পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষ ‘অনেক বেশি ধর্মভীরু ও খাঁটি মুসলমান’। তিনি বলেন, ইসলাম শান্তির ধর্ম। তলোয়ারের আঘাতে ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হয়নি। ইসলামের নামে যারা সহিংসতা ছড়ায়, তারা ইসলামের শত্রু। তারা ইসলামকে ধ্বংস করতে চায়।
গতকাল শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় গণতান্ত্রিক ইসলামী ঐক্যজোট আয়োজিত ‘স্বাধীনতার আগে ও পরে বাংলাদেশে ধর্মীয় অঙ্গনের অবস্থান’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার প্রসঙ্গ টেনে এইচ টি ইমাম বলেন, বেলজিয়ামের ঘটনায় ইসলামের সম্মান ক্ষুণœ হয়েছে। এখন পুরো ইউরোপে মুসলমানেরা বিপদের মুখে, হুমকির মুখে।
এইচ টি ইমাম বলেন, পীর-মাশায়েখদের কথা আমরা শুনি। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আমরা অনেক বেশি ধর্মভীরু এবং অনেক বেশি খাঁটি মুসলমান। তিনি বলেন, প্রতি শুক্রবারের জুমায় দেখবেন কোনো মসজিদের ভেতরে জায়গা নেই। সমস্ত রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। এ রকম আর কোথাও আছে?
এইচ টি ইমাম বলেন, আমার নিজস্ব ঐচ্ছিক তহবিল সরকার যেটা দেয় তার থেকে অর্ধেকের মতো মসজিদে দেই। বিভিন্ন মসজিদে আগে দেই, মন্দিরেও দেই। বুদ্ধিষ্টদেরও সাহায্য করি। ইসলাম শিখিয়েছে পরমত সহিংসতা, ইসলাম শিখিয়েছে শান্তি। সকলে একসঙ্গে বাংলাদেশ গড়ে তোলার মন্ত্রই দেশের ‘আজকের উন্নতির কারণ’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার পিতার মতোই কাজ করেছেন মন্তব্য করে ইমাম বলেন, বায়তুল মোকাররম দেখার মতো করে তৈরি করেছেন। ঢাকার বিভিন্ন মসজিদ সুদৃশ্য করে তৈরি হয়েছে। ক্যান্টনমেন্টের বড় মসজিদগুলোতে যান, এগুলো আগে ছিল? এখন ক্যান্টনমেন্টের চেহারা বদলে গেছে। যেমন সৈনিকদের বাসস্থানের ব্যবস্থা, তেমনি বাসার সামনে সুদৃশ্য বড় বড় মসজিদ। তিনি বলেন, এ রকম কথাও শুনতে হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিঁদুর পরেন। তার মতো পর্দানশীল মহিলা খুব কম দেখেছি। চলনে আচরণে, কথাবার্তায় তিনি সাচ্চা মুসলমান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু বলেন, ইসলামকে নিরাপদ করতে গণতান্ত্রিক ইসলামী ঐক্যজোটের প্রয়োজন আছে। স্বাধীনতার আগে এ দেশে মাদ্রাসাগুলোতে ‘শুধু আমপাড়া-সিপারা পড়ানো হতো’।
ছোটবেলায় নিজের এক বছর মাদ্রাসায় পড়ার কথা জানিয়ে টুকু বলেন, আমার বাবা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ছিলেন। তার ইচ্ছা ছিল আমাকে কমার্সে পড়িয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের ম্যানেজার বানাবেন। ছোটবেলার উনি আমাকে মাদ্রাসায় ভর্তি করালেন। বাবা বললেন, নবান্নে যখন ধান কাটা হয়, মওলানা সাহেবদের না খাইয়ে আমরা খাই না। তুমি যদি কবজি ডুবিয়ে দুধ-আম খেতে চাও, তাহলে মাদ্রাসায় পড়। বাবার চাপে গেলাম, পড়লাম। তিনজন ছাত্র ছিলাম, আমি এক বছর পরে চলে এলাম। বাংলাদেশের মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা এখন ‘ডিজিটাল বাংলাদেশের কারিগর’ হিসেবেও কাজ করার সুযোগ পাচ্ছে বলে মন্তব্য তিনি।
গণতান্ত্রিক ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মাওলানা মাসউদুর রহমান বিক্রমপুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন মাওলানা আবু সুফিয়ান জাকী, এমএ খালেক, মাওলানা মো. নুরুল ইসলাম, মাওলানা দেলোওয়ার হোসেনসহ আরো অনেকে।
ইসিকে আরও কঠোর হতে বললেন নাসিম
