পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অর্থনৈতিক রিপোর্টার : বিদেশী শ্রমিকদের শ্রম ও ঘাম ঝড়ানো অর্থের অধিকাংশই ব্যবহার হয় জমি ক্রয়ে বা অনুৎপাদনশীল খাতে। বাকী অর্থের ব্যয়ের মধ্যে রয়েছে খাদ্য ও অন্যান্য দ্রব্য কেনাকাটায়। আর তাই দেশে আসা বিদেশে বসবাসরত শ্রমিকদের বৈদেশিক মুদ্রা উৎপাদনশীল কাজে বিনিয়োগ হচ্ছে না। এদিকে ব্যাংকের মাধ্যমে বিদেশ থেকে টাকা পাঠানো জনপ্রিয়তা পেলেও এখনো ১০ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ অর্থ আসে হুন্ডির মাধ্যমে অবৈধ পথে।
দেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের অন্যতম উৎস হচ্ছে রেমিট্যান্স (প্রবাসী আয়)। এই আয়ের টাকা পরিকল্পনা ছাড়াই প্রতিনিয়ত যাচ্ছেতাই ব্যবহার হচ্ছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে রেমিট্যান্সের অর্থ উৎপাদনশীল খাতে বিনিয়োগ করতে ব্যাপক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায়। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস)-এর সর্বশেষ জরিপের প্রতিবেদনে এসব বিষয় উঠে এসেছে।
পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) সদস্য (সিনিয়র সচিব) ড. শামসুল আলম বলেছেন, প্রবাসীদের প্রেরিত অর্থ প্রকৃত খাতে বিনিয়োগের জন্য প্রয়োজনে প্রণোদনা প্রদানের বিষয়টি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে চলমান পাঁচ বছর মেয়াদি এই পরিকল্পনায়। প্রবাস আয়ের প্রবাহ বা এর ব্যবহারের ওপর এ যাবৎ কোনো উল্লেখযোগ্য নীতিনির্ধারণী কাঠামো প্রণীত হয়নি।
বিবিএস-এর প্রতিবেদনে দেখা যায়, প্রবাসী আয়ের অধিকাংশই বিনিয়োগ হচ্ছে জমি ক্রয়ে। এই আয় গ্রহণকারী পরিবারগুলো এক বছরে বিভিন্ন খাতে যে পরিমাণ গৃহে ব্যবহার্য টেকসই জিনিসপত্র এবং এ জাতীয় উপাদান ক্রয়ে ব্যয় করে তার মধ্যে ৭৮ শতাংশ অর্থ জমি ক্রয়ে ব্যবহৃত হয়। বিভাগীয় পর্যায়ে এ হার আরও বেশি। বরিশাল, ঢাকা, খুলনা, রাজশাহী ও রংপুরে জমি ক্রমে ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ টাকা ব্যয় করা হয়। তবে চট্টগ্রাম বিভাগের সর্বনিম্ন ৫৬ দশমিক শূন্য ৫ এবং এরপরেই রয়েছে সিলেট বিভাগে ৬২ দশমিক ৭০ শতাংশ টাকা জমি ক্রয়ে ব্যয় হচ্ছে।
বিশ্বব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদন ড. জাহিদ হোসেন এ বিষয়ে বলেন, প্রবাসী আয় দিয়ে যদি জমি কেনা হয়, তাহলে সেটিও বিনিয়োগ। কেননা, ওই জমি তো আর দেশের বাইরে যায় না। আবার যার কাছ থেকে জমি কেনা হয়, তিনি ওই টাকা দিয়ে কী করেন সেটি আমরা জানি না। সুতরাং তিনি যদি ভোগ করেন তাহলেও তো দেশেই থাকে। প্রবাসী আয় যদি ভোগ-বিলাসেও ব্যয় হয় তাহলেও দেশে চাহিদা তৈরি হয়। ফলে উৎপাদন বাড়ে, আর উৎপাদন বাড়লে জিডিপিতে অবদান যোগ হয়। তবে সরকারের উচিত যে অংশটি প্রবাসীরা বিদেশেই সঞ্চয় করেন ওই অংশটি যাতে তারা দেশে বিনিয়োগ করে সে জন্য বন্ড ইস্যু করাসহ নানাভাবে প্রণোদনার ব্যবস্থা করা।
পসিংখ্যান ব্যুরোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকা বিভাগে গড় প্রবাস আয় সর্বোচ্চ। গত এক বছরে (২০১২ সালের হিসাব অনুযায়ী) পরিবারভিত্তিক প্রবাস আয়ের গড় পরিমাণ ঢাকা বিভাগে সর্বোচ্চ হয়েছে দুই লাখ ১৯ হাজার ৭৪০ টাকা। দ্বিতীয় অবস্থানে চট্টগ্রাম বিভাগ দুই লাখ ১৫ হাজার ৭০৭ টাকা। অন্যদিকে সর্বন্নিম গড় প্রবাস আয় রাজশাহী বিভাগে এক লাখ ৬৭ হাজার ৭০০ টাকা।
প্রবাসীদের টাকা পাঠানোর ক্ষেত্রে ব্যাংক ব্যবস্থা জনপ্রিয়। মোট প্রবাস আয়ের মধ্যে সর্বোচ্চ ৬৭ দশমিক ৩২ শতাংশ টাকা ব্যাংকের মাধ্যমে আসে। এর পর হুন্ডির মাধমে আসে ১০ দশমিক ০৪ শতাংশ এবং ওয়েস্টার্ন ইউনিয়নের মাধ্যমে দেশে আসছে ৬ দশমিক ৮৭ শতাংশ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, খাদ্যদ্রব্য ও খাদ্যদ্রব্য-বহির্ভূত অন্যান্য সামগ্রীতে প্রায় সমান হারে প্রবাস আয় ব্যবহার হচ্ছে। পরিবারগুলো গত এক বছরে ব্যয় করেছে পরিবারগুলোর মোট প্রবাসী আয়ের ৩৯ শতাংশ টাকা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রবাসী আয় প্রাপ্ত পরিবারগুলোর অবস্থা অন্য পরিবারগুলোর চেয়ে ভালো। প্রবাস আয় গ্রহণকারী পরিবারগুলো ৯৯ শতাংশ বিশুদ্ধ পানি পান করে, ৮২ শতাংশ স্বাস্থ্যসম্মত শৌচাগার ব্যবহার করে, সাধারণ পরিবারের ক্ষেত্রে এ হার যথাক্রমে ৭৯ শতাংশ এবং ৬২ শতাংশ।
বলা হয়েছে, বিদেশে কর্মরতদের মধ্যে উচ্চ শিক্ষিতের সংখ্যা খুবই কম। মোট প্রবাসীদের মধ্যে ৬২ শতাংশ এর শিক্ষাগত যোগ্যতা প্রথম থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত। ২ দশমিক ৪১ শতাংশ এমবিবিএস কিংবা ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রীধারী। প্রতিবেদনে প্রবাস আয়ের ব্যবহার সম্পর্কে বিস্তারিত ও পর্যাপ্ত বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে, বর্তমানে (প্রতিবেদনকালীন সময়) প্রায় ৮৬ লাখ বাংলাদেশি বিদেশে কর্মরত আছেন। দেশের মোট শ্রমশক্তিতে প্রতিবছর গড়ে প্রায় অতিরিক্ত ২ লাখ যুবশক্তি যোগ হচ্ছে। কিন্তু অতিরিক্ত এই ২ লাখ জনশক্তির সকলের কর্মসংস্থানের সুযোগ দেশে সৃষ্টি হচ্ছে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।