পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : গতকাল জুমার নামাজের পর টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত সারা বাংলাদেশ ছিল উত্তাল। তাওহিদী জনতার শ্লোগান ও মিছিলে উত্তপ্ত ছিল গাঙ্গেয় বদ্বীপের ইথার। আকাশ বাতাস মুখরিত ছিল তাকবীর ধ্বনিতে। শতকরা ৯২ ভাগ মানুষের হৃদয়ের স্পন্দন ইসলাম যে দেশে রাষ্ট্রধর্ম, সেখানে একে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রীট করা হয়েছে। একবার রীট খারিজ করা হলেও বর্তমানে আবার ২৮ বছর আগের বস্তাপচা রীট পুনরুজ্জীবিত করায় ধর্মপ্রাণ মানুষ চরম ক্ষুব্ধ। মার্কিন ও ভারতীয় মিডিয়ায় অগ্রিম বলা হচ্ছে, বাংলাদেশের সংবিধান থেকে ইসলামের শেষ চিহ্নটুকুও এবার মুছে ফেলা হবে। এ বিষয়ে তাওহিদী জনতা উদ্বেল, ইসলামী নেতৃবৃন্দ সোচ্চার। কিন্তু সরকার রহস্যজনক নীরব। অতএব, ৯২ ভাগ মানুষ যারপরনাই শংকিত। জানা তো নেই, আল্লাহর উপর আস্থা ও বিশ্বাস, অবিকৃত বিসমিল্লাহ ও মুসলিম বিশ্বের বিশেষ বন্ধুত্বের মত এবার রাষ্ট্রধর্ম ইসলামও কি সংবিধান থেকে কেউ তুলে দিচ্ছে কিনা! ৯২ ভাগ মুসলমানের সংবিধানে ঈমান, ইসলাম বিরোধী জঘন্য নাস্তিকতা ও ধর্মহীনতার বিষাক্ত বীজ আরো বেশি করে কেউ ঢুকাচ্ছে কিনা। এ বিষয়ে মানুষ ভীত-আতঙ্কিত।
২৭ তারিখ রীটের শুনানীতে ১২ জন এমিকাস কিউরি ডাকা হয়েছিল, দু’জন রেখে ১০ জনকে আদালত বাদ দিয়ে দিয়েছে শুনে বিশ্বাসী মানুষ দিশেহারা। কী হতে যাচ্ছে ২৭ তারিখ। কী হবে ১৫ কোটি মুসলমানের? তারা কি নিজের রাষ্ট্রে অপাঙক্তেয় হয়ে যাবে? তারা কি নিজ দেশের সর্বোচ্চ আইনী দলিল সংবিধানে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে? এ ইস্যুতে দলমত নির্বিশেষে প্রতিটি ঈমানদার মানুষ ও নবীর উম্মতকে ঈমানী পরিচয় রক্ষার শেষ লড়াইয়ে অংশ নিতে আহ্বান জানিয়েছিলেন ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ। আলেম, উলামা, পীর-মাশায়েখ ও মুসলিম নেতৃবৃন্দ। হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বানে গতকাল ছিল দেশব্যাপী নিয়মতান্ত্রিক প্রতিবাদ ও শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ। চরমোনাইয়ের পীর সাহেবের আহ্বানে ছিল নানা কর্মসূচি। দেশ হয়ে উঠেছিল মজলুম মুসলমানের শোক, দুঃখ ও প্রতিবাদের আওয়াজে প্রকম্পিত।
রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধান থেকে বাদ দেয়ার চক্রান্তের প্রতিবাদে এবং রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের বিরুদ্ধে সচল করা রীট খারিজের দাবিতে গতকাল রাজধানীসহ সারাদেশ ছিল প্রতিবাদ, সমাবেশ, মিছিলে উত্তাল। গতকাল বাদ জুমা বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেটে অনুষ্ঠিত বিশাল বিক্ষোভ-পূর্ব সমাবেশসহ অন্যান্য মিছিল ও প্রতিবাদ সভা-সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেছেন, রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম রক্ষার আন্দোলনে, ঈমান রক্ষার ক্ষেত্রে কোন আপোষ মুসলমানরা করতে পারে না। জনগণের ঈমান রক্ষায় রাষ্ট্রধর্ম সংবিধানে রাখতে ব্যর্থ হলে সরকারের ক্ষমতায় থাকার অধিকার নেই। রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাদ দেয়ার চক্রান্ত বরদাস্ত করা হবে না। রাষ্ট্রধর্মের বিরুদ্ধে কোন ষড়যন্ত্র সফল হলে তাৎক্ষণিকভাবে মসজিদ, মাদ্রাসা ও ঘর থেকে মুসলমানদের রাস্তায় নেমে আসার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, রাষ্ট্রধর্ম নিয়ে চক্রান্ত বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত ঈমানদার জনতার আন্দোলন বন্ধ হবে না। ইসলামী জনতার উত্তাল তরঙ্গে রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের বিরোধীরা ভেসে যাবে।
এছাড়া একই ইস্যুতে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে এবং বিভিন্ন মসজিদে জুমার নামাজ-পূর্ব বক্তব্যে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাদ দেয়ার চক্রান্তের তীব্র প্রতিবাদ করা হয় এবং এ সংক্রান্ত রীট বাতিলের দাবি করা হয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি নেতৃবৃন্দ আহ্বান রাখেন, কারা সরকারের ভেতর ঘাপটি মেরে বসে মুসলমানদের বুকে ছুরি মারছে খবর নিন। মজলুম মানুষের আর্তধ্বনি আল্লাহর আরশে পৌঁছে যাচ্ছে। রাষ্ট্রধর্মের জন্য ৯২ ভাগ মানুষ বুকের রক্ত দেবে। মাথায় কাঁকন বেঁধে তারা রাস্তায় নেমে আসবে।