এদিকে, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের পরবর্তী ধাপগুলোতে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) আরও কঠোর হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। তিনি ইসির প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুষ্ঠু নির্বাচনে বিশ্বাস করেন। সুষ্ঠু নির্বাচন করতে যা যা করা দরকার তাই করবেন। এক্ষেত্রে শেখ হাসিনা অত্যন্ত কঠোর অবস্থানে রয়েছেন।
গতকাল বিকালে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট বার এসোসিয়েশন মিলনায়তনে মহান ‘স্বাধীনতা উৎসব-২০১৬’ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সার্ক কালচারাল সোসাইটি মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে এই আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর এর উদ্বোধন করেন।
সব নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করতে নির্বাচন কমিশনকে সব ধরনের সহযোগিতা দেয়ার আশ্বাস দিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য নাসিম বলেন, বর্তমান সরকারের অধীনে সব নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হচ্ছে এবং হবে। শেখ হাসিনা সব সময় সুষ্ঠু নির্বাচনে বিশ্বাসী।
নাসিম বলেন, বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় এসে এদেশে জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটিয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন এদেশেকে সাম্প্রদায়িক ও জঙ্গিবাদ মুক্ত রাখা। কারণ ৩০ লাখ মানুষ জীবন দিয়ে এবং দুই লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে এই দেশ স্বাধীন হয়েছে। তাই এদেশের মাটিতে সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদের কোনো স্থান হতে পারে না।
ব্রাসেলস-প্যারিস ও বাংলাদেশের হামলায় বিএনপি-জামায়াত : হাছান
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অপর এক প্রতিবাদ সমাবেশে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলস ও ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে সন্ত্রাসী হামলা এবং বাংলাদেশে বিদেশীদের ওপর হামলা ও হত্যা একই সূত্রে গাঁথা। তিনি বলেন, দুঃখজনক হলেও সত্যি যে আমাদের দেশে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদকে আশ্রয় দিয়েছে বিএনপি-জামায়াত জোট। সেখানে (ব্রাসেলস) যে সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে, কিছুদিন পূর্বে প্যারিসের সন্ত্রাসী হামলা ও আমাদের দেশে বিদেশীদের ওপরে হামলা ও হত্যা সব ঘটনা একই সূত্রে গাঁথা।
ব্রাসেলসে সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে জাতীয় গণতান্ত্রিক লীগ এ প্রতিবাদ-সমাবেশের আয়োজন করে।
বিএনপি-জামায়াতের উদ্দেশে হাছান মাহমুদ বলেন, ক্ষমতার অভিলাষ চরিতার্থ করার জন্য তারা জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিল। দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য, সরকারের ভাবমর্যাদা ক্ষুণœ করার জন্য বিদেশী ও ব্লগার হত্যাকা- বিএনপি-জামায়াত জোটের ছত্রচ্ছায়ায় হয়েছিল। কোনো ঘটনাই বিচ্ছিন্ন নয়। একটির সঙ্গে অপরটির কোনো না কোনো যোগসূত্র আছে।
সংগঠনটির সভাপতি এমএ জলিলের সভাপতিত্বে এতে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, ফ্রান্স আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজির আহমেদ প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।