবাহ। যা প্রায় মাসখানেক আগে শুরু হয়ে এখনো অব্যাহত রয়েছে। গাঢ় কুয়াশার চাদরে আবৃত থাকছে চারিদিক। কখনো বৃষ্টির ফোটার মত ঝরছে কুয়াশা। অন্যবারের যে কোন সময়ের চেয়ে এবারে শীতের তীব্রতা আঘাত হেনেছে সবখানে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।