গতকাল রাজধানীতে বিভিন্ন মসজিদে দৈনিক ইনকিলাবে প্রকাশিত রাষ্ট্রধর্ম সংক্রান্ত বিভিন্ন নিবন্ধ, ভাষ্য, বিবৃতি ও নিউজের মুদ্রিত কপি বিলি হয়। গুলশান কেন্দ্রীয় মসজিদের খতীবের একটি নাতিদীর্ঘ বক্তব্য ইত্তেহাদুল উলামা মাশায়েখ-এর পক্ষ থেকে রাজধানীসহ অন্যান্য বড় শহরের মসজিদে বিতরণ করা হয়। যাতে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রধর্ম সংবিধানে আমরা বসাইনি। বিভিন্ন সরকার তাদের সুবিধার জন্য এটি বসিয়েছেন ও বহাল রেখেছেন। কিন্তু বর্তমানে একটি গোষ্ঠী রাষ্ট্রধর্ম তুলে দিতে চাইছে। এখন আমরা এটি আর তুলতে দেব না। ইসলাম, আল্লাহ, রাসূল ও ধর্ম নিয়ে ছিনিমিনি খেলা আর চলতে দেয়া যায় না। খুতবাপূর্ব বয়ানে খতীব আল্লামা মাহমুদুল হাসান বলেন, বৃদ্ধবয়সে আল্লাহর পথে জীবন দিয়ে হলেও ইসলাম ও মুসলমানের সাংবিধানিক স্বীকৃতি বহাল রাখব। তওহিদী জনতার জোয়ার এসেছে, নবীনদের সাথে প্রবীণদেরও মাঠে নামতে হবে। এ সময় হাজার হাজার মুসল্লী আবেগ আপ্লুত হয়ে তাকবীর ধ্বনি তোলেন।
এদিকে ইসলামী বুদ্ধিজীবী ফ্রণ্টের উদ্যোগে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সাংঘর্ষিক নয় বরং একে অপরের পরিপূরক বিষয় সংক্রান্ত দৈনিক ইনকিলাবে প্রকাশিত সংবাদের ফটোকপি রাজধানীর বিভিন্ন মসজিদের মুসল্লীদের মাঝে বিতরণ করা হয়। ফটোকপিতে উল্লেখ আছে স্বাধীনতার ঘোষণাতেও ইসলামের কথা বলা আছে এবং তাতে রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের নির্দেশনাকেই বোঝানো হয়েছে। এছাড়া ফটোকপিতে বলা আছে আওয়ামী লীগের সবক’টি নির্বাচনী ইশতেহারে বলা আছে কোরআন-সুন্নাহ বিরোধী কোন আইন করা হবে না।
হেফাজতে ইসলাম ঢাকা মহানগরী
রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম এদেশের শান্তিপ্রিয় ঈমানদার মুসলমানদের ঈমান রক্ষার আন্দোলন। মুক্তিযুদ্ধের সময় দেশরক্ষা ও দেশের স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনার জন্য এ দেশের মানুষ যেভাবে অকাতরে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেছিল, ঠিক রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম রক্ষায়ও তওহিদী জনতা তাজা খুন ঢেলে দেওয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। দেশের ৯৫% ভাগ মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিকে শ্রদ্ধা জানিয়ে রাষ্ট্রধর্ম ইসলামকে সংবিধানে বহাল রাখতে হবে। ৯৫% মুসলমানদের ধর্মীয় আবেগ, অধিকার ও মূল্যবোধের বিপক্ষে রাষ্ট্রধর্মের বিরুদ্ধে কোনো সিদ্ধান্ত নিলে তওহিদী জনতা তা প্রতিহত করার জন্য যা যা করা দরকার সবকিছুই করতে প্রস্তুত রয়েছে। যে দেশের প্রধানমন্ত্রী নামাজী, মন্ত্রী-এমপি, প্রশাসনসহ সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ ধার্মিক, যে দেশের মানুষ আজানের ধ্বনিতে ঘুমায়, আজানের আওয়াজে জাগ্রত হয়, সে দেশে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম ছাড়া অন্য কিছু জনগণ মানে না, মানবে না, মানতে পারে না। সুতরাং ধর্মদ্রোহীদের পক্ষ থেকে করা তথাকথিত রিট খারিজ করে তওহিদী জনতার অনুভূতির পক্ষে অবস্থান নিন। অন্যথায় আল্লাহর গজবে সবকিছু তছনছ হয়ে যাবে এবং তওহিদী জনতার উত্তাল তরঙ্গে সরকার ভেসে যাবে। গতকাল বাদ জুমা সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাদ দেয়ার ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচীর অংশ হিসাবে হেফাজতে ইসলাম ঢাকা মহানগরীর আহবায়ক আল্লামা নূর হোছাইন কাসেমী বিক্ষোভ পূর্ব সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে একথা বলেন।
সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন, হেফাজতে ইসলাম ঢাকা মহানগরী যুগ্ম আহবায়ক আল্লামা আবুল কালাম আযাদ, যুগ্ম আহবায়ক ও ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান এডভোকেট মাওলানা আব্দুর রাকীব, মহাসচিব খেলাফত মজলিস ড. আহমদ আব্দুল কাদের, যুগ্ম আহবায়ক হেফাজতে ইসলাম মাওলানা আব্দুর রব ইউসূফী, হাকীম আব্দুল করীম খান, সদস্য সচিব মাওলানা জুনায়েদ আল-হাবীব, যুগ্ম আহবায়ক মাওলানা ফজলুল করীম কাসেমী, মাওলানা শফীকুদ্দীন, মাওলানা বাহাউদ্দীন যাকারিয়া, মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, শেখ গোলাম আছগর, মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, মাওলানা মুফতি আযহারুল ইসলাম, মাওলানা মুফতি আব্দুস সাত্তার, মাওলানা আলী আকবর, মাওলানা শরীফুল্লাহ, মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস, মাওলানা মুহা. ফয়সাল, মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম, মাওলানা মুজিবুর রহমান, মাওলানা মুতিউর রহমান গাজীপুরী, মাওলানা ওয়ালীউল্লাহ আরমান, মুফতী নাছিরুদ্দীন, মাওলানা হাবীবুল্লাহ ইসলামপুরী, মাওলানা বোরহানুদ্দীন প্রমুখ।
হেফাজতে ইসলাম ঢাকা মহানগর দক্ষিণ
মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে রাষ্ট্রধর্ম বাতিলের দুঃসাহস সহ্য করা হবে না। রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বহাল রাখতে এদেশের মুসলমানরা জীবন দিতেও প্রস্তুত। শয়তানের দোসররা রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাদ দেয়ার জন্য ষড়যন্ত্র করছে। রক্তের বিনিময় হলেও আলেম-ওলামাগণ রাষ্ট্রধর্ম ইসলামকে বাদ দিতে দিবে না। রাষ্ট্রধর্ম বাতিলের ষড়যন্ত্রকারী কুলাঙ্গারদের অবিলম্বে বিচার করতে হবে। গতকাল বাদজুমা সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম বহাল রাখার দাবীতে লালবাগ শাহী মসজিদ থেকে হেফাজতে ইসলাম ঢাকা মহানগর দক্ষিণের উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল শেষে আজিমপুর গোড়ে শহীদ মাজারের উত্তর পার্শে¦র রাস্তায় সংক্ষিপ্ত সমাবেশে নেতৃবৃন্দ একথা বলেন।
মাওলানা জাফরুল্লাহ খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর মাওলানা মোঃ আবদুল লতিফ নেজামী, কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মুফতী ফয়জুল্লাহ, মাওলানা যুবায়ের আহমদ, মাওলানা আবুল কাসেম, মাওলানা গোলাম মুহিউদ্দীন ইকরাম, মাওলানা শেখ লোকমান হোসাইন, মুফতী সাখাওয়াত হোসাইন, মাওলানা আলতাফ হোসাইন, মাওলানা আবুল কাসেম কাসেমী ও মাওলানা জালালউদ্দীন প্রমুখ।
মাওলানা আব্দুল লতিফ নেজামী বলেন, বিশ্বের বহুদেশে রাষ্ট্রধর্ম বহাল রয়েছে। ধর্ম নিরপেক্ষতার শ্লোগান বর্জন করুন। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে রাষ্ট্রধর্ম বাতিলের দুঃসাহস দেখানোর পরিণাম শুভ হবে না।
খেলাফত মজলিস
খেলাফত মজলিস মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের বলেছেন, সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম- ইসলাম মুছে দেয়ার ষড়যন্ত্র এ দেশের জনগণ কোনভাবেই বরদাস্ত করবে না। ৯২ ভাগ মুসলমানের দেশে রাষ্ট্র ধর্ম- ইসলাম আছে এবং থাকতে হবে। রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিলের কোন পদক্ষেপ নিলে ঐক্যবদ্ধ ও কঠোর কর্মসূচির মাধ্যমে তা প্রতিহত করা হবে। বাংলাদেশের সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিলের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে খেলাফত মজলিস ঢাকা মহানগরী আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল পরবর্তী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। বাদ জুম্মা বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেটে হাউজ বিল্ডিংয়ের সামনে খেলাফত মজলিস ঢাকা মহানগরী সভাপতি শেখ গোলাম আসগরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত বিক্ষোভ সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মাওলানা মুহাম্মদ শফিক উদ্দিন, মাওলানা আজিজুল হক, এডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসাইন, ড. মুস্তাফিজুর রহমান ফয়সল, অধ্যাপক আবদুল হালিম, এডভোকেট মোঃ মিজানুর রহমান, মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, অধ্যাপক মুহাম্মদ আবদুল জলিল ও শ্রমিক নেতা মোঃ নূর হোসেন। সমাবেশের পূর্ব এক বিক্ষোভ মিছিল বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেট থেকে শুরু হয়ে পল্টন মোড় হয়ে হাউজ বিল্ডিংয়ের সামনে এসে সমাবেশে মিলিত হয়।
ইসলামী ফ্রন্ট
রাষ্ট্রীয় ধর্ম ইসলাম নিয়ে যে ষড়যন্ত্র শুরু করা হয়েছে তা শক্ত হাতে প্রতিহত করা হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রণ্টের নেতৃবৃন্দ। বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট ঢাকা মহানগরের উদ্যোগে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম উত্তর গেইট থেকে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানে বহাল এবং ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে বিশাল বিক্ষোভ মিছিল শেষে প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা আরো বলেন, অতীতে যারা ইসলাম নিয়ে কটাক্ষ করেছে তারা আঁস্তাকুড়ে নিক্ষেপ হয়েছে। এ বিষয়ে সরকার দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে সারাদেশে দ্রোহের আগুন জ্বলে উঠবে।
বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রণ্ট ঢাকা মহানগরের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ আবদুল হাকিমের সঞ্চালনায় প্রতিবাদ সমাবেশে আরো যারা বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ইসলামী যুবসেনার সভাপতি যুবনেতা অধ্যাপক এম এ মোমেন, সাধারণ সম্পাদক খাজা ফারুক আহমদ, ফ্রন্ট নেতা মাহমুদুল হাসান আনছারী, আহমাদুর রহমান, শাহেদুল আলম চৌধুরী, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনা’র কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ মাসুদ হুসাইন, গোলাম মাহমুদ মানিক, প্রচার সম্পাদক ইমরান হুসাইনসহ মোহাম্মদ শাহ জালাল ও রইস উদ্দীন, মুখলেছুর রহমান, সাহাবুদ্দীন মীর, বোরহান উদ্দীন, আবদুল কাদের, বায়েজীদ, মোয়াজ্জেম হোসেন, পাক পাঞ্জাতন প্রমুখ।
গাজীপুর চৌরাস্তায় তওহিদী জনতার উদ্যোগে বাদ জুমা বিশাল সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলে বিভিন্ন ইসলামী দলের নেতৃবৃন্দ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর বিবেচনার উপর এখনও মানুষের আস্থা আছে। তবে রাষ্ট্রধর্ম উঠে গেলে মানুষ ঘরে বসে থাকবে না। ইসলামী নেতৃবৃন্দের নির্দেশে তৎক্ষণাৎ মানুষ রাজপথে নেমে আসবে। গুটিকয় দুর্বৃত্ত সংবিধান ও সরকারের সর্বনাশ করছে। তারা ৯২ ভাগ মানুষের অধিকার কেড়ে নিচ্ছে। ধীরে ধীরে মুসলমান বাংলাদেশে তৃতীয় শ্রেণির নাগরিকে পরিণত করা হচ্ছে।
কিশোরগঞ্জে বাদ জুমা স্মরণকালের বৃহৎ বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। হেফাজতে ইসলাম আহূত কর্মসূচিতে যোগদানের জন্য হাজার হাজার মানুষ শহরের কেন্দ্রে জমা হন। বিভিন্ন দলমতের নেতৃবৃন্দ বক্তৃতায় বলেন, হিন্দু বৌদ্ধ খৃস্টান ঐক্য পরিষদ মুসলমানদের বিরুদ্ধে কথা বলে দেশে সাম্প্রদায়িক অস্থিরতা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। সংকীর্ণ সাম্প্রদায়িক কথা বলে তারা দেশে রায়ট লাগাতে চায়।
ময়মনসিংহে তাওহিদী জনতা বিশাল বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে। সম্মিলিত ইসলামী দলের নেতৃবৃন্দ বলেন, সরকারের ছত্রছায়ায় একটি সমাজবিরোধী চক্র দেশে মুসলমানদের ধ্বংসের ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে। নিবর্তনমূলক ধারায় ইনকিলাবের সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে চরম হয়রানি করা হচ্ছে। সকল ষড়যন্ত্র দেশের তাওহিদী জনতা রুখে দেবে। রাষ্ট্রধর্মে হাত দিলে ৯২ ভাগ মানুষ ঘরে বসে থাকবে না। ইনকিলাব সম্পাদকের কিছু হলে সারাদেশে এক মুহূর্তের মধ্যে আগুন লেগে যাবে।
রাজধানীর মিরপুর দশ নং গোল চত্বরে রাষ্ট্রধর্ম সংগ্রাম কমিটির আহবানে এক বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভাপতির ভাষণে আল্লামা রহমত উল্লাহ জালালাবাদী বলেন, রাষ্ট্রধর্ম বাতিল হলে সারাদেশ অচল করে দেয়া হবে। ইনকিলাব দেশ, জাতি, ইসলাম, মুসলমান ও স্বাধীনতার কথা বলে বিধায় একটি দুষ্টচক্র এর পেছনে লেগেছে। ইনকিলাব সম্পাদকের নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা ঝুলছে। তাওহিদী জনতার মুখপাত্র ইনকিলাবের কিছু হলে দেশে বিক্ষোভের দাবানল ছড়িয়ে পড়বে।
চট্টগ্রামে পুলিশি ব্যারিকেড ভেঙ্গে বিক্ষোভ
চট্টগ্রাম ব্যুরো : সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিলের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে চট্টগ্রামে গতকাল বাদজুমা বিশাল প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে দুই দফা পুলিশি ব্যারিকেড ভেঙ্গে বিক্ষোভ মিছিল করেছে হেফাজতে ইসলাম। বন্দরনগরীর আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ চত্বরে প্রতিবাদ সমাবেশে হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব আল্লামা হাফেজ জুনাইদ বাবুনগরী হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাদ দেয়া হলে সারা দেশ অচল হয়ে যাবে। তীব্র কঠোর আন্দোলনে কোটি কোটি তাওহীদি জনতা বুকের রক্ত দিয়ে হলেও ইসলামবিরোধী এই চক্রান্ত রুখে দেবে।
ইসলামই স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের একমাত্র রক্ষা কবচ উল্লেখ করে তিনি বলেন, রাষ্ট্রধর্ম বাতিল করা হলে দেশে শান্তি, স্থিতিশীলতা বিনষ্ট হবে এবং এদেশে কোন ধর্মের লোকই শান্তিতে থাকতে পারবে না। ধর্মনিপেক্ষ সংবিধান যে সকল ধর্মের নাগরিকদের নিরাপত্তা দিতে পারে না তার বড় প্রমাণ ভারত। জুনাইদ বাবুনগরী বলেন, আমরা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিতে চাই, সংবিধান থেকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে রাষ্ট্রধর্মের বিলুপ্তিকরণ দেশের আলেমসমাজ ও তৌহিদি জনতার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার শামিল।
বিক্ষোভ সমাবেশে হেফাজত মহাসচিব আল্লামা হাফেজ জুনাইদ বাবুনগরী আরও বলেন, আজকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতায় উগ্র সেকুলার ও ইসলামবিদ্বেষী নাস্তিকগোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা আওয়ামী লীগের ঘাড়ে জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসে আছে। এরা রাষ্ট্রযন্ত্রের অপব্যবহার করে আলেম সমাজ ও ইসলামের বিরুদ্ধে এবং দেশের তৌহিদী জনতার ধর্মীয় অনুভূতিতে একের পর এক আঘাত করে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় হঠাৎ করে ইসলামবিদ্বেষী দুষ্টচক্র সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম বাতিলের অপতৎপরতায় মেতে উঠেছে। বৃহত্তর তৌহিদী জনতার ধর্মীয় অনুভূতিতে এই গুটিকয়েক ইসলামবিদ্বেষী নাস্তিকদের চূড়ান্ত আঘাত হানার স্পর্ধা দেখে আমরা প্রচ- ক্ষুব্ধ ও স্তম্ভিত।
মিছিল পূর্ব সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মহাসচিব আল্লামা হাফেজ জুনাইদ বাবুনগরী। বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা মঈনুদ্দিন রুহী, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, অর্থসম্পাদক মাওলানা ইলিয়াস ওসমানি, ঢাকা মহানগর নেতা মুফতি ফখরুল ইসলাম, চট্টগ্রাম মহানগর নেতা মাস্টার আহসানুল্লাহ, মীর মোহাম্মদ ইদরিস, মাওলানা জালালুদ্দিন, মাওলানা হাফেজ মুজাম্মেল হক, হাফেজ ফায়সাল, মাওলানা আনম আহমদুল্লাহ, এডভোকেট নিজামুদ্দিন, মাওলানা আনোয়ার হোসেন রব্বানি, মাওলানা ইউনুস, মাওলানা ইকবাল খলিল, মাওলানা জয়নাল কুতুবী, মাওলানা সায়েমুল্লাহ, মাওলানা শেখ আবু তাহের, মাওলানা কামরুল ইসলাম কাসেমী, মাওলানা জুনাইদ জাওহার, মাওলানা ওসমান কাসেমি, মাওলানা শিব্বির আহমদ প্রমুখ।
চাঁদপুরে বিশাল সমাবেশ
চাঁদপুর জেলা সংবাদদাতা : চাঁদপুরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে হেফাজতে ইসলাম। গতকাল বাদ জুম্মা চাঁদপুর শহরের শপথ চত্বরে হাজার হাজার মুসল্লির অংশগ্রহণে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিল না করার দাবিতে ঐ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করে হেফাজত।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা হেফাজতে ইসলামের সভাপতি মাওলানা লেয়াকত হোসেন, সিনিয়র সহ-সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মুফতি সিরাজুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা এসএম আনোয়ার হোসেন, মুফতি ফারুক মো. নোয়াইন, মুফতি মাহবুবুর রহমান, মুফতি ওয়ালী উল্যাহ, মাওলানা তোফায়েল হোসেন ও মাওলানা কবির আহম্মেদ প্রমুখ।
সমাবেশ শেষে এক বিশাল বিক্ষোভ মিছিল বাইতুল আমিন মসজিদ প্রাঙ্গণ (শপথ চত্বর) থেকে বের হয়। পরে শহরের হাসান আলী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এসে মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হয়। সংবিধান থেকে যেন রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাদ না দেয়া হয়Ñ এই কামনা করে মোনাজাত পরিচালনা করেন মুক্তিযোদ্ধা মুফতি সিরাজুল ইসলাম।
লক্ষ্মীপুরে প্রতিবাদ বিক্ষোভ
লক্ষ্মীপুর জেলা সংবাদদাতা : লক্ষ্মীপুরে ‘রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম’ বাতিল করার ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে শুক্রবার দুপুর ২টায় বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ লক্ষ্মীপুর জেলা শাখার সভাপতি আলহাজ অনারারি ক্যাপ্টেন (অবঃ) মোঃ ইব্রাহিমের সভাপতিত্বে বিক্ষোভ মিছিলটি লক্ষ্মীপুরস্থ মার্কাজ মসজিদ চত্বর থেকে শুরু হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে উত্তর তেমুহনিস্থ প্রেসক্লাব চত্বরে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়।
সভাপতির বক্তব্যে অনারারি ক্যাপ্টেন (অবঃ) মোঃ ইব্রাহিম বলেন, রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিলের চেষ্টা অব্যাহত থাকলে দেশের যে কোন পরিস্থিতির জন্য সরকারকে জবাবদিহি করতে হবে। প্রতিবাদ সভায় আরো বক্তব্য রাখেন ইশা ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ সম্পাদক শেখ সাইফুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় ছাত্রনেতা শরীফুল ইসলাম, জেলা সেক্রেটারী মাওঃ মহি উদ্দিন, মাওঃ আ.হ.ম নোমান সিরাজি ও ছাত্রনেতা মাহমুদুল হাসান প্রমুখ।
ষড়যন্ত্র প্রতিহতের ঘোষণা
খুলনা ব্যুরো: সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম মুছে ফেলার ষড়যন্ত্র প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছে খুলনা জেলা ইমাম পরিষদ। গতকাল সকাল ৭টায় টাউন জামে মসজিদে জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পরিষদের সভাপতি আলহাজ মাওলানা মোহাম্মদ সালেহ’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তারা বলেন, অবিলম্বে এ ন্যাক্করজনক ষড়যন্ত্র বন্ধ করতে হবে। অন্যত্থায় ইমাম পরিষদ তৌহিদী জনতাকে সাথে নিয়ে তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলতে বাধ্য হবে।
সভায় উপস্থিত ছিলেন ইমাম পরিষদের সহ-সভাপতি আলহাজ মাওলানা মুশতাক আহমাদ, অধ্যক্ষ মাওলানা রহমাতুল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা গোলাম কিবরিয়া, মাওলানা নাসিরউদ্দিন কাসেমী, অধ্যক্ষ মাওলানা নাজমুস সউদ, মুফতি গোলামুর রহমান, মুফতি জিহাদুল ইসলাম, মাওলানা আলী আহমাদ, হাফেজ মাওলানা আবুল কালাম আযাদ ও মাওলানা আনোয়ারুল আযম প্রমুখ।
ছাত্রজমিয়তের মিছিল-সমাবেশ
সিলেট অফিস : সিলেট নগরীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে মহানগর ছাত্র জমিয়ত। গতকাল শুক্রবার বাদ জুম্মা বন্দরবাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সামন থেকে বিক্ষোভ মিছিল করে সংগঠনের নেতাকর্মীরা নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করেন। পরে বন্দরবাজার পত্রিকা পয়েন্টে এক সমাবেশে মিলিত হন।
মহানগর ছাত্র জমিয়তের সভাপতি বাহাউদ্দিন বাহারের সভাপতিত্বে ও আতিকুর রহমান নগরীর পরিচালনায় সমাবেশে বক্তারা বলেন, সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিলের পাঁয়তারা করছে ইসলাম বিদ্বেষী একটি মহল। এই অশুভ পাঁয়তারা দেশবাসী কখনো মেনে নেবে না। এসময় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সিলেট মহানগর জমিয়তের সাধারণ সম্পাদক হাফেজ মাওলানা সৈয়দ শামীম আহমদ। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা জমিয়তের সহ-সভাপতি মাওলানা খলিলুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা নজরুল ইসলাম, মহানগর সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল মুকিত চৌধুরী, যুব জমিয়ত মহানগর সভাপতি মাওলানা ছদরুল আমিন, জেলা ছাত্র জমিয়তের সভাপতি সাইফুর রহমান প্রমুখ।
নরসিংদীতে পুলিশের বাঁধা
স্টাফ রিপোর্টার, নরসিংদী থেকে : রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাক্যটি সংবিধান থেকে মুছে ফেলার ষড়যন্ত্র নিয়ে গত কিছুদিন ধরে নরসিংদী শহরে ধর্মপ্রাণ রাজনীতিক ও মুসলমানদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করে আসছে। পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী গতকাল বাদ জুমা শহরের বিভিন্ন মসজিদের মুসল্লিরা। কাউরিয়াপাড়া মসজিদ, হাসপাতাল মসজিদ, বাসস্ট্যান্ড মসজিদ, ফায়ার সার্ভিস মসজিদসহ বিভিন্ন মসজিদ থেকে সংগঠিত হয়ে পৌরসভা চত্বরের দিকে এলে প্রায় অর্ধশত সশস্ত্র পুলিশ তাদেরকে বাধা প্রদান করে। পুলিশী বাধার মিছিলকারীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। এসময় অনেক মুসল্লী সামনের দিকে এগুতে চেষ্টা করলেও জোর পুলিশী বাধার মুখে তারা সামনে বাড়তে পারেনি।
কুমিল্লায় চক্রান্ত প্রতিহতের ঘোষণা
কুমিল্লা থেকে স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম। সংবিধানে এটা যেভাবে বহাল আছে ভবিষ্যতেও তা এভাবেই থাকবে। এর কোন ব্যতয় এদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা বরদাশত করবে না। যারা সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাদ দেয়ার চক্রান্ত করছে তারা জ্ঞানপাপী। তাদের প্রতিহত করতে হবে। ৯৫ ভাগ মুসলমানের এই বাংলাদেশে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম থাকবে। এনিয়ে কোন চক্রান্ত বাস্তবায়ন করতে দেয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন কুমিল্লা জেলা কওমী মাদরাসা সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে কুমিল্লা টাউন হল মাঠে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাদ দেয়ার চক্রান্তের প্রতিবাদে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল শুরুর আগে কওমী মাদরাসা সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ওই হুঁশিয়ারি দেন। নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের মহানগর সভাপতি মাওলানা মুনীর হোসাইন, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আবদুল কুদ্দুস, মাওলানা মুনীরুল ইসলাম, মাওলানা আবুল খায়ের, মাওলানা আবুল হাসান রাজাপুরী, মাওলানা আ. কুদ্দুস প্রমুখ।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বিক্ষোভ
সিদ্ধিরগঞ্জ (না’গঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা : সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিলের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে পৃথক পৃথক বিক্ষোভ মিছিল করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও হেফাজতে ইসলাম। শুক্রবার জুম্মা’র নামাজের পর ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও হেফাজতের কয়েক হাজার নেতা-কর্মী ও মুসল্লী এই বিক্ষোভে অংশ নেয়। বিক্ষোভ শেষে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের শিমরাইল মোড়, সানারপাড়, মৌচাক ও সাইনবোর্ড এলাকায় পৃথক পৃথক ভাবে তারা বিক্ষোভ মিছিল করে।
জানা গেছে শিমরাইলস্থ মিনার মসজিদ থেকে অনৈসলামিক কার্যকলাপ প্রতিরোধ কমিটির আমির আতিকুর রহমান নান্নু মুন্সীর নেতৃত্বে প্রথম বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়। বিক্ষোভ মিছিলটি শিমরাইল ইউটার্ন হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের শিমরাইল ট্রাক টার্মিনালের সামনে সংক্ষিপ্ত প্রতিবাদ সভার মাধ্যমে শেষ হয়। এসময় বিক্ষোভ মিছিলে কয়েক হাজার লোক অংশ নেয়। একই সময় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড এলাকায় হেফাজতে ইসলামের কয়েক হাজার নেতা-কর্মী বিক্ষোভ মিছিল করে। এছাড়াও মাদানীনগর মাদ্রাসা থেকে হেফাজতে ইসলাম নেতাকর্মীরা মিছিল বের করে মহাসড়কের সানারপাড় দিয়ে মৌচাক হয়ে পুনরায় মাদানীনগর মাদ্রাসা এলাকায় গিয়ে শেষ করেন।
নেত্রকোনায় বিক্ষোভ সমাবেশ
নেত্রকোনা জেলা সংবাদদাতা : সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিলের ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে গতকাল নেত্রকোনায় বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে বিভিন্ন ইসলামী সংগঠন। বাদ জুম্মা জেলা শহরের বারহ্ট্টাা রোডস্থ জামিয়া-এ-মিফতাহুল উলুম মাদ্রাসা থেকে হেফাজতে ইসলাম, খেলাফত আন্দোলন, ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলনসহ বিভিন্ন ইসলামী সংগঠন বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি জেলা শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে আরামবাগ মোড়ে পৌঁছলে পুলিশ মিছিলে বাঁধা দেয়। এ সময় মিছিলকারীরা সেখানেই বসে পড়ে। সেখানে খেলাফত আন্দোলনের আমির ও হেফাজত নেতা মাও. আব্দুল বারী’র সভাপতিত্বে সংক্ষিপ্ত প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, হাফেজ দেলোয়ার হোসাইন, মাও. মাজহারুল ইসলাম, ক্বারী আব্দুর রকিব, মাও. আবু সায়েম খান, আসাদুর রহমান আকন্দ, রফিকুল ইসলাম, মাও. রাকীবুল্লাহ, মাও. জোবায়ের চৌধুরী, ছাত্রনেতা মোঃ লুৎফুর রহমান, মোঃ আলমগীর হোসাইন, মোঃ জাকারিয়া আকন্দ প্রমুখ।
দাউদকান্দিতে বিক্ষোভ মিছিল
দাউদকান্দি (কুমিল্লা) উপজেলা সংবাদদাতা : সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বহাল রাখার দাবিতে সারা দেশের মত দাউদকান্দিতেও আজ দুপুরে হেফাজত ইসলামের ব্যানারে লক্ষাধিক মুসল্লির বিশাল সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, মাওলানা আনারুল্লাহ, মাওলানা নাজির আহমাদ, মুফতি মুজাম্মেল হক কাসেমি, মাওলানা আবু ইউসুফ মুন্সি, মাওলানা নজরুল ইসলাম ফরাজি।
দিরাই উপজেলা সংবাদদাতা : শুক্রবার বাদ জুম’আ সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে উপজেলা শাখার উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপজেলার পৌরসভার জামে মসজিদ থেকে মিছিলটি বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে এক পথসভায় মিলিত হয়। উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা নূরুদ্দীন আহমদের পরিচালনায় এতে বক্তব্য রাখেন শাখার সভাপতি মাওলানা নাজিম উদ্দিন ও সহ-সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মুখতার হোসাইন চৌধুরী প্রমুখ।
ধামরাইয়ে ওলামা মাশায়েখের প্রতিবাদ
ধামরাই (ঢাকা) উপজেলা সংবাদদাতা : সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিলের অপতৎপরতা ও মুসলিম চেতনাবিরোধী ষড়যন্তের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন ধামরাই উপজেলা ওলামা মাশায়েখের নেতৃবৃন্দ। গতকাল শুক্রবার সকালে ধামরাই উপজেলা ইমাম পরিষদের সভাপতি মুফতি আশরাফ আলীর সভাপতিত্বে এ প্রতিবাদ জানানো হয়।
প্রতিবাদ সভায় ওলামা মাশায়েশের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মুফতি আবু বকর, মুফতি আবুল হোসাইন, মাওলানা মুস্তাফিজুর রহমান, মাওলানা আব্দুল জলিল, মাও. লুৎফর রহমান, মাও. রেজাউল করিম, মাও. শফিকুল ইসলাম, মাওলানা সাইফুল ইসলাম, মাওলানা আব্দুর রহিম ও মাওলানা আতিকুর রহমান প্রমুখ।
ফেনীতে হেফাজতের বিক্ষোভ
ফেনী জেলা সংবাদদাতা : ফেনীতে গতকাল বিক্ষোভ মিছিল করেছে হেফাজতে ইসলাম। জুমার নামাজের পর হেফাজতের জেলা শাখার ব্যানারে বের হওয়া মিছিলটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ মানুষ বিভিন্ন মসজিদ থেকে মিছিলে অংশ নেয়। মিছিলপরবর্তী সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা হেফাজতের সভাপতি মাওলানা আবুল কাশেম, সাধারণ সম্পাদক মুফতি রহিম উল্লাহ কাশেমী, সহ সাধারণ সম্পাদক মুফতি ইলিয়াছ, শহর সভাপতি মাও. আবুল খায়ের মাছুম, হেফাজত নেতা মাও. ওমর ফারুক, ফুলগাজী উপজেলা সভাপতি মাওলানা হোসাইন প্রমুখ।
টঙ্গীতে বিক্ষোভ সমাবেশে আলেমদের হুঁশিয়ারি
টঙ্গী সংবাদদাতা : জুমার পর গতকাল টঙ্গীর বিভিন্ন মসজিদের খতিব ও ঈমামদের নেতৃত্বে খ- খ- মিছিল কলেজ গেট এলাকায় এসে একত্রিত হয়। এসময় মিছিলে মিছিলে মুখরিত হয়ে উঠে পুরো টঙ্গী এলাকা। বহু দিন পর আল্লাহু আকবার ধ্বনীতে রাজপথ প্রকম্পিত হয়। কলেজ গেট থেকে বিশাল মিছিলটি টঙ্গী গাজীপুরা থেকে আব্দুল্লাহপুর পর্যন্ত মহাসড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে টঙ্গী কলেজ গেট বাস স্ট্যান্ড এলাকায় মহাসড়কের ওপর অবস্থান নিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন মুসল্লিরা। সমাবেশে বিভিন্ন মসজিদের ঈমামগণ বক্তব্য রাখেন। টঙ্গী দারুল উলুম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মুফতি মাসুদুল করিম বক্তৃতায় হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, এই বিক্ষোভ সমাবেশ আমাদের প্রাথমিক হুঁশিয়ারি মাত্র। আগামী ২৭ তারিখের পর এদেশের ইসলাম প্রিয় তৌহিদী জনতা কাপনের কাপড় পড়ে মাঠে নামবে। সেদিন এই রিট খারিজ না হলে দেশে রক্তের বন্যা বইবে।
বরুড়ায় সুন্নিয়া কামিল মাদ্রাসার বিক্ষোভ
বরুড়া উপজেলা সংবাদদাতা : গতকাল কুমিল্লার বরুড়া সুন্নিয়া কামিল মাদ্রাসার উদ্যোগে বাংলাদেশের সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বহাল রাখার দাবিতে পৌর শহরে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি মাদ্রাসার ক্যাম্পাস থেকে বের হয়ে পৌর সদর বাজারের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পুণরায় মাদ্রাসায় গিয়ে শেষ হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ মাওলানা মুফতী মিজানুর রহমান জাফরী, মাওলানা মোস্তফা কামাল, মাওলানা মুফতী শাহজাহান ছিদ্দিকী, আসাদুল্লাহ বিএসসি, মো. সেলিম, মাওলানা মোহাম্মদ উল্লাহ, মাওলানা ইলিয়াছ, মাওলানা ওমর ফারুক, হাফেজ হানজালা, মাদ্রাসার প্রাক্তন ছাত্রছাত্রী সংসদের আহবায়ক খোরশেদ আলম এমএ, ছাত্র সংসদের ভিপি জামাল উদ্দিন, এজিএস তুহিন প্রমুখ।
বিশ্বনাথে হেফাজতের বিক্ষোভ
বিশ্বনাথ (সিলেট) উপজেলা সংবাদদাতা : হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ-এর কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিশ্বনাথে বিশাল বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শুক্রবার বাদ জু’মা হেফাজতে ইসলাম বিশ্বনাথ উপজেলা শাখার উদ্যোগে এ বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা আহবায়ক মাওলানা কামরুল ইসলাম ছমিরের সভাপতিত্বে এবং যুগ্ম-সদস্য সচিব মাওলানা আব্দুল মতিনের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেনÑ যুগ্ম-আহবায়ক মাওলানা নুরুল হক, সদস্য সচিব কাজী মাওলানা আব্দুল ওয়াদুদ, যুগ্ম-সচিব মাওলানা সিরাজুল ইসলাম, প্রচার সচিব মাওলানা শামসুল ইসলাম, হাফিজ মাওলানা সাহেদ আহমদ, মাওলানা নেছার আল-মাহমুদ, মাওলানা হাসান বিন ফাহিম, বিশ্বনাথ নতুন বাজার বণিক সমিতির সাবেক সভাপতি হাজী জহুর আলী। এছাড়াও উপজেলার পীরের বাজারে হেফাজত নেতা মাওলানা মুফতি রশিদ আহমদের নেতৃত্বে বিক্ষোভ ম
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।